অভিমানী প্রেয়সী পর্ব-০৭

0
225

#অভিমানী প্রেয়সী
#মিশকাতুল
#পর্ব:৭

ঝিলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে তার বাবা। এত দিন পর কেন ঝিলের সামনে সে এসেছে তা বুঝতে পারছেনা ঝিল।

রায়হান: আম্মু কেমন আছো?

ঝিল: কেন এসেছেন আপনি?

রায়হান: মেয়ের কাছে কি বাবার আসা নিষেধ?

ঝিল: নিষেধ ছিল না। কিন্তু আপনি এমন বাবা যে তার মেয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।আপনার মতো বাবার আমার দরকার নেই।

রায়হান: ঝিল মা আমার কথা শুন।

ঝিল চলে যাচ্ছে পেছন পেছন তার বাবাও আসেছে ঝিল দ্রুত পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু বয়সের পাল্লায় এত দ্রুত চলা সম্ভব হচ্ছেনা রায়হানের তাই পা চালিয়ে দ্রুত এগিয়ে যেতেই মুখ থুবরে গাড়ির ধাক্কায় নিচে পরে গেল।কানে অদ্ভুদ শব্দ যেতেই পিছন ফিরে তাকিয়েছে ঝিল। সারা রাস্তা ময় তার বাবার রক্তে লাল হয়ে আছে।আশে পাশের লোকজন ভীর জমাচ্ছে তার বাবার দেহের পাশে৷ মেয়ে কি তার বাবার রক্তের সম্পর্ক শেষ করতে পারে? না হয় অভিমান করতে পারে খনিকের সময়ের জন্য। বাবার দেহের রক্ত দেখে থমকে দাঁড়িয়ে আছে ঝিল কেন সে এত দ্রুত চলতে গেলো? আর এখন বাবার কাছে কেন দ্রুত আসতে পারছে না।

ঝিল এগিয়ে আসতেই দেখে তার বাবা মুখ লাল হয়ে আছে দেহের সাদা শার্ট লালে লাল হয়ে আছে মাথার এক সাইড কেটে গেছে খুব বাজে ভাবে ট্রাক ধাক্কা দিয়ে চলে গেছে।পায়ের নিচের অংশ কেমন নিথর হয়ে পরে রইয়েছে।

ঝিল তার বাবার পাশে বসেছে।বাবা কি মারা গেছে? নাকি বেচে আছে? বুঝতে পারছে না ঝিল। পাশ থেকে নেহা আর নিশি এগিয়ে আসছে। মুলত ঝিলকে নিতেই দুই বোন এসেছে এক সাথেই এভাবে এত কিছু হবে কে ভেবেছিলো। নিশির সাথে নিশির হবু বর মুহিত এসেছে। ঝিলের বাবাকে মুহিত তুলে নিয়ে গাড়িতে উঠিয়েছে।


।হাসপাতালের সামনে বসে আছে ঝিল, নিশি, নেহা মুহিত আর আবির।দ্বিপালিও এসেছিল আবার চলে গেছে।

অবস্থা ভালো নেই রায়হানের ঝিলের সাথে দেখা করতে চাইছে রায়হান। ঝিল এগিয়ে যাচ্ছে।

ঝিল মা আমার পাশে বস। রায়হানের দিকে তাকিয়ে ঝি বাবার পাশে বসেছে।

ঝিল: আব্বু……..

রায়হান: আমায় ক্ষমা করে দিস মা।আমি তোর মা মারা যাওয়ার পর থেকে তোর খেয়াল রাখতে পারিনি।বিশ্বাস কর আমি অনেক বার তোকে নিতে চেয়েছি কিন্তু জানি নি তুই কোথায় আছিস যখন জেনেছি তখন আমি এসেছিলাম কিন্তু তন্ময়ের মা আমায় বলে নি তুই কোথায়। আজ তোর স্কুলে গেছিলাম স্যার ম্যাম বললেন তুই নেহাদের সাথে আছিস। আমি তোর মুখটা একবার দেখতে চেয়েছিলাম। তুই জানিস? সেদিনের পরই আমি হেলেনাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছিলাম। আমি বউ চাইনি আমি চেয়েছিলাম ঝিলের যেনো একটা মা আসে।কিন্তু বুঝতে পারিনি। নিজের মায়ের মতো কেউ হতেই পারে না।

ঝিল:আব্বু।

রায়হান: আমার সময় শেষ মা রে…..আমার রুমে দেখবি সকল কাগজ রাখা আছে তুই অনাথ নয়।তুই রায়হান চৌধুরীর মেয়ে।তুই রাস্তার মেয়ে নস। তুই চৌধুরীর মেয়ে। তুই তন্ময়ের মায়ের থেকে অনেক অপমান পেয়েছিস।যে মেয়েকে আমি রাজকন্যা করে রেখেছিলাম সেই মেয়ে আমার অন্যর বাসায় কাজের মেয়ের মতো হয়ে থেকেছিস।যে মেয়ের পিছনে আমি সারা বেলা খাবার নিয়ে ছুটতাম সেই মেয়ের এক বেলাও খাবার হয় নি।তুই আমায় ক্ষমা করে দে আমি এমন এক অধম বাবা আমি থাকতেই আমার মেয়ের এমন দুর্দশা হয়ে গেছে।আমি আর বাচঁবনা তুই আমায় ক্ষমা করে দিস।

ঝিল: না বাবা আমি তোমার কিচ্ছু হতে দিবোন…………..

বাবায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া






ঝিল নিজের রুমে বসে আছে তার বাবার সেদিন খুব খারাপ অবস্থা হয়েছিলো। ঝিল ভেবেছিলো তার বাবা আর বাঁঁচবেনা। কিন্তু তারপরই জ্ঞান ফিরে এসেছিলো। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনের ফলে জ্ঞান হারিয়ে দুর্বল হয়ে পরেছিল।

উন্নত চিকিৎসার জন্য তার বাবাকে কানাডায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে আর ঝিল নিহাদের বাসায় আছে।আর তিন দিন পর নিশির বিয়ে। কাল মেহেদী লাগানো হবে নিশিকে।

বিকাল হয়ে এসেছে।ক্রলিং বেল বেজেই চলেছে।

দ্বিপালি: ঝিল মা দরজা খুলে দেখ তো কে এসেছে?

ঝিল: ওকে।

ঝিল দরজা খুলে দিয়েছে।

সামনে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে তাকে খুব চেনা চেনা লাগছে কিন্তু এ কে? ধরতে পারছে না ঝিল।

ঝিল: কাকে চাই??

ছেলেটা : ভেতরে যাই আগে…….

ঝিল: মুহিত ভাইয়ার বাসা থেকে আসছেন??

ছেলেটা : আপনিকি আমাকে আগে ভেতরে যেতে দিবেন??

নেহা: ঝিল কে এসেছে??

ঝিল: চিনতে পারছিনা আমি।

নেহা: ভেতরে আসতে দে।

নেহা: আরে তন্ময় ভাইয়া তুমি??
এসো এসো দ্বিপ ভাইয়া কই?

তন্ময় এক পলক ঝিল কে দেখে নিয়ে নেহার সাথে এগিয়ে গিয়ে উত্তর দিলো, নিশির জন্য ফুল নিয়ে আসছে।

ঝিল ভাবছে, এই তন্ময় ভাইয়া?? এ জন্যই বুঝি কথা বলার সময় আমার বুকের বাম পাশে ধক ধক করছিলো? সকলেই ভিডিও কলে কথা বললেও ঝিল কখনো তাকায়নি বা তন্ময়ের সাথে কথা বলে নি।ভয় হয়েছে খুব তন্ময়ের সাথে কথা বলার সাহস হয়ে ওঠেনি আর। তন্ময়ের পাশাপাশি থাকাতেই তার ভুল হয়ে গিয়েছিলো। এই জন্যই শাস্তি পেয়েছে এত গুলি দিন।আজ আবার সেই তন্ময় এসেছে। খুব করে মন চাইছে তন্ময়ের কাছে গিয়ে বলতে ভাইয়া তুই এত দেরি করে কেন আসলি?? আগে কেন এলিনা? তুই কি আমায় মিস্ করিস নি??
তুই কি জানিস আজও প্রতি রাত আমার তোর কথা ভেবেই কেটে যায়।শুধু তুই থাকিস আমার সপ্নে। আমার অন্তরে।অথচ দেখ আজ তুই সামনে থাকলেও তোর সাথে কথা বলার অধিকার নেই আমার। কি এমন ভুল ছিলো যে বোন হয়ে ভাইয়ের সাথে কথা বলা যাবেনা?? আমি কি এমন ভুল করেছি বল?? তোর মায়ের ভুল ধারনা মতে আমি তোকে ফাসিয়ে বিয়ে করে নিব কিন্তু তুই তো জানতি আমার চিন্তা ভাবনা এত নিচু ছিল না।তুই সেদিন বলিস নি কেন যে………..
ভাবনার মাঝেই দরজার সামনে আরেকজন এসে গেছে।

এবার আর চিনতে ভুল হয়নি ঝিলের এক ঝাপে দ্বিপ এর বুকে গেছে।

ঝিল: ভাইয়া কেমন আছিস? তুই তো পুরো ঝাক্কাস হয়ে দেশে ফিরলি।

দ্বিপ :আচ্ছা? আর তুই বুঝি বড় হসনি?

ঝিল: হয়েছি তবে তোর সমান তো আর না।তা তুই দেরি করে ফিরলি কেন??

দ্বিপ : আরে বোকা তোদের সবার জন্য মেহেদী আর ফুল আনতে গেছিলাম আগেই কিনলে ফুলের পাপড়ি নষ্ট হয়ে যেতো তাই এখন নিয়ে আসলাম তা বাকি সবাই কোথায়?

ঝিল: ভিতরে।

দ্বিপ নিশির রুমে চলে গেছে। ঝিল ও যাচ্ছিলো সাথেই কিন্তু তখনই তন্ময়ের মা এ বাসায় চলে আসে একে তার ছেলে এসেছে আর দ্বিতীয়ত নিশির বিয়ে।
ঝিলকে যেতে দেখেই ঝিলের হাত ধরে অন্য দিকে নিয়ে গেছে আমেনা বেগম।

আমেনা: একবারো যেন আমার ছেলের আশে পাশে তোকে না দেখি।

ঝিল: কিন্তু……

আমেনা: কোন কিন্তু নয় দূরে থাকবি আমার ছেলের থেকে।

ঝিল এবারেও কিছু বুঝেনি কেন এমন করছে তন্ময়ের মা??

তন্ময় এবার ঝিলের জন্য দরজার দিকে তাকিয়ে আছে সবাই একে একে নিশির রুমে এসেছে অথচ ঝিল একবারও আসেনি।এত বছরেও সহজ হয়নি ঝিল কে নিয়ে তা বেশ বুঝতে পারছে।কিন্তু প্রেমিকের মুখটাকি একটু দেখে হয়? এত বছর পর চোখের সামনে ঝিল কে দেখে মনে এক অন্যরকম প্রশান্তি লাগছে।কিন্তু ঝিল একবারও বলেনি তন্ময় ভাই তুই কেমন আছিস??

……………..

নিশিকে মেহেদী লাগিয়ে দিবে ঝিল। নেহা সেরকম ভালো করে লাগাতে পারে না।তাই নেহাও ঝিলের থেকেই লাগিয়ে নিবে প্রথমে নিশিকে লাগিয়ে দিবে ঝিল।
নিশির নানুর বাসা থেকেও অনেকেই এসেছে।সেই সাথে নিশির এক মামার মেয়ে মালিহা। তার সাথে ঝিলের খুব মিল রয়েছে।এসেছে থেকেই ঝিলের সাথেই থাকছে।নেহার ও ক্লাসের তিনজন মেয়ে এসেছে।সব মিলিয়ে বাসা প্রায় থই থই অবস্থা।

বক্সে গান চলছে । সেই সাথে অনেকেই নাচঁছে। মালিহা এসে ঝিলের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

মালিহা: ঝিল তোমার কি হয়েছে? যলদি চলে এসো।

ঝিল: আসছি।

দরজা খুলে ঝিল বাইরে এসেছে গায়ে পিংক কালারের একটা লেহেঙ্গা। সেই সাথে চুল গুলি দুই দিক দিয়ে ফেলে রেখেছে হাল্কা লিপস্টিক পিংক কালারের। এই জামাটা দ্বিপ দিয়েছে। মুলত তন্ময় কিনে দ্বিপ এর কাছে দিয়েছে। ঝিল একবারও তন্ময়ের সামনেই আসেনি। তাহলে তার হাতের জামা কি ঝিল নিবে??

সিড়ি বেয়ে নিচে এসেছে ঝিল আর মালিহা। বাগানের এক পাশে সকলে মিলে সাজিয়েছে বেশ করে সেখানেই মেহেদী লাগানো হবে।এগিয়ে যেতে যেতেই মালিহা একটা ছেলের সাথে কথা বলতে বলতে অন্য দিকে চলে গেছে। তখনই সামনে তন্ময় এসে দাড়িঁয়েছে।

তন্ময়: তুই কি আমাকে এখনো চিনতে পারিস নাই?

ঝিল: চিনেছি।

তন্ময়: তাহলে কথা বলতে আসিস নি কেন?

ঝিল: বাড়ন আছে।

তন্ময়: তাতে কি? আমি তোর তন্ময় না? তুই আমার সাথে কথা বলবি তাতে কারো বাড়ন থাকলেও কি না থাকলেও কি?? তুই কি এখনো আশ্রিতা?? যে সকলের কথা মেনে চলবি?

ঝিল: আমি বড়দের সন্মান করতে চাই।

তন্ময়: সে ভালো কথা। কিন্তু আমাকে এড়িয়ে চলবি কেন??

ঝিল: কারন আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাই না।

তন্ময়: আপনি??

ঝিল: সবাইকে তুই/তুমি করে বলা যায় না। সড়ে দাড়ান। আমাদের এক সাথে না চলাই ভালো।

তন্ময়: ঝিল বক বক করিস না।আমি কত দিন ধরে তোকে দেখিনি তার হিসাব রেখেছিস? আমাকে দেখতে দে………..

ঝিল: আপনি কেন আমাকে দেখবেন??

তন্ময়: সে তুই বুঝবিনা চল আমার সাথে।

ঝিল: আমি আপনার সাথে যাব না।

তন্ময়: তুই যাবি মানে যাবি চল।

অগত্যা ঝিল তন্ময়ের সাথে আসতে চাইনি বলে ঝিলের হাত ধরে নিয়ে এসেছে টেনে তন্ময়।

আমেনা বেগম দেখেও এখন কিছুই বলতে পারছে না কারিন তার ছেলে গত দুই বছর ধরে তার সারহে কথা বলছে না। আর না দেশে ফিরে একবারও তার মায়ের সাথে দেখা করেছে। যার ফলে ঝিল কে আরও সহ্য করতে পারছে না আমেনা।

মুখ ফিরিয়ে নিশির পাশে গিয়ে বসেছে আমেনা।

নিশি: বড়মা তোমাকে কিছু বলার ছিলো।

আমেনা: হ্যাঁ বল মা।

নিশি: তুমি কেন ঝিল কে পছন্দ করোনা?

আমেনা: দেখ মা নিশি আমি তন্ময়ের জন্য ওহিকে বউ বানাতে চাই।আর এই ঝিল সব সময় সেই ছোটবেলা থেকেই আমার তন্ময়ের পেছন পরে আছে।

নিশি: আচ্ছা। তন্ময় যদি কখনো ঝিল কে পছন্দ করে?
বিয়ে করতে চায় তাহলে তুমি কি করবে?

আমেনা: মেনে নিব না।

নিশি: তুমি তো জানো তন্ময় খুব রাগী আর জেদি। ও ঝিলকে ভালোবাসে বড়মা। কিন্তু ঝিল সেই ভালোবাসার আগা মাথা কিছুই বুঝতে পারেনা।তুমি শুধুই ঝিলকে দেখতে পারোন। আর ঝিল খুব ভালো একটা মেয়ে তুমি সে নিজেও জানো। ওর মা নেই বড়মা এমন একটা মেয়েকে আর কষ্ট দিও না।ঝিলের সব চাওয়া পাওয়া ঘিরে ছিলো শুধু এক তন্ময়।তুমি সেই তন্ময়কেও পাশে থাকতে দাওনি বড়মা। তুমি প্লিজ ঝিল কে মেয়ের সুখ দিও এই চাওয়া তোমার কাছে।

আমেনা: আমি ভেবে দেখবো।

কিছুক্ষন পর তন্ময়ের বাবাও এসেছে সকলে মিলে মেহেদী লাগিয়ে নিচ্ছে যার যার হাতে মাত্রই নিশির হাতে লাগিয়ে দিয়ে উঠে যাচ্ছে ঝিল। রান্নাঘরের সামনে দিয়ে যেতেই চোখ যেনো কপালে উঠে গেছে ঝিলের কাপড়ে আগুন লেগে গেছে আমেনার। চা করতে এসেছিলেন তিনি। অসাবধানের কারনে কাপড়ের আচঁলে আগুন লেগে গেছে।তা ক্রমেই বেড়ে উঠে পুরো উপরের দিকে চলে যাচ্ছে।আমেনা কিছুতেই আগুন কমাতে পারছেনা। ঝিল যথাদ্রুত পায়ে এগিয়ে গেছে গায়ের ওড়না ভিজিয়ে নিয়েছে বালতির পানিতে অত:পর সেই ওড়না নিয়ে আমেনার চারদিকে ঘিরিয়ে দিয়েছে ঝিলের চেচামেচি শুনে বাগান থেকে সবাই ভিতরে এসেছে৷ আমেনার গায়ের আগুন নেভাতে গিয়ে ঝিলের কাপড়ও আগুনে ধরেছে তারাহুরো করতে গিয়ে আমেনার করা গরম পানিতে হাত চলে গেছে ঝিলের। হাত জ্বলে যাচ্ছে ঝিলের। সবাই মিলে এগিয়ে এসে পরিস্থিতি সামলে নিয়েছে।

ঝিল নেহার রুমে শুয়ে আছে হাতের পোড়া স্থানে মলম লাগিয়ে দিচ্ছে তন্ময়।তার মায়েরও শরীররের বিভিন্ন জায়গায় ঝলসে গেছে। মাত্রই মায়ের কাছ থেকে ঘুরে এসেছে।

রাতের খাবার আর খায় নি আমেনা।নেহা ঝিল কে খাইয়ে দিয়ে গেছে।
তখনই ধির পায়ে আমেনা নেহার রুমে আসে।

আমেনা: ঝিইইল।(আস্তে করে ডাকে)

ঝিল: বলুন,

আমেনা: কেমন আছিস এখন??

ঝিল: ভালো । আপনি?? আপনার কোথাও লাগেনিতো?

আমেনা: লেগেছে। তবে আমার দেহে নয় আমার অন্তরে।অন্তরে লেগেছে রে মা।আজ তুই যা দেখিয়েছিস। তাতে আমার কি বলা উচিৎ তা ভেবে পাচ্ছিনা।আমার ছেলে আমাকে বলেছিলো আমি নাকি না বুঝেই তোকে ভুল বুঝেছি কিন্তু তা বিশ্বাস করতে পারিনি।
আমায় ক্ষমা করে দিস মা।আমি না বুঝেই তোকে নিয়ে নানা রকম চিন্তা ভাবনা করে গেছি।না জেনেই তোকে অনেক কষ্ট দিয়েছি।আজকের পর থেকে তন্ময় যেমন আমার ছেলে তুইও তেমনি আমার মেয়ে।আমার মেয়ে হয়ে থাকবি না? তুই?? আমার সাথে!

ঝিল: মামী!!

আমেনা: না…..আজকের পর থেকে আমাকে তুই আম্মু বলে ডাকবি।

ঝিল: আমি………..

আমেনা: হ্যাঁ।

নেহা: যাক অবশেষে ঝিল তুই একটা মা পেলি!! বড়মা তন্ময় ভাইয়া তোমার জন্য একটা শাড়ি দিয়েছে। তোমার শাড়ি এটা তো আগুনে পুড়ে গেছে তুমি এখন ভাইয়ার দেওয়া শাড়িটা পরে নাও।

আমেনা: তন্ময় এনেছে? আমার জন্য?

নেহা: হ্যা। মা ছেলের মাঝে কোন বাধা না থাকাই ভালো।

নিশি: হ্যাঁ। তন্ময় ঝিল কে দেখতে এসেছিলো তোমার আর ঝিলের কথা শুনে মাত্রই চলে গেছে।এখন আল্লাহ তায়ালা তোমাদের সম্পর্ক ঠিক করে দিক।
আর ঝিল তুই ও কেমন হয়েছিস বল তো আমদের ডাকবিনা তখন??

ঝিল: খেয়াল আসেনি।

আমেনা : আচ্ছা আমি এখন আসছি তোরা থাক।

ঝিল আমেনার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।এই মহীলাকে তিনি এমন ভাবে এমন রূপে দেখেনি আজ দেখে যেনো সব ভুলে গেছে। মনে হচ্ছে এই তো সব পেয়ে গেছে ঝিল।

তন্ময়: আমি কি এখন ভেতরে আসবো??

নিশি: হ্যাঁরে আয়।

তন্ময়:কেউ কি আমার সাথে আজকের পর থেকে মন খুলে কথা বলবে??

নেহা: আমি নেহাৎ বাচ্চা মেয়ে আমি কিছু জানিনা।

দ্বিপ : তুই আর বাচ্চা??

নেহা: তো?

দ্বিপ : বিয়ে দিলে তিন বাচ্চার মা হয়ে যাবি।

নেহা: নিশি আপু তুই কি একে কিছু বলবি??

নিশি: কি আর বলবো??

এক রেশ হাসাহাসি হয়ে গেলো।

সকাল বেলাই………….

চলবে…….