LoVe Effect part-06

0
500

#LoVe_Effect
#Writer : Sintiha Eva
#part : 06

🍁🍁🍁

শ্রাবনী ঘুম থেকে উঠে নিচে এসে সদর দরজার দিকে তাকিয়ে ওখানেই আটকে যায় এ কাকে দেখছে এটা সত্যি নাকি মনের ভুল। শ্রাবণী নিজের চোখ কচলে আবার সামনে তাকাতেই দেখে মাহির, শুভ, আদিত্য তিনজন একসাথে শ্রাবণী দের বাড়িতে ঢুকছে শ্রাবণী হা করে মাহিরদের দিকে তাকিয়ে আছে মাহির শ্রাবনীর সামনে এসে ফিসফিস করে বলে,,,,,

মাহিরঃ হা টা অফ করো হাতি ঢুকে যাবে

মাহিরের কথায় শ্রাবণী কিছু বলতে গিয়ে ও চুপ হয়ে যায় ডান ভ্রু কুঁচকে বলে উঠে,,,

শ্রাবনীঃ আপনারা আমাদের এখানে কি করছেন

শ্রাবনীর কথায় মাহির হালকা কেশে শ্রাবনীর কাছ থেকে একটু দূরে গিয়ে বলে,,,

মাহিরঃ সায়ন ভাইয়া কোথায়

শ্রাবনীঃ ছোড়দা কে দিয়ে আপনার কি

মাহিরঃ বেশি কথা না বলে সায়ন ভাইয়া কে ডাক দাও

শ্রাবনী ভেংচি কেটে গলা ছেড়ে সায়নকে ডাকতে শুরু করে

শ্রাবনীঃ ছোড়দা এই ছোড়দা কোথায় তুই দেখ তোর সাথে কয়েকজন গুন্ডা দেখা করতে আসছে এই ছোড়দা ছোড়দা এই ছোড়দা

সায়নঃ আসছি বাবা এভাবে চিল্লাছিস কেনো ( সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে)

শ্রাবনীঃ এই যে তোর সাথে এরা কারা দেখা করতে এসেছে বুঝি না বাপু আজকাল গুন্ডা দের সাথে ও চলাচল করিস না

সায়নঃ চুপপ আরে মাহির তোমরা আসো বসো

মাহিরঃ না ভাইয়া বসবো না আমি তোমার কাছে একটা আবদার নিয়ে এসেছি

সায়নঃ হুমম বলো

শুভঃ ভাইয়া জানোই ও তো মাহির রাজনীতি তে দাঁড়িয়ে তো সামনেই তো ভোট তাই আজ সন্ধ্যায় একটা পার্টি দিচ্ছি

মাহিরঃ তোমাকে কিন্তু আসতেই হবে

সায়নঃ আজ সন্ধ্যায় কিন্তু

মাহিরঃ কোনো কিন্তু শুনছি না তুমি সবসময় বিজি থাকো কিন্তু আজ আর শুনছি না আজ তোমাকে আসতেই হবে

সায়নঃ আচ্ছা আমি ট্রাই করবো

মাহিরঃ না ট্রাই না তোমাকে আসতেই হবে

সায়নঃ আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে যাবো হ্যাপি

মাহিরঃ হুমমম আচ্ছা তাহলে এখন আসি আল্লাহ হাফেজ

সায়নঃ সে কি সকাল সকাল এসেছো ব্রেকফাস্ট করে যাও

মাহিরঃ না ভাইয়া আজ আসি আবার একদিন আসবো

সায়নঃ কিন্তু

মাহিরঃ না ভাইয়া আজ আসি কাজ আছে সন্ধ্যায় দেখা হবে

সায়নঃ আচ্ছা

মাহিরা চলে যায় সায়ন শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে দেখে শ্রাবণী চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সায়ন ভ্রু কুঁচকে শ্রাবনীর সামনে গিয়ে নাক টিপে বলে,,,

সায়নঃ কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো বনু

শ্রাবনীঃ ওরা কে

সায়নঃ ওহ ওরা আমারই পরিচিত ছেলেগুলো খুব ভালো জানিস আমাকে ও খুব সম্মান করে

শ্রাবনীঃ ভালো হুহহ শালা হলুদ কাক সবুজ টিকটিকি লাল-নীল গিরগিটি ( বিড়বিড় করে)

সায়নঃ কি বিড়বিড় করছিস

শ্রাবনীঃ ক কই কিছু না

সায়নঃ ওহ আচ্ছা

মাথার উপর নীলচে আকাশ সাদা মেঘ গুলো দলা বেধে উড়ে বেড়াচ্ছে কোথাও বা আবার সাদা মেঘগুলো এক জায়গায় জড়ো হয়ে আড্ডা দিচ্ছে। সেখান থেকে আবার এক দলা ছন্নছাড়া মেঘ ঝগড়া করে অভিমানের পাল্লা ভারী করে ছন্নছাড়া হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আকাশে একজোড়া ছন্নছাড়া মেঘ আবার তার নীচে একজোড়া কপোত-কপোতী হাঁটছে। ঝিরিঝিরি বাতাসে রমণীর চুলগুলো উড়ে এসে চোখেমুখে পড়ছে পাশে থাকা যুবক তার প্রেয়সী অপূর্ব রূপ মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছে। ঘাসের উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে যুবক-যুবতী এসে ভার্সিটির পেছনে একটা বড় খালের সামনে এসে দাঁড়ায় চারদিকে টাইলস দিয়ে বাঁধানো নানান ফুলের বাহারে অপরূপ এক পরিবেশ। খালের টাইলস বাঁধানো সিঁড়ি তে বসে দুজনই পানিতে পা ডুবিয়ে দেয় পাশে থাকা যুবক নিজের প্রেয়সীর মাথা নিজের কাঁধে নিয়ে নেয় যুবতী ও বাঁধা দেয় না ঠোঁটের কোণে ফুটে ওঠে এক চিলতে হাসি। যুবতী যুবকের হাত ধরে ধীর কন্ঠে বলে,,,,

রাহাঃ শুভ

শুভঃ হুমম বলো

রাহাঃ আজ হঠাৎ এখানে দেখা করতে বললে

শুভঃ ভাবছি আজ তোমাকে মাহিরের একজন মানুষের সাথে দেখা করাবো

রাহাঃ মানে

শুভঃ তোমাকে বলেছিলাম মনে আছে মাহির কে নিয়ে কিছু কথা

রাহাঃ হুমমম

শুভঃ ওদের সাথেই দেখা করাবো আর তাছাড়া ও এদিক টা খুব নিরিবিলি জায়গা চারদিকে শুধুই প্রকৃতি উপস্থিত কেউ আর আমাদের প্রেমে বাঁধা দেবে না

রাহাঃ ওহ আচ্ছা আপনি এতো রোমান্টিক কবে হলেন

শুভঃ এক্সকিউজ মি মেডাম আমি অলওয়েজই রোমান্টিক কেউ করে দেখায় আর কেউ নিজের কথায় বুঝায়

রাহাঃ আমি জানি রাগ করছো কেনো এই তিন বছরে ও তোমার রাগ কমাতে পারলাম না

শুভঃ আমার রাগ অনেক টা কমেছে আগের শুভ এখন আর আমি নই

রাহাঃ হুমমম জানি জানি

মাহিরঃ ভাই রোমান্স করার এই জায়গায় পেলি আর কোথাও জায়গা পাস নি

মাহিরের কন্ঠস্বর শুনে রাহা দ্রুত শুভ’র থেকে সরে বসে শুভ পেছন ফিরে মাহির&আদিত্য কে দেখে হেসে দেয়।

শুভঃ তোদের জন্য কোথাও গিয়েই শান্তি নেই ভাই

আদিত্যঃ নো প্রবলেম ব্রো বাসর ঘরে ও হানা দেবো

আদিত্য র কথা শুনে মাহির আর শুভ হেসে দেয় রাহা লজ্জায় মাথা নিচু করে নেয়।

আজিজ স্যারঃ ওয়াট ইজ দিস শ্রাবনী

স্যারের ধমকে পুরো ক্লাস চুপ হয়ে যায় পুরো রুম জুড়ে পিনপন নীরবতা শ্রাবনী নীরের হাত চেপে ধরে নীর অসহায় দৃষ্টিতে শ্রাবনীর দিকে তাকায়

স্যারঃ এটা ক্লাস অনার্সে পড়া কোনো মেয়ের খাতা কেউ বলবে আর এসব কি লিখে আবার এমন কাটাছেঁড়া করেছো

শ্রাবনীঃ স্যার বিশ্বাস করুন আমি এস্যাইনমেন্ট করেই এসেছি বেস্টু বল না

নীরঃ হুমম স্যার শ্রা

স্যারঃ তুমি চুপ করো ( ধমকে)

শ্রাবনীঃ স্যার আমি এস্যাইনমেন্ট করেছি কিন্তু কে এমন টা করলো

স্যারঃ এই ক্লাসে কে তোমার সাথে এমন করবে তুমিই তো সবার বারো টা বাজাও আজ ছাড় দিলাম কিন্তু নেক্সট টাইম আর ছাড়ছি না

স্যার আর কিছু বলার আগেই বেল বেজে উঠে স্যার ও শ্রাবনীর দিকে একবার কটমট দৃষ্টি দিয়ে চলে যায় শ্রাবণী বেঞ্চে বসে খাতার দিকে তাকিয়ে থাকে ওর স্পষ্ট মনে আছে ও সকালেও এস্যাইনমেন্ট ঠিকঠাক দেখে আসছে কিন্তু এখন এস্যাইনমেন্টের খাতার সব লেখা কাটা কেনো।

নীরঃ বেস্টু বাদ দে কাল এস্যাইনমেন্ট করে আনলেই হবে

শ্রাবনীঃ কিন্তু কে করলো

নীরঃ জানি না

পরপর আরো দুইটা ক্লাস করে শ্রাবনী আর নীর ক্লাস থেকে বের হয় শ্রাবণীরা মাঠে আসতেই মাহিরদের দেখেও শ্রাবণী ক্রস করে যেতে নিলে মাহিরের কথায় দাঁড়িয়ে পড়ে।

মাহিরঃ কি ব্যাপার শুভ আজ ঝগড়ুটে রানী চোরের মতো পালিয়ে যাচ্ছে কেনো

নীরঃ ব্যস হয়ে গেলো

শ্রাবনীঃ শয়তানের লেজ কখনো সোজা হয় না জানেন

মাহিরঃ কখনো শয়তান দেখিনি কিন্তু শাঁকচুন্নি দেখেছি এই যে যেমন আমার সামনেই একজন দাড়িয়ে আছে

মাহিরের কথায় শ্রাবণী চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে হুট করে মাহিরের দিকে এগিয়ে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে,,,,

শ্রাবনীঃ একদম বাজে কথা বলবেন না এমনি মটকা হাইপাই হয়ে আছে ফালতু কথা বললে খু*ন করে দেবো

মাহিরঃ ওরে বাবা ভয় পাইছি কিন্তু কি বলো তো তুমি যেই মেয়ে আমার তো মনে হয় সারাদিনে দশ-বারো টা মা*ডার করে দাও

শ্রাবনীঃ বিলিভ মি আমি যদি পারতাম আপনার ওই ঠোঁট দুটো সেলাই করে দিতাম কিন্তু আমি নিরুপায়

হঠাৎ নীর শুভ’র পাশে একটা মেয়ে কে দেখে ভ্রু কুঁচকে আসে মেয়েটা কে এই প্রথম ওদের সাথে দেখলো কে মেয়েটা নীর প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে একবার মেয়েটার দিকে তাকিয়ে শুভদের দিকে তাকায় আদিত্য দাঁত কেলিয়ে বলে উঠে,,,,

আদিত্যঃ ও হলো আমাদের শুভ’র ইয়ে

নীর ফাজলামো করে বলে,,,

নীরঃ ইয়ে টা কিয়ে ভাইয়া

আদিত্যঃ আরে ইয়ে মানে হলো ইয়ে

শুভঃ শালা খবিস চুপ যা আমই বলছি

শুভ’র ধমকে আদিত্য থেমে যায় শুভ রাহার হাত ধরে মুচকি হেসে বলে,,,,

শুভঃ ও হলো রাহা আমার গার্লফ্রেন্ড বলতে পারো বউ অর উডবি

নীরঃ ওহ গুড ( মুচকি হেসে) হ্যালো

রাহাঃ হাই

নীরঃ উফফস তোরা থামবি ভাই কি শুরু করেছিস মাত্র না স্যারের কাছে বকা খেলি এখন এখানে এসে এভাবে ঝগড়া করছিস কেনো

শ্রাবনীঃ বেস্টু ( কাঁদো কাঁদো হয়ে)

নীরঃ কি

শ্রাবনীঃ আমি ঝগড়া করি

নীরঃ নাহ তুমি তো মহীয়সী নারী চল এখন

শ্রাবনীঃ হুহহহ বাই দ্যা রাস্তা শুভ ভাইয়া ইউর গার্লফ্রেন্ড লুকিং কিউট মিউট গুছলুম মুছলুম

শুভঃ থেংক্স ভা,, আইমিন আপু

নীরঃ আচ্ছা ভা সরি বেস্টু চল ( ঠোঁট চেপে হাসি আঁটকে)

শ্রাবনীঃ তুই হাসছিস কেনো হুহহ

নীরঃ কিছুই না আমার হাসি পাইছে তাই হাসছি

শ্রাবনীঃ এই বেস্টু জানিস কাল আমাদের বাড়িতে ছোড়দা জানভি আপি কে নিয়া আসছে

নীরঃ প্লিজ বইন থাম তোর হিটলার ভাইয়ের কথা শোনার কোনো আগ্রহ আমার নাই

শ্রাবনীঃ তোমার কেনো জ্বলে গো বেস্টু তোমার কেনো জ্বলে ( ভ্রু কুঁচকে)

নীরঃ ওয়াট রাবিস জ্বলাজ্বলি বইন দেখ মাথা গরম করিস না ক্লাসে চল

শ্রাবনীঃ বুঝি বুঝি এহনো কি খাই সুজি অল্প হইলে ও বুঝি

নীরঃ বা মানে তোর জামাইয়ের মাথা বুঝিস চল তো ( রেগেমেগে)

শ্রাবনীঃ এই রাগিস কেনো আম জাস্ট ফান চল ( কাচুমাচু হয়ে)

নীরঃ ভাইয়া আপু আসছি ভালো থাকবেন

শ্রাবনীঃ বাই রাহাপি

রাহাঃ বাই বাই

শ্রাবনী আর নীর মুচকি হেসে কথা বলতে বলতে চলে যায় রাহা উত্তেজিত হয়ে বলে,,,,

রাহাঃ ওরা কি সুইট কিউট মিউট ঝগড়া করে

মাহিরঃ সাবধান ১০ মিনিটে পাগল করার ক্ষমতা রাখে

মাহিরের কথায় সবাই হেসে দেয়।

_________________

উড়িম্মা আমার কি বিয়া হইতো না

উড়িম্মা আমার কি বিয়া হইতো না

লালা ওওও কি মজা আমি নিজের বিয়া খামু গো লা লা ওওও রোস্ট খামু পোলাও খামু আরো মাছের কালিয়া খামু গো ওওও লা লা লা

ও পোলা ও পোলা রে তুই বড় হইতি না রে ও পোলা ও পোলা রে তুই কি বিয়া করতি না রে

শ্রাবনী গান গেয়ে নাচতে নাচতে ভার্সিটির জন্য রেডি হয়ে নিচে নামছে হঠাৎ ড্রয়িংরুমে সবাই কে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে শ্রাবণী গান থামিয়ে মেকি হাসে।

সায়নঃ এটা কোন সিঙ্গারের গান বনু

শ্রাবনীঃ কেনো ছোড়দা গান টা কি শুনবি আচ্ছা আমিই শুনচ্ছি

অভিঃ না বুড়ি গান আর গাইতে হবে না গান টা দারুন হইছে আমরা আরেক দিন শুনবো কেমন এখন তো ভার্সিটি যেতে হবে নাকি

শ্রাবনীঃ আচ্ছা ( খুশিতে গদগদ হয়ে)

শ্রাবনীর কথায় সবাই স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে মানে এমন গান তো কেউ কখনো শুনেনি তাই ফাস্ট টাইম সবাই একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলো টেনশন নেই রিডার্স গন এমন অনেক সুপারহিট গান আমরা শ্রাবনীর কন্ঠে শুনতে পামু।

(আর নাইক্কা)

চলবে,,,,,