#অভিমানী প্রেয়সী
#মিশকাতুল
পর্ব:৯
ঝিল এমন কেন করছে? সব কি ভুলে গেছে?
ডক্টর : আসলে তন্ময় হয়েছে কি!! এর আগে যখন ঝিলের অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো তখন থেকে ওর একটু প্রবলেম ছিল। আমিই এর আগে ঝিলের চিকিৎসা করেছি তাই জানি।আসলে ঝিল যখন সিরি থেকে পরে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছিল তখন ও ওর মাথায় আঘাত লেগেছিলো। আর আজ আবার সেখানেই আঘাত পেয়েছে তাই ঝিলের মাঝখানের সাত বছরের কথা মনে নেই তবে ধিরে ধিরে মনে পরে যাবে।এই ধরো পাঁচ -ছয় মাস লাগতে পারে।তার পর আবার নিজ অবস্থানে ফেরত আসবে।
তন্ময়: কিন্তু তখন তো আপনি বলেছিলেন ঝিল সম্পুর্ন সুস্থ।
ডক্টর :হ্যাঁ সুস্থই ছিল।কিন্তু আজ বুঝলাম যে ওর পুরো সুস্থতা ছিল না।আসলে আজকে আবার আঘাত পেয়েছে তাই এমন মেমোরি লস দেখাচ্ছে তবে আমি সিউর ও আবার মেমোরি ফিরে পাবে।
তন্ময়: তাহলে এখন কি করা যায়?
ডক্টর : আগে যেমন ছিলো তেমন করেই রাখতে হবে।
তন্ময়: আচ্ছা এখন কি ওকে বাসায় নিয়ে যাব?
ডক্টর : আসলে মাথায় ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি তাই মানে প্রচুর রক্তপাত হয়েছে তাই এখন না নিয়ে গেলেই ভালো হতো।
তন্ময়: আসলে আজকে আমার এক বোনের গায়ে হলুদ। আর সবাই এখানেই এসেছে। ওকে নিয়ে গেলে তবুও সকালে অনুষ্ঠান টা করা যাবে।
ডক্টর : তুমিও একজন ডক্টর হবে তাই আমি কিছু বলবো না। যখন তুমি নিয়ে যেতে চাইছো নিয়ে যাও।
তন্ময় সবাইকে বলে ঝিল কে নিয়ে বাসায় ফিরেছে।আজ আর নিশির গায়ে হলুদ হয়নি।কাল সকালে করবে বলে ভেবে নিয়েছে সবাই।
ঝিল: কিরে নেহা বাসা এমন করে সাজিয়েছে কেন?
নেহা: ঝিল কাল নিশি আপুর গায়ে হলুদ সকালে আর বিকালেই বিয়ে।
ঝিল: কিহ? আর আমাকে বলা হয়নি?
তন্ময়: বলেছিলাম।
ঝিল: তাহলে আমার মনে নেই কেন?
তন্ময়: আসলে তুই মাথায় আঘাত পেয়েছিলি তাই হয়তো ভুলে গেছিস।আচ্ছা এখন কেমন লাগছে?
ঝিল: হ্যাঁ ভালো।
তন্ময়: চল সবাই নিচে যা।খাবার খেতে ডাকছে।
ঝিল: তন্ময় ভাইয়া তুই প্লিজ আমার খাবারটা রুমে এনে খাইয়ে দে আমি এখন নিচে যাব না।
তন্ময়: আচ্ছা আমি আনছি তুই বস্।
তন্ময় খাবার নিয়ে এসে ঝিল কে খাইয়ে দিয়েছে। ঝিল খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে গেছে। তন্ময় ও খাবার খেয়ে দ্বিপ এর সাথে বাইরে বেরিয়ে গেছে উদ্দেশ্য সেই সপিংমল তন্ময় দেখতে চায় কোন গাড়ি দিয়ে ঝিল কে ধাক্কা দিয়েছিল।।
।
।
।
সকাল হয়ে গেছে ঝিল কে আমেনা বেগমই ঘুম থেকে জাগালেন।
ঝিল এই মহিলাকে ভিষন ভাবে ভয় পায় তাই ভয়ে ভয়েই জিজ্ঞেস করলেন,বলো মামি?
আমেনা: আমার জন্য কি কাল শাড়ি কিনেছিলি?
ঝিল: কিসের শাড়ি?
তন্ময়: আহ্ মা।ওকে কেন জিজ্ঞেস করছো? নেহাকে বলো ও দিয়ে দিবে।
ছেলের মুখ থেকে মা ডাক শুনতে কার না ভালো লাগে? এত দিন পর মা শুনতে পেয়ে আমেনার চোখ থেকে পানি পরতে লাগলো। নেহা এসে আমেনার কাপড় দিয়ে গেছে ঝিল কেও ওয়াশরুম পাঠিয়েছে। ঝিল ফ্রেশ হয়ে এসে। নেহার সাথে নিচে গেছে।খাবার খেয়ে নেহার রুমে গিয়ে দেখে বিছানার উপরে হলুদ কাপড় রাখা আছে দুইটা।
ঝিল: নেহা এসব কার জন্য?
নেহা: তোর আর আমার। নে পরএ ফেল একটা। সেম ডিজাইন দুইটা।
ঝিল: আমি কি পরতে পারি?
নেহা: তুই কি কখনো শাড়ি পরেছিস যা পারবি? তুই দাড়া আমি পরিয়ে দিচ্ছি।
ঝিইইললল,
ঝিলের বাবার আওয়াজ শুনে ঝিল নিচে গেছে।
ঝিল: আব্বু!! এতক্ষনে আসলে তুমি?
রায়হান: হ্যাঁরে মামনি। আমার আসতে একটু দেরিই হয়ে গেছে।
ঝিল: আম্মু কই?
রায়হান: আসলে তোমার মায়ের……..
ঝিল তুই আগে যা রেডি হয়ে আয় তোকে পরে সব বলবো।
ঝিল: হুম। চল নেহা
রায়হান কে সব তন্ময় আগেই বুঝিয়ে বলেছে সব।আর একবার সব ভালো করে বুঝিয়ে দিলেন।
ঝিল কাপড় পরে নিজে নিজেই মেকআপ করছে।হালকা মেকাপে অপরুপ লাগছে ঝিল কে।হলুদের কম্বিনেশন এ সব সাজানো হয়েছে।
ঝিল নিজেকে আরেক বার আয়নায় দেখে নিল।
নেহা তুই থাক আমি তন্ময় ভাই কে দেখে নিয়ে আসি।
নেহা: আচ্ছা যা।তারাতাড়ি আসবি আবার।
ঝিল: হুম।
ঝিল দ্বিপ এর রুমে গেছে।যেহেতু ঝিলের অবস্থা ভালো নয় তাই তন্ময়দের বাসায় আবার সব শুরু থেকে সাজানো হয়েছে।
দ্বিপ : ঝিল? আয় ভেতরে আয়।
ঝিল: দেখ তো আমাকে কেমন লাগছে??
দ্বিপ : উম্ম ভালোই লাগছে।
ঝিল: শুধু ভালো??
দ্বিপ : নারে আমার বোনকে সব সময় সুন্দর লাগে দেখতে। তার
পর বল আমায় কেমন লাগছে হলুদ পাঞ্জাবিতে?
ঝিল: তোকে? একদম হিরোর মতো দেখতে লাগছে।
আচ্ছা থাক আমি তন্ময়ের রুমে গেলাম।
।
।
কিরে ভেব্লাই দেখ তো আমাকে কেমন লাগছে?
ঝিলের মুখে ভেব্লাই নাম শুনেই তন্ময়ের মাথা গরম হয়ে গেছে । এই নামে ঝিল তাকে অল্প বয়সে বলে ক্ষেপিয়েছে আজ অনেক দিন পর আবার বলে ফেলেছে।
তন্ময়: এটা কি সাজ সেজেছিস তুই? (চিল্লিয়)
ঝিল নিজেকে আবার দেখে নিলো,
কেন? কেমন লাগছে?
তন্ময়: চুল খুলে রেখেছিস কেন?
ঝিল: বাহ রে খুলে দিব না? তুই জানিস খোলা চুল ছেলেদের কত পছন্দ?
তন্ময়: কোন ছেলের??
ঝিল: উফফ সব ছেলের।
তন্ময়: সব ছেলেকে দিয়ে তোর কি? তারাতাড়ি চুল বাধ।
ঝিল: না।
তন্ময়: আবার না? বেধে ফেলবি নাকি আমার হাতের চড় খাবি?
ঝিল: বাধবো না।
তন্ময় গিয়ে সোজা ঝিলের চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে ফেলেছে।
ঝিল তন্ময়ের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু পারছে না।
তন্ময়: বল বাধবি?
ঝিলের চোখ থেকে পানি বেরিয়ে আসছে।তন্ময় খুব জোরেই চেপে ধরে রেখেছে।তাই বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নাড়িয়ে বলে ফেললো,যার মানে সে বাধঁবে।
তন্ময়: এই বার পথে এসেছিস।
চলবে……..