অপেক্ষিত প্রহর পর্ব-০৪

0
392

#অপেক্ষিত_প্রহর
#আফসানা_মিমি
|৪র্থ পর্ব |

কথায় আছে, ” যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যে হয়।”

আমার অবস্থা এখন তেমন। আমরা সকল শিক্ষার্থী বর্তমানে কলেজের অডিটোরিয়ামে দাঁড়িয়ে আছি। আমার ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে আছে প্রিন্সিপাল স্যার সহ আরো কয়েকজন শিক্ষক আর উনাদের ঠিক মাঝ বরাবর বদ শিল্পীটা দাঁড়িয়ে আছে। সকল শিক্ষকদের মুখের হাসি যেন থামছেই না। বদ শিল্পীটা এখন সকল শিক্ষকদের মধ্যেমনি। মাইকের সাহায্য প্রিন্সিপাল স্যার এনাউন্সম্যান্ট করছেন সকল শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্যে।

– প্রিয় শিক্ষার্থীরা! তোমরা সকলেই জানো যে, এখন বছরের শুরুর সময় কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলতেই থাকবে। আর তোমাদেরকে একটা আনন্দের সংবাদ দিতে চাই যে, আমাদের কলেজ থেকে আর কয়েক সপ্তাহ পর পিকনিকে নিয়ে যাওয়া হবে। আর সেখানে আমরা ফারদিন ইফাজকে নিয়ে একটা কনসার্ট করতে চাচ্ছিলাম। আরেকটা কথা, ফারদিন ইফাজ যেমন কণ্ঠশিল্পী তার সাথে কিন্তু একজন গানের টিচার। তোমরা শুনে খুশি হবে যে, ফারদিন ইফাজ শহরের নামকরা কণ্ঠশিল্পী যিনি আমাদের গ্রামের এই ছোট্ট কলেজে আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে গান শেখানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। গান শিখানো কিন্তু আমাদের প্রিয় কণ্ঠশিল্পী ইফাজের-ই আইডিয়া। এই উদ্যোগের জন্য আমরা ইফাজের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ। আমাদের সাথে দুই বছরের চুক্তি করেছেন ইফাজ। দুই বছরে শিক্ষার্থীদের গান শিখিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী দের গান রেকর্ড করার সুযোগ করে দিবেন ইফাজ।
আজকে তোমাদেরকে আরেকটা কথা জানিয়ে রাখি। ইফাজ কিন্তু এখন এই গ্রামে থাকবেন, শুধুমাত্র গানের রেকর্ডিং এর জন্য মাঝে মাঝে তিনি শহরে চলে যাবেন। আমি আশা করছি তোমাদের কাছ থেকে ইফাজ ঠিক ততটা সম্মান পাবে যতটা সম্মান আমাদের শিক্ষকদের করা হয়। তোমরা আমাদের শিক্ষক হিসেবে যেমন সম্ভান করো ইফাজকেও ঠিক একইভাবে সম্মান করবে এবং ভালবাসবে। যতটা সম্মান এবং ভালোবাসার জন শিক্ষককে দেওয়া যায় ততটা সম্মান করবে। আজ এ পর্যন্তই এখন তোমরা সবাই ক্লাসে যেতে পারো।

প্রিন্সিপাল স্যারের কথা শুনে আমার চোখ কৌটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম।
যাকে আমার সহ্য হয় না। যার কাছ থেকে দূরে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। সেই মানুষটা কিনা আমার চোখের সামনে চব্বিশ ঘন্টা থাকবে! না এটা কখনো হতে পারে না। আমি এই বদ শিল্পীর নামে ওর বাবার কাছে নালিশ করব। বলবো যে, “আপনি আপনার গুণধর বদ শিল্পীকে আমাদের গ্রাম থেকে নিয়ে যান। মাথায় পোকা ধরেছে এই লোকটার। আমির জীবন নরক বানাতে এখানে এসেছে সে।”

পুরো অডিটোরিয়াম ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। এখনো আমি দাঁড়িয়ে আছি অডিটোরিয়ামে। ভাবছি কীভাবে শায়েস্তা করা যায় এই বদ শিল্পীটাকে। আমার ভাবনার মাঝেই ইফাজ এসে হাজির হয় আমার সামনে। আমার উদ্দেশ্য দুষ্টু হাসি হেসে বলতে লাগলেন,

– মুখ বন্ধ করো মিস ধাক্কাওয়ালী। মশা ঢুকে যাবে যে! এখনো তো কিছুই করিনি আমি। এতটুকু করাতে তোমার মুখ হাঁ হয়ে গেল? তোমাকে শায়েস্তা করার জন্য সব করতে রাজি আছি আমি। আমাকে সেদিন ফেলে দিয়েছিলে তাই না! দেখো এখন আমি কি করি। মাত্র তো শুরু করলাম, সামনে দেখো কি হয়।

ইফাজ বাতাসের বেগে এসে কি সব বকে গেল তার সবকিছু আমার মাথার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে। লোকটা কি পাগল হয়ে গিয়েছে? হয়তো! আমার মতো একজন সাধারণ মেয়ের সাথে বিয়ে হয়ে যাওয়ার কারণে হয়তো লোকটা পাগল হয়ে গিয়েছে। মনে হয় শহরের কোন মেয়েকে পছন্দ আছে এরমধ্যে আমাদের বিয়ে হয়েছে। এখন হয়তো বদ শিল্পীটা আমাকে অত্যাচার করে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য এমন করছে। কিন্তু আমিও কম না। আমি এই বদ শিল্পীকে কখনো নিজের কার্যসিদ্ধি হাসিল করতে দিব না।
———
কলেজ শেষে গ্রামের মেঠো পথে হেঁটে যাচ্ছি নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে। পথিমধ্যে লিলি বুড়ি মাকে দেখতে পেলাম, শুকনো লাকড়ি একসাথে করে শুকনো লতা দিয়ে আঁটি বেঁধে কাঁধে তুলতে চেষ্টা করছেন। লিলি বুড়ি মার কান্ড দেখে রাগ হলো। এই বয়সে কে বলেছে এই কাজ করতে! রহিমাকে বললেও তো পারে তাই না! বুড়ি মায়ের কাছে গিয়ে রাগান্বিত স্বরে বললাম,

– এই যে লাল বুড়ি, বলি এই বয়সে শরীরে এত ধকল সয় তো? রহিমা কি করে, তোমার খেয়াল রাখতে পারে না?

লিলি বুড়ি মা আমাকে দেখে খুব খুশি হলেন। লাকড়ির আঁটি মাটিতে রেখে আমার কথার প্রত্যুওরে বললেন,
– রহিমা ঐপাড় গিয়েছে বাজার করতে। ঘরে লাকড়ি নেই তাই ভাবলুম কয়েকটা ডাল-পালা ভেঙ্গে নিয়ে যাই, রান্না করতে হবে তো!

বুড়িমার কথায় কিছু বললাম না। এটা নিত্যদিনের কাজ বুড়ি মার। হাতের দুইখানা বই বুড়ি মায়ের হাতে দিয়ে ওড়না কোমড়ে গুঁজে নিলাম। লাকড়ির আঁটিখানা মাথায় তুলে বুড়ি মায়ের বাসার দিকে রওনা হলাম।

– আহিবা বু আরে ও আহিবা বু! বলি দিন দুনিয়ার কোন খবর রাখো নাকি তুমি?

লিলি বুড়ি মায়ের বাড়ির উঠোনে কেবল এসে দাঁড়ালাম। এমনিই কোথা থেকে রহিমা দৌঁড়ে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে হাঁক ছাড়লো।

– কি বলছিস রে রহিমা! কিসের খবরের কথা বলছিস?

রহিমা আমার কথার প্রত্যুওরে বিস্ময়কর দৃষ্টিতে তাকাল। বাজারের থলেটা জমিনে রেখে বলল,

– ওরে আমার মাথা! যার উঠোনে শিল্পীর পাদ, সে কি না জানে না রাত বিরাত!
তুমি এখনো আমাদের বাসায় কি করছো। তোমাদের বাড়িতে তো শহরের বাবুর চরন ফেলেছে! বড়ো বড়ো টেরাকে(ট্রাক) করে মাল সামান নিয়ে এসেছে। তুমি নিজেই গিয়ে দেখে আসো না!

রহিমা মেয়েটা যে উন্মাদ হয়ে গিয়েছে বুঝ হলো আমার। নয়তো এভাবে শহরের বাবু, চরন কি বলছে মেয়েটা। রহিমাকে ধমক দিবো এমনিই লিলি বুড়ি মা আমার উদ্দেশ্য বললেন,

– হ্যাঁ রে সই! তুমি গিয়ে দেখ না কে এসেছে বাড়িতে। আমার তো মনে হচ্ছে তোর বাপের নয়া কুটুম এসেছে তোর বাড়িতে। অযথা বকাবকি না করে বাড়ি যা।

বুড়িমার কথাও সঠিক। অযথা রহিমাকে দোষারোপ না করে নিজে গিয়ে দেখলেই হয়।
লিলি বুড়ি মাকে বলে রওনা হলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।

——–

বিকেলবেলা। সূর্য্যিমামা এখন কিছুটা হেলে গিয়েছে। আমাদের বাড়ির সামনের দুই দুইটা মাল বোঝাই ট্রাক দন্ডায়মান অবস্থায় আছে। কয়েকজন মানুষেরা সেই ট্রাক হতে কিছু মাল-সামানাদি নামিয়ে আমাদের বাড়ির ভিতরে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি অবাক হয়ে লোকদের কাজকর্ম দেখছি। রহিমা বলল আমাদের বাসায় নাকি কুটুম এসেছে। কিন্তু এটা কেমন কুটুম, যে আসার সাথে সাথে জিনিসপত্র নিয়ে আসে!
বাহিরে দাঁড়িয়ে এসব ভেবে কোন লাভ নেই তাই বাড়ির ভেতর প্রবেশ করলাম।

বাড়ির ভিতরে আমার মা মাথায় ঘোমটা টেনে মুখে আঁচল গুঁজে ঘরের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছেন। আর বাবা চেয়ারে অপরপাশে বসা চেয়ারে কার সাথে যেন কথা বলছেন। যেহেতু আমি সদর দরজায় দাঁড়ানো তাই মুখ দেখতে পারছি না।
আমাকে দেখে বাবা মুচকি হেসে আমার উদ্দেশ্যে হাঁক ছাড়লেন,

– এই তো আমার আহিবা মা এসে গেছে। কলেজ থেকে আজ এত দেরি হল কেন মা?

বাবার কথার প্রত্যুওরে বাবার দিকে আগাতে আগাতে বললাম,

– ঐযে লিলি বুড়ি মা আছে না! ইয়া বড়ো লাকড়ির বোঝা আঁটি বেঁধে নিয়ে যাচ্ছিল বাড়িতে। বুড়ো মানুষ একা পারবে না তাই মানুষটিকে আমি সাহায্য করে আসলাম। এজন্য বাবা কলেজ থেকে আসতে দে,,,,,

আমার মুখের কথা আমার মুখে আটকে রইলো। কেননা আমার সামনে আমার শত্রু বদ শিল্পী বসে আছে। আমার পানে দাঁত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে। তারমানে কলেজে শিল্পী সাহেব আমাকে এই ঝড়ের আভাস দিচ্ছিলো? হে আল্লাহ আমি তো খাল কেঁটে কুমির নিজের বাড়ীতে নিজ ইচ্ছেই নিয়ে এসেছি। এখন আমার কি হবে?

– মা এই লোকটাকে তো তুই চিনিস! শিল্পী সাহেব।তোদের কলেজের নতুন গানের মাস্টার। গ্রামে ভালো কোনো বাড়ি পাচ্ছিল না থাকার জন্য। এতদিন নাকি রাস্তায় গাড়িতে ঘুমাতো। রাস্তায় দেখা আমার সাথে তাই ধরে-বেঁধে এখানে নিয়ে আসলাম। আমাদের উপরের মাটির ঘরের দুতলা টা আছে না! সেটা তো খালি পড়ে রয়েছে। তাই আজ থেকে গানের মাস্টার উপরে থাকবে।

বাবার কথায় সৌজন্যমূলক হাসি হেসে সালাম দিলাম,

– আসসালামু আলাইকুম। ভালো আছেন স্যার?

আমার কথায় বদ শিল্পীটা জয়ী হাসি দিলেন। আমার পানে এক চোখ টিপি দিয়ে বললেন,

– আজ না কলেজে দেখা হলো আমাদের! এখন যে আবার কেমন আছেন জিজ্ঞেস করছো? তোমাকে না বকা দিয়ে এসেছিলাম দুষ্টুমি করার জন্য ভুলে গিয়েছো?

বাবার সামনে যে এই বদ শিল্পী ইচ্ছে করে আমাকে এত কথা শোনাচ্ছে বুঝতে পারছি। সবকিছু আমাকে বকা খাওয়ানোর ধান্দা। বাবা যে এখন আমাকে বকা দিবে খুব ভাল করেই বুঝতে পারছি আমি। হলোও তাই! বাবা রাগান্বিত স্বরে আমার উদ্দেশ্যে বললেন,

– কি ব্যাপার আহিবা! এখনো কি ছোট রয়ে গিয়েছো? এখনো তোমার বাচ্চামো যায়নি? কলেজে উঠেছ এখন তিড়িং বিড়িং করো? আবার যদি তোমার নামে নালিশ আসে আমার কাছে তাহলে তোমার ঠ্যাং ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবো।

– আহা আঙ্কেল বকবেন না মেয়েটাকে। বাচ্চা মানুষ একটু একটু দুষ্টুমি করবেই তো। আমি আছি না! আপনার মেয়েকে শাসন করে দেবো। আর এখন তো আমি আপনাদের বাসায় অতিথি আপনার মেয়েকে দেখে শুনে রাখার দায়িত্ব আমার।

ইফাজের কথা শুনে ইচ্ছে করছে মাথায় ডাব ভাঙ্গি। বাবা এবার ইফাজের উদ্দেশ্যে বললেন,

– যাই বলো বাবা, আমার আহিবা মার কন্ঠস্বর মাশাআল্লাহ। যে একবার শুনে সেই পাগল হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে আমার মেয়েটাকে গান শিখিয়ে দিও। আর কোন কিছু প্রয়োজন হলে আমাদের খবর দিও।

এখানে আর এক মিনিটও থাকা যাবে না। এখানে থাকা মানে আমার ইজ্জতের ফালুদা বানানো। শিল্পীর দিকে চোখ রাঙিয়ে নিজের ঘরে চলে আসলাম।
আমাদের গ্রামের পশ্চিম পাশটা খুবই উন্নত, বিদ্যুৎ এসেছে সেখানে কিন্তু এ দক্ষিণপাড়া উন্নত না। এখানে বিদ্যুত আসেনি এখনো। বাবার দোকান রয়েছে পশ্চিম পাড়ে সেখান থেকে ফোনে চার্জ করে নিয়ে আসে বাবা প্রতিদিন। আমার ঘরের দখিনের জানালাটা খুলে দিলাম। জানালা খুলে দিতেই দখিনা বাতাস আমার গা ছুঁয়ে গেল। আমার ঘরটা আমার খুবই প্রিয়। এখানে আমার হাজারো স্মৃতি রয়েছে। তাই বাবা হাজারো বলে এ ঘর থেকে আমাকে কোথাও সরাতে পারেনি।

নিশিরাতে হ্যারিকেন জ্বালিয়ে পড়ছি একমনে কলেজের আনন্দ পাঠের লালসালু উপন্যাস। আমার খুবই প্রিয় এই উপন্যাসটি। মা কয়েকবার খাবারের জন্য ডেকে গিয়েছেন কিন্তু আমি যাইনি। যদি ঐ বদ শিল্পীটার সামনে পড়তে হয় আমাকে! নির্ঘাত ঐ লোকটা অনেক প্ল্যান করে রেখেছে আমাকে শায়েস্তা করার জন্য। না বাবা আমি নিজের ইচ্ছায় গভীর গর্তে পড়তে রাজি না।

ধুপ ধাপ আওয়াজে আমার পড়ার মধ্যে ব্যাঘাত ঘটলো। খেয়াল করে দেখলাম উপরের দুতলা থেকে আওয়াজ আসছে। যেহেতু আমাদের মাটির ঘর আর উপরের তলা আছে। নিচতলা উপরতলার মধ্যকার শুকনো শক্ত কাঠ দিয়ে জোড়া লাগানো হয়েছে। যার জন্য একটু জোড়ে পা ফেললেই আওয়াজ হয়। আস্তে আস্তে আওয়াজ আরো বাড়তে লাগলো, বুঝতে পারলাম শিল্পী ইচ্ছে করে আমাকে জ্বালাতন করার জন্য এসব করছে। না! আর বসে থাকা যাবে না। হাতের বই টা বন্ধ করে দরজা খুলে বের হয়ে আসলাম বাহিরে।

খাবার ঘরের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মা হাঁক ছাড়লেন,

– আহিবা আয় খেতে আয়! একদম বাহানা করবি না। আজ না খেলে একদম কাঁঠাল গাছের ডাল তোর পিঠে ভাঙ্গবো আমি।

– আহ মা তোমাকে না আমি একদিন মানা করেছি! এই কাঁঠাল গাছের ডাল নিয়ে কোনো কথা বলবে না? তোমাকে আমি ভয় পাই না এখন আর? আমি বড় হয়ে গিয়েছি। তুমি কাঁঠাল গাছের ডাল বা সেগুন গাছের ডাল দিয়ে আমাকে মারো না কেন! আমি তোমাকে ভয় পাই না।

আমার কথা শুনে মা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন। রাগান্বিত স্বরে আমার উদ্দেশ্যে বললেন,

– এখন যদি খেতে না আসিস, তাহলে তোর বাবাকে বলে দিবো যে তুই আমার উপর রাগ দেখাচ্ছিস।

আমি জানি যতক্ষণ না পর্যন্ত আমি খেতে বসছি ততক্ষণ মায়ের বকবক লেগেই থাকবে। অগত্যা খাবার ঘরে চলে গেলাম খাওয়ার জন্য।

নিচে পাটি বিছিয়ে আমরা গ্রামে খাই। সাধারণত শহরের লোকদের মতো ডাইনিং টেবিল আমাদের নেই। আমরা খুব সাধারণভাবে থাকতেই পছন্দ করি। মা ভাতের প্লেট আমার সামনে রাখতেই আমার পাশে এসেকেউ এসে বসলো। তাকিয়ে দেখলাম বদ শিল্পীটা দাঁত কেলিয়ে আমার পানে তাকিয়ে আছে।

– আরে বাবা তোমাকে এখনি ডেকে আসবো ভেবেছিলাম। বসো বাবা। আমরা গরীব মানুষ মাছ মাংস প্রতিদিন খাওয়া হয়না আমাদের। তোমাকে যে কিছু জিজ্ঞেস করবো তারও সময় পাইনি। আজ কচু শাক করেছি আর ডিম ভুনা চলবে তোমার?

– চলবে মানে আন্টি! আমি কচু শাক অনেক পছন্দ করি। দিন আমাকে খাবার দিন। আমি আবার খুব ভদ্র ছেলে বুঝলেন আন্টি! আমাকে জোর করতে হয়না খাতঅ্যাআর জন্য। যখন ইচ্ছে হয় তখনই খেয়ে নেই আমি

বদ শিল্পীটা যে আমাকে খোঁচা মেরে কথা বলছে বুঝতে পারছি। তাই শিল্পীকে শুনিয়ে বললাম,

– রাক্ষস একটা।

চলবে…….