হৃদয়াবেগ পর্ব-২৩+২৪

0
512

#হৃদয়াবেগ
#পর্বঃ২৩
#রূপন্তি_রাহমান (ছদ্মনাম)

চোখ মেলেই সে দেখতে পেলো তাহমিদ কিছুটা দূরত্বে দাঁড়িয়ে হাত ভাঁজ করে ক্রূর হাসছে। নাযীফাহ ভ্রু কুঁচকে তাকালো তাহমিদের দিকে। তাহমিদ হাসতে হাসতে বলল,

‘ আমার চু’মু খাওয়ার জন্য মনে হচ্ছে মরিয়া হয়ে আছিস। কাছে যেতেই আদুরে ছোঁয়া নেওয়ার একেবারে চোখ বন্ধ করে ফেললি। তুই কিন্তু চালাক আছিস। আমার দেহের সকল ভিটামিন হরণ করে নিজের বেলায় বুড়ো আঙুল দেখাস। আচ্ছা যা চু’মু দিবো তবে তোর ঠোঁটে। দিবো কি?’

তাহমিদের এমন অসংযত, লাগামছেঁড়া কথা শ্রবণেন্দ্রিয় হতেই লজ্জা যেন গ্রাস করলো নাযীফাহ’র সমস্ত কায়া। কান দিয়ে গরম ধোঁয়া বেরুচ্ছে। লজ্জায় লাল হলো তার গাল। কয়েক পা এগিয়ে এসে তাহমিদ নাযীফাহ’র গা ঘেঁষে দাঁড়ালো। তাহমিদ কে পুনশ্চ কাছে আসতে দেখে ত্রপায় একেবারে নু্য়ে যায় নাযীফাহ।

‘এইতো আমার লজ্জাবতী নাযীফাহ। নিষ্প্রাণ, নির্জীব, নিস্তেজ আননে আমার নাযীফাহকে একদম মানায় না। একদমই না। আমার নাযীফাহ তো প্রানবন্ত, প্রাণোচ্ছল । যার মাথায় দুষ্টুমি খেলা করে সারাক্ষণ। আর ঠোঁটে থাকে বাঁকা হাসি। কাউকে নাস্তানাবুদ করার আনন্দে সে হাসতে থাকে অবিরত।’

চারিদিকে আবছা আলোয় আবছা অন্ধকার। মাথার উপর জ্বলে উঠলো সোডিয়ামের আলো। চারিদিকে সুনশান নিরবতা।সময় গড়ানোর সাথে সাথে এই নিস্তব্ধ পরিবেশ কোলাহলপূর্ন হয়ে যাবে। অফিস ছুটি হবে। কেউ হাঁটতে বের হবে। পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটছে নাযীফাহ আর তাহমিদ। নাযীফাহ হৃদয়ের সমস্ত আবেগ ঢেলে রিনরিনে গলায় বলল,

‘কি অদ্ভুত না? নাযীফাহ দুনিয়া মানে ছিলো, গাছে চড়া, পাকা ফল চুরি করা, বাচ্চাদের সাথে খেলা, কাউকে নাস্তানাবুদ করা। হুট করেই নাযীফাহ’র বদলে গেলো। একেবারেই বদলে গেলো। তার পুরো দুনিয়াটা এখন তাহমিদময়। নাযীফাহ’র হৃদয় এখন তাহমিদের দখলে। সমস্ত মন জুড়ে শুধু তাহমিদের বসবাস। ভালোবাসা সুন্দর তাই না?’

নাযীফাহ’র মুখে ভাই সম্বোধন ছাড়া নাম শুনে হাত শক্ত করে ধরলো নাযীফাহ’র। ‘তাহমিদময়’ এই শব্দটিতে যেন তার সকল আবেগ ঢেলে দিয়েছে। তাহমিদের মনের মধ্যে শীতল হাওয়া বইতে শুরু করলো। বড় প্রশান্তির এই হাওয়া।যে হাওয়া হুট শুরু হওয়া ঝড়কে একেবারে শান্ত করে তুলে।আসলেই ভালোবাসা সুন্দর। যা কখনো বর্ণনা করা যায় না।

‘নাযীফাহ?’

তাহমিদের স্নিগ্ধশীতল গলার ডাক শুনে চকিত হয় নাযীফাহ।

‘তুই পনেরো আর ষোলো বছরের মাঝামাঝি বয়সের এক কিশোরী। তোর এখন বাস্তবিক জ্ঞান খুব কম। আবেগটাই বেশি কাজ করবে। দু’চার বছর পরে এই আবেগ কেটে যাবে। দেখা যাবে তখন তোর আমাকে ভালো লাগতেও পারে আবার নাও লাগতে পারে। হয়তো ভালোবাসাও ফিঁকেও হয়ে যাবে। তখন কি আমাকে ছেড়ে চলে যাবি?’

নাযীফাহ মলিন, নিস্তেজ হেসে বলে উঠলো,

‘মনের এই পরিবর্তনটা আমার না হয়ে আপনারও তো হতে পারে?’

নাযীফাহ সাথে তাল মিলিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলল,

‘আমার যে আর এখন আবেগের বয়স নেই। আমার সবটাই অনুরাগ, মায়া। মায়া কাটানো যায় না কখনো। আর না মায়া কখনো নিঃশেষ হয়। আর যদিও আমার আবেগ কাজ করে তাহলে বলবো এই আবেগ আমার অনন্তকাল, অবিনশ্বর থাকুক। আমি চিরকাল বেঁচে থাকবো না তবে অমরত্ব পাক আমার আবেগ।’

নাযীফাহ মনে মনে কুটিল হেসে তাহমিদ কে বলে,

‘আচ্ছা যদি আমি আপনাকে ছেড়ে চলে যাই কি করবেন?

‘ম’রে যাবো।’

তাহমিদের সোজাসাপটা কথায় পা চলা থেমে গেলো নাযীফাহ’র। এই উত্তর সে আশা করেনি।সে তো মজা করেই বলেছে তাই বলে এমন কথা বলবে? নিস্তব্ধ, নীরব গভীর রাতের ন্যায় তমসাচ্ছন্ন হয়ে গেলো তার আনন। হাস্যোজ্জ্বল মুখে নেমে এলো প্রগাঢ় আঁধার। কোনো কথা না বলে আবারও হাঁটতে লাগলো দু’জন। নাযীফাহ’র এমন নিস্তব্ধতা দেখে উচ্চ শব্দে হাসলো তাহমিদ।

‘যেই প্রশ্নের উত্তর হজম করতে পারবি না সেই প্রশ্ন করিস কেন?’

এবারও কোনো কথা না বলে নৈঃশব্দ্যে পা ফেলে হাঁটতে লাগলো সে। কথা বলতে ইচ্ছে করছে না তার। নাযীফাহ’র এমন নিরবতা দেখে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল সে।

‘হয়তো দেহের মৃ’ত্যু ঘটবে না। মনের মৃ’ত্যু ঘটবে আমার। আমার আবেগ আর ভালোবাসার মৃ’ত্যু ঘটবে। শ্বাস প্রশ্বাস সচল থাকলেও পরিনত হবো জীবন্ত লা’শে।’

নাযীফাহ আকস্মিক তাহমিদের বাহু জড়িয়ে বলে,

‘আপনি এমন কেন তাহমিদ ভাই। বয়সে আপনার থেকে ছোট হতে পারি তাই বলে কি ভালো মন্দ বুঝিনা? আপন ভালো তো পা’গলেও বুঝে।আমার সকল সুখ যে আপনাতেই নিহিত।’

‘আমি এমন কারণ তুই আমাকে ভাই বলে ডাকিস। একটু আগেই তো নাম ধরে ডাকলি। আহা! আবেগ মিশ্রিত নাম শুনেই কর্ণ দ্বয় একেবারে শান্ত হয়ে গেছিলো।’

নাযীফাহ জিভে কামড় দিয়ে বলে,

‘আসতাগফিরুল্লাহ্, নাউজুবিল্লাহ। ওটা তো কথার কথায় মুখে নিয়েছি। আপনি আমার কত বড় আপনাকে নাম ধরে ডাকবে? আমার দ্বারা সম্ভব না। আমি আপনাকে আমি তাহমিদ ভাই বলেই ডাকবো।’

তাহমিদ অবাক হওয়ার ভান ধরে বলে,

‘কি বলছিস? ভবিষ্যতে আমার বাচ্চাকাচ্চা তো কনফিউজড হয়ে যাবে, বাবা ডাকবে নাকি মামা। পরে তো বাবা ডাকার বদলে বাবা আর মামা মিক্স করে ডাকবে।’

তাহমিদ পুনশ্চ নাযীফাহ কে লজ্জা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বুঝতেই নাযীফাহ প্রসঙ্গ বদলানোর জন্য বলল,

‘আপনি নূরকে এভাবে না বললেও পারতেন।মেয়েটা কিভাবে কাঁদছিলো।’

চোখ মুখ শক্ত হয়ে এলো তাহমিদের।

‘কি করা উচিত ছিলো,আদর? ওর তো কপাল ভালো ছেলে হলে গাল দুইটা আস্তো থাকতো না।’

‘ফুচকা খাবো।’

‘ফুচকা খাওয়ার অফার সীমিত সময়ের জন্য ছিলো। অফারের মেয়াদ শেষ।’

খুনসুটিতে মত্ত হয়ে একসাথে পা ফেলে চলতে লাগলো দু’জন। এইতো একসাথে জীবনের পথচলা শুরু।

____________________________________________

‘নাযীফাহ’র ঢাকা যাওয়ার পরে নাযীফাহ’র মতিগতি খেয়াল করেছো? কতটা পরিবর্তন ওর মাঝে। তাহমিদ পাশ ঘেঁষে দাঁড়ালে লজ্জায় মিইয়ে যায় সে। কত কৌশলে তাহমিদের পছন্দ অপছন্দের সবকিছুর কথা জেনে নিলো আমার কাছ থেকে।’

মাত্রই কাপে চুমুক দিয়েছিলো ফাহমিদা বেগম। ননদের কথায় মুচকি হাসলো সে। মেয়ের পরিবর্তন তিনিও লক্ষ্য করেছেন।হুট করেই যেন উনার মেয়ে বড় হয়ে গেলো। ওয়াহিদা পুনশ্চ বলল,

‘দু’টোকে এবার তাহলে এক করা উচিৎ। কি বলিস ভাই।’

জামান সাহেব ফোঁড়ন কে’টে বলেন,

‘তোমার ছেলেকে মানাতে পারবে? তাহমিদ তো নাযীফাহ’র প্রাপ্ত বয়স হওয়ার অপেক্ষায় আছে। এসব করতে গেলে তোমার ছেলে কিন্তু রেগে যাবে ওয়াহিদা। পরে হিতে বিপরীত হবে।’

‘জামান ঠিক বলেছে ওয়াহিদা।’ খালেদ মোশাররফের কথায় ওয়াহিদা মুচকি হেসে বলেন,

‘দেখো না আমি কি করি।’

____________________________________________

কলিংবেল চাপতেই গোমড়া মুখে দরজা খুললেন আমেনা বেগম। তাহমিদ হেসে কিছু একটা বলতেই আমেনা বেগম বলেন,

‘আর এসেছিস কেন বাসায়? রাস্তায় থেকে গেলেই পারতি। বুড়ো একটা মানুষ যে বাসায় একা সে নজর তো কারো নেই।নাতি নাতনিদের সাথে থাকার লোভে এখানে এলাম।আর কেউ আমাকে সময়ই দেয় না।’

দাদির অভিমানী কথা শুনে তাহমিদ মৃদুস্বরে হেসে আলতো করে জড়িয়ে ধরলো।

‘আজ অনিচ্ছাকৃত দেরি হয়ে গেছে দাদি আর হবে না।’

নাযীফাহ আমেনা বেগমের একটা হাত ধরে বলল,

‘তুমি কিন্তু তোমার আর দাদুর প্রেম কাহিনীতে আঁটকে আছো।আর কিন্তু বলোনি। আজ তোমার কোলে মাথা আবার তোমাদের গল্প শুনবো।’

আমেনা বেগম কপাল কুঁচকে বলেন,

‘এক গল্প মানুষ কয়বার শুনে।’

‘কিছু কিছু গল্প কালজয়ী হয় না কখনো।সর্বদা সবসময় নতুন থাকে।’

____________________________________________

পরদিন কোচিং-এ আসতেই সবাই ঘিরে ধরলো নাযীফাহ কে। একেকজনের একেক রকম কথায় যেমন ভালো লাগছে তেমনি লজ্জাও লাগছে।

‘স্যার তোকে খুব ভালোবাসে তাই না রে?’

‘ইশ! কালকে স্যার কি কিউট করে তোকে প্রপোজ করলো।’

‘আমাদের গম্ভীর স্যার এতো রোমান্টিক নিজ চোখে না দেখলে জীবনেও বিশ্বাস করতাম না।’

‘বাসায় মনে তোকে আরো কেয়ার করে ভালোবাসে তাই না?’

এমন আরো অনেক কথা নাযীফাহ’র শ্রবনগ্রন্থিতে পৌঁছাতেই লজ্জা আর ত্রপায় মাথা অধঃকৃত করে ফেলে সে। জান্নাত খোঁচা দিয়ে বলল,

‘কি রে নাযু তুই কি লজ্জা পাচ্ছিস? তোকে লজ্জা পেলে একেবারে নতুন বউয়ের মতো লাগে।’

আরো মিইয়ে গেলো নাযীফাহ। সবাই এটাসেটা বললেও শুধু একজন কর্ণারে চুপচাপ বসে রইলো।

ক্লাস টাইম শুরু হতেই যে যার জায়গায় গিয়ে বসল। তাহমিদ প্রবেশ করলো শ্রেণিকক্ষে। আজকের টপিক বোর্ডে লিখে পশ্চাতে ফিরতেই দেখলো নূর দাঁড়িয়ে আছে। তাহমিদ স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞেস করলো,

‘কোনো সমস্যা? কালকের টপিক বুঝো নি? আবার বুঝাই দিতে হবে?’

নিরুত্তর সে।হঠাৎই সে ফোঁপাতে শুরু করে। তাহমিদ পুনরায় জিজ্ঞেস করে,

‘শরীর খারাপ লাগছে?’

মাথা তুলে তাকায় নূর। চক্ষুূদ্বয়ে পানি টইটম্বুর।

‘আমাকে মাফ করে দিন স্যার। আমাকে বদদোয়া দিবেন না। আমি জীবনে কিছু একটা করতে চাই স্যার। আমি আমার বাবার ভরসার হাত হতে চাই। আপনি আমার প্রতি নারাজ হলে আমি জীবনে সফল হবো না। আমার মা নেই স্যার।ভাইকে জন্ম দেওয়ার সময় মা-রা গেছে। ভাইও স্পেশাল চাইল্ড। আমাদের কথা চিন্তা করে বাবা আর বিয়ে করেনি। আমার কাছে মনে হতো কেউ যদি রোজ পড়া শিখে আসে তাহলে সে আমার থেকে এগিয়ে যাবে। আর আমি পিছিয়ে যাবো। সেজন্য আমি পিছু লাগতাম। আর এমন করবো না স্যার। হিংসা কাজ করে আমার বেশি। হিংসা আমাকে দাবিয়ে রেখেছে। আমার বাবার অনেক আশা স্যার আমাকে নিয়ে।’

ক্লাসের সবাই তাকিয়ে আছে ওর দিকে। একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল তাহমিদ। মার্কার পেনেট মুখটা আঁটকে বলল,

‘কারো সফলতা কেউ নিয়ে যায় না। কারো রিজিকও কেউ নিতে পারেনা। আমাদের ভাগ্য আগে থেকেই ফিক্সড। তুমি আমার ছোট বোনের মতো তোমাকে বদদোয়া দিবো কেন? মানুষ ভুল করে না? তুমি অনুতপ্ত হয়েছো এটাই অনেক।’

নূর চোখের পানি মুছে ক্লাসের সকলের উদ্দেশ্যে বলল,

‘যাদের যাদের মনে হবে আমি তাদের সাথে অন্যায় করেছি আমাকে মাফ করে দিও। আমার বাবা আর ভাইয়ের জন্য দোয়া করো।’

তাহমিদও সকলকে উদ্দেশ্য করে বলল,

‘এই বিষয়টা এখানেই ক্লোজ। এসব বলে আর ওকে কেউ পিঞ্চ মে’রে কথা বলবে না। এখন সবাই ক্লাসে মনযোগ দাও।’

সবগুলো ক্লাস শেষ করে বাহিরে এসে দাঁড়িয়ে আছে নাযীফাহ। জান্নাতের সাথে কথা বলার ফাঁকে মনে হলো সে কাউকে দেখেছে কিন্তু ঠাহর করতে পারেনি। তার কিছুক্ষন পরে একজন মহিলা পুরো শরীর বোরকায় ঢেকে নাযীফাহদের দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। নাযীফাহ’র বেশ পরিচিত মনে হলেও পাত্তা দিলো না। কারণ এখানে তার পরিচিত কেউ নেই। মহিলাটি নাযীফাহ’র মুখোমুখি দাঁড়াতেই আপাদমস্তক চোখ বুলালো সে। অতঃপর নাযীফাহ,,

#চলবে

#হৃদয়াবেগ
#পর্বঃ২৪
#রূপন্তি_রাহমান (ছদ্মনাম)

অতঃপর নাযীফাহ ফুপি বলে জড়িয়ে ধরলো। জান্নাত আহাম্মকের মতো তাকিয়ে আছে নাযীফাহ’র দিকে। নাযীফাহ জড়িয়ে ধরেই বলল,

‘তোমায় আমি চিনে ফেলেছি ফুপি। সেই কখন থেকে মনে হচ্ছিল আমি কাউকে দেখেছি কিন্তু ঠাহর করতে পারেনি। তোমার চলার ধরন দেখে কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম।’

ওয়াহিদা মুখের নেকাব তুলে বললেন,

‘যাহ্ চিনে ফেললি।’

নাযীফাহ ওয়াহিদার একটা হাত জড়িয়ে ধরে বলল,

‘যত যাই বলো র’ক্ত বলে কথা। হাজার মাইল দূরে থাকলেও চুম্বকের মতো টানে।’

ফাহিম দৌড়ে ওদের সামনে এসে হাঁটুতে হাত রেখে হাঁপাতে লাগলো। হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,

‘তুমি বলে আসবে না, মা। ভাড়া মিটিয়ে দেখি তুমি নেই। এতোক্ষণ তো মুখ খোলা ছিলো ঢাকলে কেন? আমি এদিক ওদিক খুঁজতে খুঁজতে হয়রান।’

‘তুমি যে আসবে তোমার ছেলে জানে?’

‘ছেলে জানে। তুই আর মা জানিস না।’

কথা বলতে বলতে বের হলো তাহমিদ। এখানে মাকে দেখে কপাল কুঁচকালো সে। এগিয়ে এসে বলল,

‘তোমাকে না নিষেধ করলাম এখানে আসার দরকার নাই। তুমি তো এমনিতেও ক্লান্ত।’

____________________________________________

আমেনা বেগম দরজা খুলে ওয়াহিদা আর ফাহিমকে দেখেই প্রশস্ত হাসলেন। ওয়াহিদা আর আমেনা বেগমের চোখাচোখি হতেই দু’জন দু’জনের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলেন।

আমেনা বেগম রুমে তছবি জপছেন। ফাহিম আর তাহমিদ রুমে বসে পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা করছে। ওয়াহিদা আর নাযীফাহ রান্না করছে। ওয়াহিদা রান্না করছে আর নাযীফাহ পাশে দাঁড়িয়ে দেখছে আর এটাসেটা এগিয়ে দিচ্ছে। আজকের আয়োজন হাঁসের মাং’স আর খিচুড়ি।

টেবিলে খাবার দিতেই দুই ভাইয়ের চোখ খুশিতে চকচক করতে লাগলো।ফাহিম ক্ষুধিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,

‘কতদিন পরও হাঁসের মাং’স খাবো। মা আগে বলবে না তাহলে কয়েকদিন না খেয়ে প্রিপারেশন নিতাম।’

নাযীফাহ মুখ বাঁকিয়ে বলল,

‘রা’ক্ষস যে। আস্তো একটা গরু জ’বাই করে তোকে দিলেও বলবি আরো দাও।’

ফাহিম দাঁত কেলিয়ে বলল,

‘সেম টু ইউ বেহেনজি। ওপস সরি ভাবিজি।’

মুখ ভেঙচি দিলো নাযীফাহ।

তাহমিদ মৃদু হেসে বলল,

‘ইশ! কতদিন পর তোমার হাতের রান্না করা হাঁসের মাং’স খাবো। পরিষ্কার করার অলসতায় বাসায় আনা হয় না।’

রাতে ঘুমানোর সময় এক বিছানায় গাদাগাদি করে নাযীফাহ, ওয়াহিদা আর আমেনা বেগম শুয়ে পড়লেন। অন্য রুমে ফাহিম আর তাহমিদ।

পরদিন সকাল হতেই ফাহিম চলে যায় নিজ গন্তব্যে। স্বাভাবিক দিনের মতো দিনটির ইতি ঘটলেও বিপত্তি ঘটে রাতের বেলা। ওয়াহিদা বেগম বেঁকে বসলেন এক বিছানায় তিনজন থাকবেন না। আর এই শীতে কাউকে ফ্লোরেও থাকতে দিবেন না। মায়ের মতিগতি ঠিক ঠাহর করতে পারছে না তাহমিদ। কপাল কুঁজিত করে নিষ্পলক তাকিয়ে আছে মায়ের দিকে।

‘তা তুমি কি করতে চাইছো, মা?’

ওয়াহিদা মুখে হাসি ফুটিয়ে বলেন,

‘তুই আর নাযীফাহ একসাথে থাক আমি আর মা একসাথে, ব্যস।’

এতোক্ষণে মায়ের ছলচাতুরী ধরতে পারলো তাহমিদ। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল সে। নাযীফাহ বিস্মিত গলায় বলল,

‘তুমি এসব কি বলছো ফুপি?’

‘এই তুই চুপ থাক।’

‘শুনো মা এসব আজাইরা চিন্তা বাদ দাও আর ঘুমোতে যাও। কাল সকালে নাযীফাহ’র কলেজ আছে।’ বলেই দাঁড়ালো না তাহমিদ। প্রস্থান করলো সেখান থেকে। ওয়াহিদা রাগী চোখে তাকিয়ে আছে ছেলের যাওয়ার পানে। আমেনা বেগমও চুপচাপ আছে। কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আচমকা ওয়াহিদা বললেন,

‘নাযীফাহ যা তো আমার জন্য আদা চা করে আন। মাথাটা ভিষণ ধরেছে।’

এই রাতে বেলা চা খাওয়ার কথা শুনে কপালে ভাঁজ পড়ে নাযীফাহ’র।রাতের বেলা চা খাওয়া মানে ঘুমকে টাটা বায় বায় জানানো।

‘তুমি এই রাতে চা খাবে? তাহলে তো আর ঘুম আসবে না। তার চেয়ে ভালো ঘুমালেই সেরে যাবে।’

ওয়াহিদা মৃদুস্বরে ধমক দিয়ে বললেন,

‘তোকে যা বলছি তাই কর। শ্বাশুড়ির সেবা করতে করতে হাঁপিয়ে গেছিস নাকি?’

‘আমি কখন বললাম এই কথা?’ গাল ফুলিয়ে নাযীফাহ চলে গেলো রান্নাঘরে।

ওয়াহিদা আমেনা বেগম ধরে চললেন শোবার ঘরের দিকে। অনেক সময় নিয়ে চা বানালো নাযীফাহ। চা বানানো শেষে কাপ নিয়ে ছুটলো শোবার ঘরের দিকে। দরজার কাছে এসেই বুঝতে পারলো ভেতর থেকে লক করা দরজা। পরপর কয়েকটা টোকা দিলো নাযীফাহ। কোনো সাড়াশব্দ নেই। বার কয়েক ডাকল আমেনা বেগম এবং ওয়াহিদাকে। এবারও কোনো প্রতিক্রিয়া পেলো না সে। বাধ্য হয়ে ছুটলো তাহমিদের রুমের দিকে। চাকরি সংক্রান্ত খবর আছে কিনা তাই দেখছিল তাহমিদ বিভিন্ন কোম্পানির ওয়েবসাইটে। হঠাৎ নাযীফাহকে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করল,

‘কিছু বলবি?’

‘ফুপি ভেতর থেকে দরজা আঁটকে দিয়েছে।’

এবার পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো তাহমিদ।

‘ভেতর থেকে দরজা আঁটকে দিয়েছে। তুই বাইরে কি করছিলি?’

নাযীফাহ কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল,

‘ফুপি বলল তার নাকি মাথা ধরেছে চা করে দিতে। চা বানিয়ে দেখি ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে রেখেছে।’

তপ্ত শ্বাস ফেলল তাহমিদ। বিড়বিড় করে বলল,

‘মায়ের চালাকি ধরতে পারলি না?’

‘আমি ঘুমাবো না?’

তাহমিদ ল্যাপটপ শাট ডাউন করে বলল,

‘তুই এখানে শুয়ে পড়। আমি ড্রয়িং রুমে ম্যানেজ করে নিবো।’

‘এই ঠান্ডায় ড্রয়িং রুমে শোবেন? ঠান্ডা লেগে যাবে তো।’

‘ভারী কাঁথা আছে। সমস্যা নেই।’

____________________________________________

মাঝরাতে হাঁসফাঁস করতে লাগলো তাহমিদ। এপাশ ওপাশ করছে কিন্তু ঘুম আসছে না। শুয়া থেকে উঠে ধীর পায়ে চলল রুমের দিকে। নাযীফাহ গুটিসুটি হয়ে ঘুমিয়ে আছে। তাহমিদ গিয়ে বসলো নাযীফাহ’র কাছে। অপলক তাকিয়ে রইলো ঘুমন্ত প্রেয়সীর অভিমুখে। ড্রিম লাইটের আবছা আলোয় বড্ড মায়াবী লাগছে নাযীফাহকে। নাযীফাহ’র একটা হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিলো তাহমিদ। ঠোঁট ছুঁয়ালো হাতের উল্টো পৃষ্ঠে। অকস্মাৎ চোখ মেলে তাকায় নাযীফাহ। চোখে সামনে পুরুষ অভয়ব দেখেই চাপা গলায় চিৎকার করে উঠে বসে সে। তাহমিদ ধীর গলায় বলে,

‘ভয় পাস না আমি তোর তাহমিদ ভাই।’ বলেই বেড সাইডের ল্যাম্প জ্বালালো। তাহমিদের চেহারা স্পষ্ট হতেই নাযীফাহ শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো তাহমিদ কে। ভয়ে হাত কাঁপছে তার। ঘন ঘন শ্বাস ফেলেছে সে। তাহমিদও দু’হাতে আগলে নিলো নাযীফাহকে। মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,

‘ভয় পেয়েছিস?’

শুকনো ঢুগ গিলে নাযীফাহ। ফিসফিস করে বলল,

‘পানি খাবো।’

নাযীফাহ’র অস্থিরতা একটু কমতেই নিজের থেকে ছাড়ালো তাকে। নাযীফাহ’র চোখে মুখে এখনো আতংক বিদ্যমান। রুমে থাকা জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢাললো তাহমিদ। গ্লাস টা নাযীফাহ’র হাতে দিয়ে বললো,

‘আমি আছি তো। তাহমিদ বর্তমান থাকা অবস্থায় তাহমিদ কে ডিঙিয়ে কে তোকে ছুঁতে আসবে? এতো সাহস কার?’

‘আপনি তো ড্রয়িং রুমে থাকবেন বলেছিলেন। এখানে কেন?’

নাযীফাহ’র প্রশ্নে চমকে উঠে তাহমিদ। এমন প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিলো না সে। কিয়ৎকাল নীরব রইলো সে।

‘নিজের চোখকে শান্তি দিচ্ছিলাম একটু। চোখের তৃপ্তি মিটচ্ছিলাম।’ নির্বোধের মতো তাকিয়ে রইলো নাযীফাহ।

নাযীফাহ’র চিৎকার শুনে উঠে এসেছিল ওয়াহিদা। আড়াল থেকে দু’জন কে একসাথে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সে। নিঃশব্দে সেখান থেকে প্রস্থান করার আগে দুষ্টু বুদ্ধি আটলেন তিনি। মুখ দিয়ে অদ্ভুত শব্দ করে তড়িৎ গতিতে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে ফেললেন।

এই নিস্তব্ধ, নির্জন রজনীতে অকস্মাৎ ভয়াল শব্দ কর্ণগোচর হতেই নাযীফাহ পুনশ্চ তাহমিদকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। তিগ্ম, তপ্ত শ্বাস ফেলে নাযীফাহকে আগলে নিলো তাহমিদ।নাযীফাহ তাহমিদের টি-শার্ট খামচে ধরে বলল,

‘আপনি এখান থেকে যাবেন না, প্লিজ। আমার ভয় করছে খুব।’

____________________________________________

মুখ গোমড়া করে কলেজের জন্য রেডি হচ্ছে নাযীফাহ। কারো সাথেই কথা বলছে সে। আমেনা বেগম আর ওয়াহিদাও সেই রাগকে পাত্তা দিচ্ছে না। নাযীফাহ রেডি হয়ে ডাকতে লাগলো তাহমিদ কে। বাসার পোশাক তাহমিদের গায়ে দেখে কপালে ভাঁজ পড়ে নাযীফাহ’র।

‘আপনি আজ বের হবেন না।’

‘না, আয় তোকে রিক্সা করে দিয়ে আসি।’

রিক্সায় উঠে বসার পর তাহমিদ রিকসাওয়ালাকে বলল,

‘এতো তাড়াতাড়ি রিক্সা চালানোর দরকার নাই। আপনি আস্তেধীরে চালিয়ে যাবেন।ঠিক আছে? আর তুই রিক্সার একপাশ শক্ত করে ধরে রাখবি। আমি কিন্তু সাথে নেই যে তোকে সামলে নিবো। আমি ভাড়া দিয়ে দিয়েছি।কলেজ ছুটির পরে কোথাও যাবি না আমি যাবো কলেজে তোকে নিতে।’

আরো কিছু বলতে নিবে নাযীফাহ বলে উঠলো,

‘আর কিছু বলতে হবে না আপনাকে।আমি কিন্তু সেই প্রথম দিনের নাযীফাহ নই।’

বাসায় প্রবেশ করে তাহমিদ আমেনা বেগমকে নিজের রুমে ডাকল। আমেনা বেগম রুমে যেতেই তাহমিদ বলল,

‘মায়ের সাথে তো কথা গুলো বলতে পারবো না, তাই তোমাকে বলা। কয়েকদিন আগে তোমাকে কি বলেছিলাম? যদি মনে হয় নাযীফাহ কে আমার একান্তে প্রয়োজন তাহলে তোমাকে আমি বলবো। তাহলে তোমরা উঠে পড়ে কেন লেগেছে? ভয় পাচ্ছো যদি আমাদের মতিগতি পরিবর্তন হয়ে যায় এজন্য? সেক্ষেত্রে তোমাকে আমি কথা দিতে পারি আমার সবটা জুড়ে শুধু নাযীফাহ। আর নাযীফাহ’র কথা বলতে গেলে ও নিতান্ত বাচ্চা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হয়তো মতিগতি, আবেগ, ভালোবাসার পরিবর্তন হতেও পারে।ফিকে হয়ে যেতে পারে আমার নামের সমস্ত অনুরাগের। তখন আমি সানন্দে নাযীফাহ’র সকল সিদ্ধান্ত মেনে নিবো। যে মায়া সময় গড়ানোর সাথে সাথে কে’টে যাবে সেই মোহ মায়া তাহমিদের দরকার নেই। তাছাড়াও নাযীফাহ মাত্র ষোলো বছরে পা দিলো। আমরা একসাথে থাকলাম। আমি পুরুষ মানুষ দাদি তার উপর নাযীফাহ আমার স্ত্রী। একটা সময় নিজের কাছে করা প্রতিজ্ঞা ভুলে গিয়ে নাযীফাহ কে কাছে টেনে। ঠিক যতটা কাছে স্বামী আর স্ত্রী থাকে৷ দু’জনের মাঝে দূরত্ব থাকে না বিন্দুমাত্র। তারপর কি হবে? ভুলক্রমে যদি ও কনসিভ করে ফেলে তখন কি হবে? একজন মেয়ের গর্ভধারণের পরিপূর্ণ বয়স হচ্ছে বিশ বছর। তাও যদি বাদ দেই তাহলে আঠারো। অপ্রাপ্ত বয়সে গর্ভধারণ মানেই লাইফরি’স্ক৷ নাযীফাহ কে মৃত্যু ঝুঁকিতে রেখে আমি একদন্ডও শান্তি তে থাকতে পারবো না দাদি। এই ব্যপার গুলো নিয়ে আর ঘাটাঘাটি করো না। মাকে বুঝাও। আমি স্বামী হয়ে যদি অপেক্ষা করতে পারি তোমরা কেন পারবে না? তার চেয়ে ভালো নাযীফাহ বড় হউক।সংসার ধর্ম বুঝতে শিখুক। আমি অপেক্ষা করি বাচ্চা বউ বড় হওয়ার।’

কোনো প্রকার টু শব্দ করলেন না আমেনা বেগম। নৈঃশব্দ্যে প্রস্থান করলো সেখান থেকে।

____________________________________________

সময় গড়ায় চোখের পলকে। রাত্রি শেষ করলেও একটি নতুন দিনের সূচনা। কেউ জন্ম নেয় কেউ মৃত্যুবরন করে।আবার কেউ নতুন সম্পর্কে জড়ায়।কারো কারো ঘটে বিচ্ছেদ। এমন করেই চলে যাচ্ছে দিন। নিজের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে সপ্তাহ খানেকের মাথায় বিদায় নিয়েছিলো ওয়াহিদা। এর মাঝে কয়েকদিন এসে ফাহমিদা বেগমও থেকে গেছে। নাযীফাহ’র ফাইনাল শেষ হলো সেই কবেই। আজ রেজাল্ট দেওয়ার কথা। সেজন্য আলোচনা সভা হচ্ছে কলেজে।

রেজাল্ট কার্ড পেয়ে খুশিতে আটখানা নাযীফাহ। কারন টেনেটুনে সকল বিষয় পাশ করেছে।ফেইল নামক শব্দ কানের ঠিক দু ইঞ্চি নিচ দিয়ে গেছে। ফেইল নামক শব্দটাকে ডিঙিয়ে পাশ সে করেছে এতেই খুশি সে। জান্নাত চার বিষয়ে ভালো নাম্বার পেলেও তিন বিষয়ে খুব নাম্বার পেয়েছে। কাঁদো কাঁদো মুখে তাকিয়ে আছে নাযীফাহ’র দিকে। বাসায় গেলে রক্ষে নেই তার। নির্ঘাত বাবা রেজাল্ট দেখলে রিকসাওয়ালার সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে।

রাতে খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ করে নাযীফাহ রেজাল্ট কার্ড দেখালো তাহমিদকে। কার্ড হাতে নিয়ে এক-এক করে সব বিষয়ের নাম্বার দেখার পর শুকনো হেসে বলল,

‘আমি হয়তো টিচার বা গাইডলাইন হিসেবে ব্যর্থ। না হলে রেজাল্ট আরো ভালো হতো। হয়তো প্রপার গাইড করতে পারিনি তোকে।’

হাসিখুশি মুখটা চুপসে গেলো নাযীফাহ’র। নাযীফাহ ভেবেছিল পাশ নাম্বার দেখলে খুশি হবে তাহমিদ। এখন তার উল্টো হলো। রেজাল্ট কার্ডের দিকে দৃষ্টি স্থির রেখে তাহমিদ বলল,

‘আচ্ছা নাযীফাহ তোর মনে কখনো প্রশ্ন উদয় হয়নি? সবারই তো ভাই অথবা বোন আছে তোর নাই কেন? কেন তুই বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ার পরও তোকে আঠারো পূর্ণ হওয়ার আগে বিয়ে দিয়ে দিলো? এসব নানা রকম প্রশ্ন মনমধ্যে জাগ্রত হয়না? কেন গ্রামে থাকা কালীন এতো দুষ্টুমি করার পরও ধমক পর্যন্ত দিতো না?’

তাহমিদের কথা গুলো শ্রবণেন্দ্রিয় হতেই বিস্ফোরিত চোখে তাকায় নাযীফাহ। কই কখনো তো তার মাথায় এসব চিন্তা এলো না।

#চলবে