অপেক্ষিত প্রহর পর্ব-০৮

0
291

#অপেক্ষিত_প্রহর
#আফসানা_মিমি
|৮ম পর্ব |

প্রকৃতি নিজের শিরশির বাতাস বইয়ে শীত নেমেছে তার আভাস দিচ্ছে। বাতাসের সাথে সাথে শীতও যেন আকড়ে ধরছে বারবার।

ইফাজ সেই কখন দুই মিনিটের কথা বলে গাড়ি থেকে নেমে গিয়েছে আমার প্রশ্নের উওর না দিয়ে এখনও আসার নাম নেই। প্রায় আধাঘণ্টা পর ইফাজ ফিরে আসে গাড়িতে, হাতে কিছু কাগজপত্র নিয়ে।

– এগুলো কিসের কাগজ শিল্পী সাহেব?

– এগুলো আমার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। যা আমি কাউকে ধরতে দেই না। তোমাকেও ধরতে দিবো না। এগুলো একান্ত আমার, শুধুই আমার। আর এসব লেখা তুমি বুঝবে না। আজ শহরে যাবো তো! তাই এগুলো সঠিক স্থানে রেখে যেতে চাই।
– আপনি সেই সকালে শহরের চলে যান আম্মু বলেছে এখন বেলা পার হয়ে গিয়েছে কখন যাবেন শহরে?

– ওমা আমার বউয়ের দেখি আমার প্রতি সব দিকেই নজর আছে। আমি কোথায় যাচ্ছি, কি খাচ্ছি সবই খেয়াল রাখে। আহা আমার বউটা! আসো তোমাকে আদর করে দেই।

– বাজে কথা বলবেন না বদ শিল্পী, একদম কল্লা কেঁটে ফেলবো। আপনাকে আমি সহ্য করতে পারি না। শুধুমাত্র গাড়ি থেকে কিভাবে বের হতে হয় তা জানি না বলে বসে আছি। এখন বলুন, কিছুক্ষণ আগে আমাকে কি যেন বলে সম্মোধন করেছিলেন যা আমার একজন প্রিয় মানুষ ডাকতো। সত্যি করে বলুন আপনি কে?

– আমি ফারদিন ইফাজ। তোমার কাছে বদ শিল্পী এবং সবার কাছে ভালোবাসার শিল্পী, পপুলার শিল্পী। এখন তুমি বলো বাসায় যাবে নাকি আমার সাথে শহরে যাবে? শহরে গেলে লাভই হবে। ঝগড়া করার জন্য একজন পার্টনার পাবো।

– আবারও বাজে প্যাচাল! আপনি আপনার রাস্তায় জান তো! আমি বাসায় যাবো। দরজা খুলে দিলেই আমি চলে যাবো। আপনার মত শিল্পীর সাথে আর এক মুহূর্তও থাকব না।

আমার কথাই ইফাজ হাসলো। চোখে সুন্দর গোল গোল কালা চশমা লাগিয়ে প্রাইভেটকার স্টার্ট করল। আমি শুধু তাকিয়ে গাড়ির জানালার বাহিরের প্রকৃতি দেখছি। আমাদের গ্রামটা কি সুন্দর। ছোট থেকে এখানে বড়ো হয়েছি কিন্তু এত মনোযোগ সহকারে চারপাশটা দেখিনি। কি সুন্দর গাছপালা দেখা যাচ্ছে, হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু গাড়িতে বসে এখন গাছগুলো ছুঁয়ে দেয়া ধরা ছোঁয়ার বাইরে। গাড়ির জানালা খুলে দেওয়ায় বাহিরের বাতাস প্রবল বেগে আমার গা ছুঁয়ে যাচ্ছে। কি আনন্দ লাগছে তা বলতে পারব না। আকস্মিক গাড়ি থেমে যাওয়ায় আমার আনন্দের মধ্যে ব্যাঘাত ঘটে। প্রশ্নসিক্ত নয়নে ইফাজের পানে তাকালে, ইফাজ চোখের ইশারায় সামনে তাকাতে বলে।
আরে তোমার বাড়ির রাস্তা যে এটা! তারমানেল্পী সাহেব সত্যি সত্যিই শহরে চলে যাবে! ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। এই কয়েকদিনে ঝগড়া করতে করতে অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে আমার। যাইহোক ইফাজ এসে আগ বাড়িয়ে দরজা খুলে দিল। যার ফলে ইফাজ এখন কিছুটা আমার কাছাকাছি চলে এসেছে আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি ইফাজের হৃদপিন্ড খুব দ্রুততার সাথে বেজে যাচ্ছে। আচ্ছা! এই হৃদপিন্ডর দ্রুতগতির আওয়াজটা যার জন্য হচ্ছে তার মালিক কি আমি? কিন্তু কেন?

ইফাজ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কি যেন ভেবে আবার দূরে সরে গেল। আমি ইফাজকে বাই বলে চলে আসলাম বাড়ির দিকে।

————-

প্রিয় হিবারাণী,

চিনতে পেরেছো কি আমায়? মনে পড়ে কি আমার কথা! কেমন আছো তুমি প্রিয়লতা। এখনও কি অভিমান করে নাক টেনে কথা বলো অবেলা! নাকি আমার মত অপেক্ষায় প্রহর গুনছো সর্বদা। এই হিবারাণী, তোমার ফোকলা দাঁতের সেই ফাঁকা অংশে কি দাঁত গজিয়েছে! ঐ যে ছোট বেলায় যখন আমাকে ‘ইফু’ বলে ডাকতে, তখন তোমার দাঁতের মধ্যে থেকে ইফুর ‘ফু’ অক্ষর বাতাসের সহিত বের হয়ে যেত হা হা হা। আমি কিন্তু প্রতিটিক্ষণ তোমার সবকিছু মনে করি। হিবারাণী, আগের মত কি ছিঁদকাদুনে হয়ে আছো! নাকি সাহসী যুবতী হয়ে গিয়েছ! মনে পড়ে তো সেই বাদলা দিনের কথা! যখন বাদলে ছেয়ে যেত সারা আকাশে আর তুমি আবদার করতে বৃষ্টিতে ভিজবে। আমার শত নিষেধ তুমি শুনতে না। হারিয়ে যেতে বাদলের সেই ঝুমঝুম বৃষ্টির বেলায়। আমি তখন বড়ো কচু পাতার সাহায্যে তোমাকে ঐ বাদলা থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করতাম কিন্তু তুমি তো আমার দুষ্টু হিবারাণী ছিলে; বৃষ্টি থেকে বাঁচবে কি উল্টো আমাকে সহ ভিজতে। পরদিন তো আমাদের বেহাল অবস্থা হতো জ্বর- ঠান্ডায়। তোমার মা কিন্তু আমাকেই দোষারোপ করতো সেসময়ে আর তুমি, তুমিতো জ্বরের মধ্যেই আমাকে বাঁচাতে বাহানা বানাতে।
প্রিয়লতা, তোমার নতুন নাম দিলাম। দিনে দিনে তুমি আর এত প্রিয় হয়ে যাচ্ছো যে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। আরেকটা কথা তোমার থুতনির নিচের গর্তটা কি ভরাট হয়ে গিয়েছে। হাসলে কিন্তু তোমার ঐ থুতনিতে কামড় দিতাম আগে। এখনও কি আগের মত আছে? কামড়ে দিতে অনুমতি দিবে কি?
আমি তোমার আশেপাশে আছি। আমাকে তোমার মত করে অনুভব করে দেখো বুঝতে পারবে আমিই সেই। আজ এই পর্যন্তই। খুব শীঘ্রই দেখা হবে আমাদের। ভালোবাসি আমার প্রিয়লতা। আল্লাহ হাফেজ।
ইতি তোমার
ইফু।

বিছানায় শুয়ে এই নিয়ে পাঁচবার চিঠিখানা পড়লাম। তাহলে কি আমার ধারণা-ই সঠিক। ইফাজ-ই কি আমার ইফু। আমার ছোট বেলার সাথী,আমার ভালোবাসা, আমার বর। চোখ বেয়ে অবাধ্য অশ্রুকণা অনবরত ঝড়ে যাচ্ছে, থামার নাম নেই। আজ খুশিতে আমার কান্না আসছে। কিন্তু এই কান্না থামাবার মানুষটি আমার পাশে নেই। অনেক রাগ করেছি আমি ইফু তোমার সাথে। অনেক রাগ করেছি।

আজ এক সপ্তাহ ইফাজ বাসায় নেই। ঘরের টেলিভিশনটার সামনে আজকাল বেশি চলাচল আমার। ইফাজের গানের কিছু সিডি বাজার থেকে কিনে নিয়ে এসেছি। টেলিভিশনে ইফাজের গান, কনসার্ট কিছুই দেখা মিস করি না আমি। আমার মা-বাবাও ইফাজের ভক্ত এখন। ইফাজের গান শুনলে মা রান্না ছেড়ে ঘরে চলে আসেন। মা তো প্রায় সময় বলে উঠেন,

– কি সুন্দর টিভিতে গান গায় ছেলেটা। মনে কোন অহংকার নেই। দেখছিস কীভাবে আমাদের সাথে মিশে গিয়েছে। আমার তো এখন ইফাজকে আমার পরিবারের একজন মনে হয়। হ্যাঁ গো আহিবার বাবা! বাজার থেকে মাছ,মাংস নিয়ে আসো তো গিয়ে! ছেলেটা আসার পর থেকে নিরামিষ খেয়ে যাচ্ছে। তুমি দেখেছো! ছেলেটা কত শুকিয়ে গিয়েছে? এই আহিবা যা তো! গাছ থেকে বড়ো দেখে লাউ তুলে নিয়ে আয়। আমরা ইফাজ আসার আগ পর্যন্ত শাক-শবজি, লাউ-কুমড়ো খেয়ে থাকবো।

মায়ের কথা শুনে মনে মনে একটা ছন্দ-ই আসছে,
” যার বিয়ে তার খবর নাই,
পাড়া-পড়শির ঘুম নাই।”

আমার জামাই আমার-ই কোন মাথা ব্যথা নাই ঐদিকে মা পাগল হয়ে যাচ্ছে যেন তার মেয়ের জামাই লাগে আর সে আসবে এজন্য কত আয়োজন করতে হবে। এক মিনিট, এক মিনিট ইফাজ তো মায়ের মেয়ের জামাই-ই লাগে হা হা হা আমি যে কি কি ভাবি না!

ইফাজের চিঠিখানা আবারও সযত্নে নির্ধারিত স্থানে রেখে আসলাম। এগুলো সেই কাগজে কাগজগুলো যেগুলো ইফাজ আমাকে ধরতে মানা করেছিল। আর আমি আবার নিষিদ্ধ কাজের প্রতি বেশি আগ্রহী। যেই জিনিসটা আমাকে না করা হয় তা আমি করি ছোটবেলা থেকেই। আজও করে ফেললাম আর ইফুর আসল পরিচয় পেয়ে গেলাম। আমি অপেক্ষা করছি ইফুর মুখ থেকে তিনটা শব্দ শোনার জন্য। যে তিনটা শব্দ শুনতে আমার মত ইফুও ছটফট করছে।

আজ সকাল থেকে মনটা আনচান করছে। ভেতরে ভেতরে অস্থিরতা লাগছে। কেন যেন মনে হচ্ছে আজ ইফাজ আসবে। ইফাজের নাম্বার আমার কাছে নেই বিধায় যোগাযোগ করতে পারিনি এ কয়েকদিন। কলেজেও রেগুলার যায়নি। বলে না! যেখানে আপনজন যেই সেখানে তোমার কিসের কাজ!

আজ শাড়ি পরেছি। সাদা শাড়ি লাল পাড় দেওয়া। পায়ে লাল টকটকে আলতা সাথেই আছে ইফাজের দেয়া সেই নুপুর জোড়া। মাথায় খোঁপা করে তাতে লাল গোলাপ গুঁজেছি। শেষ বিকেলে ধানক্ষেতের মধ্যখানে এঁকেবেঁকে হেঁটে যাচ্ছি।
আমার এই অবস্থা দেখে ধান ক্ষেতে কাজ করা লিলি বুড়িমা দূর থেকে হাঁক ছাড়ে,
_এই আমার সই! আজ এত সাজাগোজ করছে যে! সে কি চলে এসেছে?
_ আরে বুড়িমা কি যে বলো না! সে তো সেই ছোট কালে আমায় একলা ফেলে চলে গিয়েছে। তার কি আর সময় হয়েছে আমার কাছে আসার! আজ তার কথা বড্ড মনে পড়ছে তাই তো তার পছন্দের সাজে সেজেছি। কেমন লাগছে আমাকে?
_ একদম পরীর মত লাগছে। মাশাআল্লাহ কারোর নজর যেন না লাগে।
_নজর তো কবেই পড়েছে বুড়িমা তোমার এই সইয়ের উপর। এখন শুধু কালো টিপ দেওয়া বাকি আছে।

বুড়িমা আর আমার কথার মাঝখানেই পেছন থেকে কেউ কথাগুলো বলে উঠলো। বুড়ি মায়ের পেছনে উঁকি দিয়ে দেখলাম স্বয়ং ইফাজ দাঁড়িয়ে আছে মুচকি হাসি হেসে। ইশ কি মারাত্মক লাগছে আমার ইফুকে। শুভ্র রংয়ের পাঞ্জাবী পরা সামনের দুটো বোতাম খোলা আর সাথে দুষ্টু হাসি ফ্রী। না এখানে আর থাকা যাবে না।
কেন যেন আজ খুব লজ্জা পাচ্ছি আমি আজ ইফাজের সামনে দাঁড়াতে। লজ্জার কারনে ইফাজকে দেখে আর এক মূহূর্তও দাঁড়ালাম না। উল্টোপথে দৌঁড়ে চলে আসলাম অন্য প্রান্তে।

এদিকে ইফাজ হিবারানীর এমন লজ্জায় রাঙ্গা মুখ দেখে আবারো ঘায়েল হয়ে গেল। হিবারাণীর চলে যাওয়ার পানে তাকিয়ে মুচকি হেসে লিলি বুড়ি মায়ের উদ্দেশ্যে বলল,

_ আচ্ছা লিলি বুড়িমা, সত্যি করে বলো তো! তুমি সেদিন আমাকে কিভাবে চিনতে পারলে? যেখানে আহিবা আমাকে চিনে নি তুমি কিভাবে বুঝলে আমি তোমার সেই দুষ্টু ইফু?
ইফাজের কথা শুনে লিলি বুড়িমা মুচকি হেসে বললেন।
_ আমার বুড়ো বিয়ের সময় আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, তোমার নাম কি?
_ ললিতা।
_আমার নাম শুনে বুড়ো বিয়ের দিন কি যে হাসি! বুড়ো আমাকে আদর করে ডাকতো লিলিফুল। তোরা দুই বাচ্চা ছোট বেলা থেকেই আমার বাড়ি বড়ো হয়েছিস। বুড়োর মুখে লিলিফুল তো আর ডাকতে পারতি না! তাই ছোট করে লিলি ডাকতি। তোর মুখে লিলি বুড়ি মা ডাক শুনেই বুঝতে পেরেছি যে তুই আমাদের ইফু।

লিলি বুড়ি মার কথা শুনে ইফাজ প্রশান্তির হাসি হেসে বলল,
– তোমার জন্যই আমি আমার হিবারাণীকে চিনতে পেরেছি। আর তার জন্য কিন্তু হিবারাণী-ই পথ দেখিয়েছিল আমাকে। প্রদিনের হিবারাণীর করা দুষ্টুমির জন্যই তো ফিরে আসতে নিয়েছিলাম আর পথিমধ্যেই তোমার সাথে আমার দেখা। তোমাকে দেখেই আমি চিনে যাই যার ফলে আনন্দিত হয়ে তোমাকে লিলি বুড়ি মা ডেকে ফেলি।

ইফাজের কথায় বুড়ি মা হাসে। ইফাজকে বিদায় নিজ গন্তব্যে চলে যায়।

——

– কি ব্যাপার, আজ পরিবেশ এত শান্ত শিষ্ট যে? গোয়াল ঘরে কি আজকে গরু বাঁধা হয়নি? আর শেওড়া গাছের পেত্নী থেকে এমন ভালো মানুষ হলে কখন? ওখন তো তোমাকে দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এক মুহূর্তের জন্যে মনে হয়েছিল, বট গাছের পেত্নি ধান ক্ষেতে চলে এসেছে ঘাড় মটকাতে।

ইফাজ যে আমাকে খোঁচাতে এসেছে তা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারলাম। এবার আমি ইফাজকে আমার পাল্টা আক্রমণ করে বসলাম,

– এতদিন কত শান্তিতে ছিলাম! আজ থেকে আবার শুরু হল জ্বালাতন করা। আপনি কেন এখানে এসেছেন বলেন তো! আপনি জানেন, আপনাকে সহ্য হয়না আমার? আপনাকে আমি দু’ চোখে দেখতে পারি না। আপনার থেকে কত ভালো আমার সেই মানুষটা! যাক আমি খুব ভালোবাসি।

আমার কথা শুনে ইফু ভ্রু যুগল কুঁচকে প্রশ্ন করল,

– তাকে তুমি ভালোবাসো?

– আরে জানেন না তো, আপনি চলে যাওয়ার পরে আমার ছোটবেলার বন্ধু আমার কাছে ফিরে আসে। আমাদের এখন কিন্তু ইয়ে চলছে। ভালোই হয়েছে আপি চলে গিয়েছিলেন। আপনি থাকলে তো সবসময় আমার আশেপাশে থাকতেন তাহলে আমাদের সমস্যা হতো। আপনি চলে যাওয়াতে আমার রাস্তা ক্লিয়ার হয়ে গিয়েছে। আপনি তো সারাক্ষণই আমাকে জ্বালিয়ে মারেন, সর্বদা আমার পাশে থাকেন। আপনি চলে যাওয়াতে আমি একটু সুযোগ পেয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে, আমার ভালোবাসার মানুষের সাথে ভাব বিনিময়ের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। কত ভালোবাসি আমি তাকে!

আমার কথা শুনেই ইফাজের চোখগুলো বড়ো বড়ো হয়ে গিয়েছে। ইফাজকে দেখে আমার ব্যাপক হাসি পাচ্ছে কিন্তু হাসবো না। হাসলে যদি ইফাজ কিছু বুঝে যায় যে, আমি তাকে জেলাস ফিল করানোর জন্য এসব বলছি!
আমার কথার প্রত্যুওরে ইফাজ কিছু বলবে তার আগেই আমি আবারো বলে ফেললাম,

– আপনি কোন রকম ত্যাড়ামি করবেন না। আপনি প্রমিজ করেছেন আমাকে ডিভোর্স দিবেন। কবে দিবেন তা আপনি ঠিক করুন। আমিতো আমার ভালবাসার মানুষটার কথা চিন্তা করতে করতেই শেষ। এখন আমি চললাম। ভালো থাকবেন।

“ভালোবাসি, ভালোবাসি আমার সেই মানুষটাকে কত ভালোবাসি।
আশেপাশের বন্যপ্রাণীরা তা দেখে হিংসায় মরে, ভালোবাসি, ভালোবাসি আমার সেই মানুষটাকে কত ভালবাসি।”

ইফাজ আজ ঘুমাবে না। চিন্তায় মরবে যে কে সে যাকে তার হিবারাণী ভালোবাসে!
আপনারাও চিন্তা করুন ততক্ষণে আমি যাই।

চলবে……