অবশেষে তুমি আমার পর্ব-১১+১২

0
308

# অবশেষে তুমি আমার
# পর্ব:11+12
#লেখনিতে: রিদিকা আফরোজ রোজা

পাঁচ দিন কেটে যাই আভি একসিডেন্ট হওয়ার পর। আজকে আভি কে বাসাই নেওয়া হবে সব কাজ হসপিটালের কমপ্লিট করে আভি কে বাসাই নেওয়া হয়। আস্থা আগেই তাদের রুম ভালো করে জীবাণু মুক্ত করেছে সার্ভেন্ট দের দিয়ে। আভির বাবা আর আস্থার বাবা আভিকে দরে লিপ্ট এ করে নিয়ে যাই। আস্থা আভি কে ওয়াশ রোমে নিয়ে গিয়ে ফ্রেশ করাই এরপর আভির বাবা আর আস্থার বাবা আভি কে দরে বিছানাতে বসাই। আস্থা গিয়ে আভির জন্য খাবার নিয়ে আসে এরপর আভি কে নিজের হাতে খাইয়ে দিয়ে মেডিসিন দেই। আস্থা আভির পাশে এসে বসে আভি কে ইশারা করে আস্থার কাঁধে মাথা রাখতে আভি আস্থার কাঁধে মাথা রাখে আর আস্থা আভির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠে ঘুমিয়ে পরো আভি তুমি অসুস্থ । আভি বলে ভালো লাগছে না
নিচে চলো না। আস্থা বলে অসম্ভব আভি তোমার লেগে যাবে তুমি ঘুমাও আমরা বিকালে ব্যালকনিতে বসবো । আভি বলে সত্যি । আস্থা বলে তিন সত্যি আভি তুমি ঘুমাও বলেই আস্থা আভির মাথায় হাত বুলিয়ে দেই আর কিছু কোন পর আভি ঘুমিয়ে পরে । যতো কোন আভি ঘুমিয়েছে আস্থা ততো কোন আভি কে জরিয়ে রেখেছে। বিকাল পাঁচ টাই ঘুম ভাঙ্গে আভির চেয়ে দেখে আস্থার কাঁধে মাথা রেখে শুয়ে আছে। আস্থা বলে আরে আভি উঠে পরেছো ? আভি বলে তুমি কি এতো কোন দরে আমাকে এই ভাবে রেখেছো? আস্থা বলে হুম কেনো। আভি বলে তোমার একটু ও কষ্ট হয়নি আমাকে বালিশে শুয়ে দিতে। আস্থা বলে সমস্যা নেই আভি আমি ভেবেছি তোমাকে শুয়াতে গেলে যদি তোমার লেগে যাই তাই এই ভাবে বসে ছিলাম এমনিতে তো কম কিছু যাই নি তোমার উপর দিয়ে। আভি আস্থার গালে হাত রেখে বলে এতো ভালো কবে বাসলে আস্থা আমাকে ? আস্থা বলে যানি না আভি হয়তো প্রথম থেকে তবে তোমাকে না ভালোনাবেসে কেউ পারবে না আভি আমি ও পারলাম না। এই এক মাসে আমার প্রতি তোমার কেয়ার তোমার আচরন সব কিছু বাধ্য করেছে ভালোবাসতে আর সত্যি বলতে হয়তো এটা পবিএ বন্ধন এর জোর আভি যা আমার হারাম সম্পর্ক কে ভুলিয়ে দিয়েছে। আভির বুকে মাথা রেখে আস্থা বলে ।তোমার মাঝে এক অদ্ভুত শক্তি আছে আভি যা মানুষ কে তোমার প্রতি দুর্বল করে দেই সেটা হয়তো তোমার কেয়ার আর সুন্দর আচরন । সত্যি বলতে গেলে আভি তুমি অসাধারণ তুমি দেখতে যেমন ঠিক তেমন তোমার চরিএ আর আদর্শ আভি যার প্রেমে কেউ না পরে থাকতে পারবে না আমি ও পারিনি । তোমার মতো স্বামী প্রতি টা মেয়ে জীবনে আসা করে আর আমি সেটা পেয়ে গেছি । এতো দিন তোমাকে অবহেলা করার জন্য সরি আভি । আভি বলে সরি কেনো বলছো আস্থা তোমার জায়গাতে আমি থাকলে হয়তো আমি ও একি কাজ করতাম আস্থা তাই কেনো নিজেকে দোষী ভাবছো তুমি। আর যা হয়েছে তা শেষ এখন আবার নতুন করে সব শুরু হবে যার মাজে আমি কোনো অতীত ডুকতে দিবো না আস্থা । আস্থা বলে আমি ও চাই আভি কোনো অতীত যেনো আমাদের মাজে না আসে আর রিশাব ওর সাথে দেখা হলে না হয় মাফ ছেয়ে নিবো।

রাতের বেলায় আস্থা আভির সব পছন্দের খাবার রান্না করে আভির মায়ের সাহায্য নিয়ে। আভি বলে এই গুলো কে রান্না করেছে? আস্থা বলে আমি মম এর হেল্প নিয়ে। আভি বলে তুমি করতে গেলে কেনো যদি হাত পুরে যেতো তখন কি হতো। আস্থা বলে পুরেনি তো তাহলে বকছো কেনো। আভি বলে কখোন বকা দিলাম! আস্থা বলে মাএ বললে যদি হাত পুরতো এটা বকা না। আভি বলে আরে বাবা আমি তো ভালোবেসে বলেছি বকা হবে কেনো আচ্ছা যাও সরি আর বলবো না এবার তো খাইয়ে দাও। আস্থা আভিকে খাইয়ে দেই। এরপর রাতের মেডিসিন দিয়ে আভি কে নিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে ব্যালকনিতে বিছানো পমের বেডে বসে দুই জন। আস্থা আভির হাত জরিয়ে দরে কাঁধে মাথা রাখে। কিছু কোন নীরবতার পর আভি বলে আস্থা আজকের চাঁদ টা একটু বেশি সুন্দর লাগছে তাই না? আস্থা বলে ঠিক বলেছো আর সেটা কেনো বলো তো তুমি আমার পাশে আছো বলে। আভি বলে মোটেও না তোমরা এই রূপ আর চাঁদের রূপ এক হয়ে গিয়েছে তাই। আস্থা বলে কালি ফাজলামি তোমার আভি বলে আভি কে আস্তে করে কিল দেই। আভি আহহ বলে উঠে । আস্থা বেস্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করে কোথায় লেগেছে আভি বেশি লেগেছে আই এম সরি আভি আমি বুজতে পারি নি। আভি বলে আরে আমি মজা করেছিলাম তো। আস্থা রেগে বলে ইউ অসভ্য বাজে লোক থাকবো না তোমার সাথে বলে যেই চলে যাবে ওমনি আভি হাত দরে পেলে। আস্থা বলে চারো। আভি বলে রেখে চলে যাবে রাগ করে তোমার বর টার কি হবে হাঁটতে তো পারে না যাবে কি করে? আস্থা বলে আরেক বার এমন ফাজলামি করলে খবর আছে বলে দিলাম। আভি বলে সরি আর হবে না।
আস্থা আবার আভির কাঁধে মাথা রেখে বসে বিভিন্ন গল্প করতে থাকে এক সময় দুই জন ঘুমিয়ে যাই।
চলবে……

#অবশেষে তুমি আমার
# পর্ব: 12
# লেখনিতে: রিদিকা আফরোজ রোজা

সকাল বেলার আলো চোখে পরতে ঘুম ভেঙ্গে যাই আস্থার। আস্থা আভির পাশ থেকে উঠে গিয়ে ব্যালকনির পর্দা টেনে দেই যাতে আলো না লাগে আভির চোখে এরপর আভি কে ঠিক করে শুয়ে দিয়ে আভির পাশে বসে আভির মাথায় হাত বুলিয়ে কপালে একটা চুমু দিয়ে ওয়াশ রুমে ডুকে যাই। আস্থা যেতে আভি চোখ খুলে একটা তৃপ্তির হাঁসি দেই। আস্থা যখন আভি কে ঠিক করে শুয়ে দিচ্ছিলো তখনি আভির ঘুম ভেঙ্গে যাই।আস্থা ফ্রেশ হয়ে আভির জন্য কফি এনে আভি কে ঘুম থেকে তুলে কফি খাইয়ে দেই। এরপর দরে ওয়াশ রোমে নিয়ে চেন্স করিয়ে বিছানাতে বসিয়ে মাথার ব্যান্ডেজ হাতের পায়ের সব গুলো খুলে পরিষ্কার করে আবার নতুন করে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে খাইয়ে দেই এরপর মেডিসিন দেই। আভি বলে আস্থা আমার অনেক কাজ পেনডিং আছে ফাইল গুলো আর ল্যাপটপ টা এনে দাও না। আস্থা বলে মুটেও না তুমি অসুস্থ আভি তিন মাস বেড রেস্ট এ থাকবে তুমি ওকে কোনো কাজ নেই। আভি বলে কিন্তু দরকার আছে তো আস্থা প্লিজ । আস্থা বলে আমি করে দিচ্ছি তুমি শুধু বলে দাও বলেই ফাইল আর ল্যাপটপ এনে আভির পাশে বসে আভি বলে দেই আর আস্থা সব কিছু কমপ্লিট করে পেলে। কাজ শেষ হতে হতে দুপুর হয়ে যাই আস্থা উঠে আভির জন্য আর নিজের জন্য খাবার নিয়ে আসে আভি কে খাইয়ে ঔষুধ খাইয়ে ঘুম পারিয়ে দেই আস্থা আর বসে বসে আভির মাথায় হাত বুলিয়ে দেই। এই ভাবে চলতে থাকে আস্থার ।রুটিন অনুযায়ী কাজ সকাল দুপুর রাত আভি কে খাইয়ে দেওয়া ফ্রেশ করানো ওষুধ খাইয়ে দেওয়া মাঝে মাঝে আভি কে দরে হাঁটানো আভির অফিস এর কাজ নিজের পড়া শুনা সব করছে আস্থা। ডক্টর এর চিকিৎসা আর আস্থার সেবাতে আভি দুই মাসে সুস্থ হয়ে যাই আর এই দুই মাস যে কি করে কেঁটে গেছে আস্থা বুজতে পারেনি। বিয়ের তিন মাস আস্থা কখনো ভাবেনি ও আভি কে ভালোবেসে পেলবে আর এই গুলো করবে হয়তো এটাই নিয়তি আস্থার। আভি রেডি হচ্ছে অফিস এ যাবে আস্থা তখনি রুমে এসে বলে আজকে না কাল থেকে যাবে আভি । আভি বলে এটা হয় না দুই মাস দরে যাই না প্লিজ আস্থা । আস্থা বলে তাহলে আমি ও যাবো সাথে । আভি বলে তুমি গিয়ে কি করবে। আস্থা বলে কেনো গেলে সমস্যা অফিস এ গালফেন্ড আছে। আভি বলে চিৎ এসব কি বলো আমার কেরেক্টার খারাপ না বউ রেখে পরকিয়া করবো আচ্ছা তুমি চলো রেডি হও। আভি কে বসিয়ে আস্থা ফ্রেশ হয়ে রেডি হয় একটা ব্লাক জিন্স পরে টাকনু পর্যন্ত ব্লু শার্ট ইন করে পরে স্টেট চুল গুলো জুটি করা কানে বড়ো রিং পায়ে হাই হিল দেখে বলবে অফিস এর বস। আভি আস্থা কে দেখে বলে বাহ একদম বস লাগছে অফিস এর । আস্থা বলে হয়েছে ডং করো না চলো বলে দুই জন বের হয় । আভির মা বলে কিরে আভি আস্থা কোথায় যাচ্ছে? আভি বলে অফিস এ যাচ্ছে ও আমার সাথে আমাকে মুটে ও এখা চারবে না। আভির মা বলে ভালোই হয়েছে সাবধানে যাস। এরপর আভি আস্থা বেরিয়ে পরে।আস্থা বলে তুমি পাশে বসো আমি ড্রাইভ করবো। আভি বলে তুমি পারো। আস্থা বলে অনেক আগে শিখে নিয়েছি আমি চালানো। আস্থা গাড়ি ড্রাইভ করছে আভি পাশে বসা দুইজন গল্প করতে করতে গাড়ি এসে থামে অফিস এর সামনে। আস্থা আর আভি নেমে দুই জন সানগ্লাস পরে নেই। এরপর আভি আস্থার হাত দরে ভিতরে ডুকে। আভি কে দেখে সবাই সালাম দেই আস্থা কে ও কারন অফিস এর সবাই গিয়েছিলো আর আস্থা কে দেখেছে। আভি আস্থা কে নিয়ে তার চেম্বারে ডুকে যাই। আভি আর আস্থা আজকের মিটিং এর সমস্ত ফাইল দেখছে তখনি আভির এসিটেন্ড নিশাত আসে। নিশাত বলে আসবো sir ? আভি বলে ইয়েস । নিশাত আস্থা কে দেখে বলে এই মেয়ে কে sir. আভি বলে আমার বউ আর এই মেয়ে না মেম বলবে রাইট। নিশাত ইচ্ছে না থাকার সত্যে ও হে বলে। আস্থা মনে মনে বলে তাহলে এটাই সেই মেয়ে যে আভি কে পছন্দ করে দারা তোর মজা দেখাচ্ছি । আস্থা বলে ইউ কি যেনো নাম তোমার? মেয়েটি বলে নিশাত। আস্থা বলে যাই হোক আজ থেকে তুমি আর আভির পিএ হিসেবে থাকছো না। মেয়েটি বলে আপনি কে এটা বলার আর আমার অপরাধ। আভি কিছু বলতে যাবে তার আগে আস্থা
রেগে চেঁচিয়ে বলে উঠে হাউ ডেয়ার ইউ স্টুপিড গার্ল তুমি যানতে চাও আমি কে আমি আভি চৌধুরির বউ আর এই কম্পানির নতুন এমডি আভি আর এই কম্পানির এমডি না তাই আমি কি করবো কাকে আভির এসিটেন্ড রাখবো সেটা আমার ব্যাপার । আর লিসেন ভেবেছিলাম তোমাকে অন্য পদে দিবো কিন্তু না তুমি আমার সাথে বেয়াদবি করেছো আর এই আস্থা চৌধুরি উপর কথা বলার সাহস কেউ দেখাতে পারেনি তুমি দেখিয়েছো তাই তোমাকে আমি এই চাকরি থেকে বের করে দিলাম। এরপর আস্থা তিন লাখ টাকা একটা চেক সাইন করে বলে সত্য অনুযায়ী এই কম্পানিতে তিন বছর এর আগে কেউ নিজে থেকে চলে গেলে তিল লাখ টাকা দিতে হয় আর কম্পানির এমডি বের করলে তিন লাখ দিয়ে দিবে তাই আমি তিন লাখ দিয়ে দিলাম নাউ গেট আউট আমার চোখের সামনে থেকে বিদায় হও। মেয়েটি আর কিছু না বলে রেগে বেরিয়ে যাই। আস্থা বলে তুমি এসব অসভ্য ফাজিল মেয়ে কে কি করে নিজের পিএ হিসেবে রাখলে । আভি বলে ও তো আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে নি। আস্থা বলে তোমাকে পছন্দ করে তাই করে নি এটা যানার পর ও কেনো বের করো নি এতো দিন? আভি বলে কম্পানির নিয়ম ভাঙ্গতে চাই নি। আস্থা বলে এবার তো আমি ভেঙ্গে দিলাম এখন থেকে আমি নতুন নিয়ম করবো আর সেই নিয়মে সবাই চলবে। আভি বলে আপনার যা ইচ্ছা মহারানি।
চলবে…