এক টুকরো নূর পর্ব-০৪

0
107

#এক_টুকরো_নূর
———————-(৪র্থ পর্ব)
লেখা: উম্মে হানি মিম

সাদমান পায়ে ব্যথা পেয়েছে তাই বাসায় বিশ্রাম করছিল আজ।হঠাৎ মনে পড়লো একটা ড্রেস মিসেস পলির নিয়ে আসার কথা ছিল যেটা পরবর্তী শুটিংয়ে পড়বে।সে ব্যস্ত থাকায় পলি এনে রেখেছেন। ড্রেসটা আনা হয়নি।এখন নিয়ে আসা যায়।কিন্তু পলি বলেছেন আজকে বাসায় কেউ থাকবে না।সাদমানের কাছে একটা এক্সট্রা চাবি আছে। সেটা নিয়েই চললো পরশিদের ফ্ল্যাটে।চাবিটা দিয়ে দরজা খুলতেই সাদমান বিস্ময়ে তার মুখ হা হয়ে গেল।করিডোরে নূরার সাথে ধস্তাধস্তি করছে জাহিদ।নূরার মুখ খোলা ওড়নাটা মাথায় রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।সাদমান নূরাকে আগে দেখেনি তাই চিনতে না পারলেও পরিস্থিতি বুঝতে পারলো।
চেঁচিয়ে উঠলো, “কি হচ্ছে এখানে”
সাথে সাথে জাহিদ নূরাকে ছেড়ে দিলো।স্বাভাবিক হয়ে বললো,আরে সাদমান না তুমি?কিছুই হচ্ছে না এখানে, আমরা হবু স্বামী-স্ত্রী একটু একান্তে সময় কাটাচ্ছিলাম।তুমি হঠাৎ নক না করে ঢুকলে কেন?”
সাদমান তার খালা পলির থেকে শুনেছে নূরার বিয়ের ব্যপারটা।তবুও তার সন্দেহ গেল না।কারণ নূরার সাথে জাহিদকে কিছু নিয়ে জোরাজোরি করতে দেখেছে সে।ততক্ষণে নূরা মুখটা ঢেকে কয়েক হাত সরে গেছে জাহিদের থেকে।সে চলে যাচ্ছে বুঝতে পেরে জাহিদ নূরার হাতটা চেপে ধরলো আর মুখে কৃত্রিম হাসি ফুটিয়ে রাখলো।
সাদমান কিছু একটা ভেবে বললো,”আমি একটা জিনিস নিতে এসে ছিলাম, সরি আপনাদের ডিস্টার্ব করলাম।জিনিসটা নিয়ে চলে যাচ্ছি আমি।” সাদমান পলির ঘর থেকে জিনিসটা নিয়ে চলে যাচ্ছিল নূরা তখনই চিৎকার করে উঠলো,”দয়া করে বাঁচান আমাকে।উনি আমার সাথে বাজে আচরণ করছেন।”
সাদমান ঘুরে তাকালো।নূরা কাঁদছে।জাহিদ ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে বললো,আরে কি বলছো নূরা? আমাদের কাল বাদে বিয়ে আমি আবার কি বাজে আচরণ করবো তোমার সাথে?”
সাদমান এগিয়ে এসে বললো,কিন্তু আমিও তো ওনার সাথে আপনাকে কিছু নিয়ে জোরাজোরি করতে দেখেছি।”
জাহিদ এবার কঠোরভাবে বললো ,”আমাদের ব্যক্তিগত ব্যপারে নাক গলাবে না সাদমান।যাও এখন।”
সাদমান জাহিদের কথায় পাত্তা না দিয়ে নূরার দিকে তাকিয়ে বললো,”কি হয়েছে এখানে?”
নূরা কিছুই বলতে পারছে না শুধু কাঁদছে তবুও কোনোরকমে বললো,”আমাকে ওনার থেকে রক্ষা করুন।উনি খুব খারাপ।দয়া করে আমাকে বাঁচান।”
জাহিদ আবার কথা ঘোরানোর চেষ্টা করছিল সাদমান জাহিদের কলার টেনে ধরলো,”কি করছিলেন মেয়েটার সাথে?”
জাহিদ রাগতস্বরে বললো,”ভালো হচ্ছে না সাদমান।আমার কলার ছাড়ো।বলেছি তো এটা আমাদের ব্যক্তিগত বিষয়। ভালোয় ভালোয় চলে যাও বলছি।আমার হবু বউয়ের সাথে আমি যা খুশি করি তোমার তাতে কি? ”
সাদমান আবার নূরার দিকে তাকালো,”সত্যি বলছে এই লোকটা?এটা কি আপনাদের ব্যক্তিগত ব্যপার?”
নূরা মাথা নাড়িয়ে বললো,” না সব মিথ্যা। ওনার সাথে আমার কোনো ব্যক্তিগত আলাপ নেই।”
নূরা কথা শেষ করার আগেই সাদমান তাকে মা’রা শুরু করলো।মা’রতে মা’রতে ফ্ল্যাটের বাইরে বের করলো।দুজনেই ধস্তা’ধস্তি করছে, অন্য ফ্ল্যাটের লোকজন জড়ো হয়ে গেল।জাহিদ সাদমানের সাথে পেরে না উঠে এক পর্যায়ে বলতে লাগলো,”সাদমান তুমি আমার হবু বউয়ের সাথে এটা করতে পারো না।আমি সব জেনে গেছি দেখে আমাকে মারছো।”
সাদমান বুঝে উঠতে পারলো না কি বলছে এসব জাহিদ।সে মা’রতে মা’রতেই বিল্ডিং এর বাইরে বের করে দিলো তাকে।
তারপর ফিরে আসলো পরশিদের ফ্ল্যাটে।নূরা মেঝেতে বসে কাঁদছে।ওকে স্বাভাবিক লাগছে না।কাঁপছে ভয়ে।সাদমানকে দেখতে পেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে কয়েক হাত দূরে সরে গেল।সাদমান নরম গলায় বললো,”ভয় পাবেন না আমি ওকে মে’রে বাইরে বের করে দিয়েছি।আর আসার সাহস করবে না।আমি খালামনিকে কল দিচ্ছি চলে আসবে সে।ততক্ষণ আমি এখানে আছি।”
নূরা মাথা নাড়িয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।

বেশ কিছুক্ষন পর বাইরে কিছুর হট্টগোল শুনে নূরা দরজা খুলে ঘর থেকে বের হলো।বসার ঘরের দিক থেকে লোকজনের হট্টগোল শুনা যাচ্ছে।নূরা আস্তে আস্তে সেদিকে গেল।
বসারঘর ভর্তি মানুষ।আলেয়া নূরাকে দেখতে পেয়ে বললেন,ভিতরে যা তুই।নূরা বিচলিত হয়ে মাকে বললো, “আম্মা কি হয়েছে জানো?”
আলেয়া মেয়েকে কিছু বলতে না দিয়ে ভিতরে নিয়ে গেলেন।পরশিও আলেয়াদের সাথে গেল। ঘরের ভিতরে ঢুকলে পরশি বললো এসব কি শুনছি নূরা?
নূরা কাঁপা গলায় বললো,”যা হয়েছে আমি তো এখনও বললামই না তোমরা শুনলে কীভাবে?”
“শুনলাম কীভাবে মানে?মিডিয়ার প্রচার হচ্ছে প্রত্যেকটা নিউজ চ্যানেলে।
নূরা বিস্মিত হয়ে বললো,”নিউজ চ্যানেলে কি প্রচার হচ্ছে?”
“তুমি যেটা ঘটিয়েছো সেটা”
আলেয়া পরশিকে থামিয়ে বললেন,”পরশি মা বাইরে যাও দয়া করে।নূরার সাথে আমি একা একটু কথা বলবো।
আলেয়াকে প্রচন্ড চিন্তিত দেখাচ্ছে।পরশি আলেয়ার কথায় ভ্রুক্ষেপ না করে বললো,”
জাহিদ ভাই যা বলছে তা কি সত্যি? আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না তোমার মতো একটা মেয়ে!সাদমান ভাই বুঝলাম সিনেমার নায়ক,তার কাছে এসব কিছুই না কিন্তু তোমার এত সাহস কীভাবে হলো?”
নূরা অস্থির হয়ে বললো,”কি বলছো পরশি আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।কি বলেছে উনি সবাইকে?”
“জাহিদ ভাই মিডিয়ায় বলেছে সে তোমার আর সাদমান ভাইয়ার গোপন সম্পর্কের ব্যপারে জেনে গেছে আজকে ।তার জন্যেই নাকি সাদমান ভাইয়া তাকে মে’রে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে।তার চেহারায় মা’রের দাঁগ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে।আর পাশের ফ্ল্যাটের লোকজনও বলছে এটা সত্যি।ওরাও শুনেছে জাহিদ ভাই আর সাদমান ভাইয়ের কথা-কাটাকাটি।মিডিয়া এসবই প্রচার করছে।
এই দেখো তুমি।”
পরশি নূরার দিকে তার ফোন বাড়িয়ে ধরলো।জাহিদ মিডিয়ায় ইন্টারভিউ দিচ্ছে মিথ্যে বানোয়াট গল্প বলে।নিউজে নূরার একটা ছবিও দেখা যাচ্ছে সাদমানের ছবির পাশাপাশি। ছবিটা প্রথম দেখায় জাহিদ কখন তুলেছে নূরা বুঝতেও পারেনি।
নূরার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।কি হচ্ছে এসব তার সাথে।নূরা হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলো।আলেয়া নূরাকে জড়িয়ে ধরলেন।মেয়ের প্রতি ওনার পূর্ণ বিশ্বাস আছে।যে বিশ্বাসের জোরে তিনি হাজার লোকের সামনে মাথা উচু করে বলতে পারেন তার মেয়ে পবিত্র।কিন্তু পরিস্থিতি আজ বড্ড নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

বাসার নিচে মিডিয়ার লোকেরা এসে জড়ো হয়েছে।সাদমান কাউকে ভিতরে আসতে দিচ্ছে না। সে বুঝতেও পারছে না এসব কি হচ্ছে তার সাথে।জাহিদ সাংবাদিকদের এসব উল্টাপাল্টা কথা জানিয়েছে।আর পাশের ফ্ল্যাটের লোকজনও নাকি বলেছে তারাও এমন কিছু শুনেছে।মিডিয়া একজন অভিনেতার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জল ঘোলা করতে তো একধাপ এগিয়ে থাকে।তাছাড়া সাদমানের ছোটপর্দা থেকে এত তাড়াতাড়ি বড় পর্দায় পদার্পণ এবং এত জনপ্রিয়তা অনেকেরই হিংসার কারণ সেই সুযোগটাই নিয়েছে এবার তারা।মুহুর্তে বিষয়গুলো টিভি চ্যানেলে পর্যন্ত নিউজ হয়ে গেল।সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল।

আশরাফ সাহেব লোকজন ঠেলে কোনোরকমে বাসায় ঢুকলেন।অফিসেই সব জানতে পেরেছেন তিনি।রাগে আগুন হয়ে আছেন।বাসায় ঢুকেই নূরাকে ডেকে পাঠালেন সাথে সাদমানকেও।বসার ঘরে একটা সোফায় গম্ভীরভাবে বসে আছেন আশরাফ সাহেব।নূরা কাচুমাচু করে ওনার পাশে দাঁড়িয়ে আছে।অন্য একটা সোফায় সাদমান বসা।পলি, আলেয়া, পরশিও উপস্থিত সেখানে।
আশরাফ সাহেবের কন্ঠে কঠোরতা স্পষ্ট,তিনি বললেন”এসব কি হচ্ছে আমার বাসায়?এর জন্য আমি তোদের গ্রাম থেকে তুলে এনেছিলাম।তোরা ওখানেই ঠিক ছিলিস।রাস্তার নোংরা আমি আমার ঘরে এনে সাজিয়ে রাখতে চাইছিলাম।ভুলে গিয়েছিলাম নোংরা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায় সুগন্ধ না।”
নূরা কান্না মিশ্রিত কন্ঠে বললো,চাচ্চু কি হয়েছে একবার আমার মুখ থেকে শুনতে চাইবেন না আপনি?এভাবে বাইরের লোকের মতো আমাকে দোষ দিবেন? ”
আশরাফ সাহেব চেঁচিয়ে উঠলেন,”মুখে মুখে কথা বলবি না চ’রিত্রহীন মেয়ে। ”
কথাটা শুনা মাত্র আলেয়া উঠে দাঁড়ালেন।শান্ত কন্ঠে বললেন,”ভাইজান ইসলামে কাউকে অপবাদ দেয়া জঘন্যতম অপরাধ।না জেনেশুনে আপনি আমার মেয়ের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন না।”
আশরাফ আরও জোরে চেঁচালেন,”রাখো তোমার হাদিস।বাইরে বাইরে যা দেখাও তোমরা আসলে তার কিছুই না, প্রমাণ তো আমি পেয়েই গেলাম।
আর সাদমান তুমি বাইরে যা খুশি করে বেড়াও আমার তাতে মাথাব্যথা নাই, কিন্তু আমার বাসার মেয়ের সাথে কেন?”
সাদমান এতক্ষণ চুপ ছিল,এবার উঠে দাঁড়িয়ে বললো,আমি আপনাকে খুব বুদ্ধিমান ভাবতাম।কিন্তু আপনি এতটা নির্বোধ জানতাম না।”
আশফার সাহেব চিৎকার করলেন,”মুখ সামলে কথা বলো সাদমান।”
সাদমানও চেঁচিয়ে উঠলো,”এতক্ষণ তো শান্তই ছিলাম। কিন্তু আপনি কিছু না জেনে বুঝে বাইরের লোকজনের মতো একটা নির্দোষ মেয়েকে দোষ দিয়েই যাচ্ছেন।জাহিদ আজ কি করছিল এই মেয়েটার সাথে সেটা কি জানেন? আমার কাছে আপনাদের ফ্ল্যাটের চাবি ছিল সে জন্য আমি বাসায় ঢুকতে পেরেছি।কিন্তু জাহিদের কাছে তো চাবি নেই আমি নিশ্চয়ই দরজা খোলা রেখে বাসার ভিতরে অকর্ম করছিলাম না।এতটুকু কমনসেন্স আপনাদের নেই? জাহিদ বাইরে গিয়ে বলেছে আমার সাথে আপনার ভাতিজির সম্পর্ক সে জেনে ফেলেছে।সে জন্য তাকে আমি মে’রেছি।আর আপনি ব্যপারটাকে আরও নোংরা বানাচ্ছেন।আমার দিকটা না হোক নিজের ভাতিজির দিকটা তো দেখুন।ওর সাথে তো আমার আগে কথাও হয়নি কোনদিন।
আশরাফ সাহেব বললেন,”কবে থেকে নোংরামি শুরু করেছো কে জানে!আমার কি মাথা খারাপ হয়েছে যে বিশ্বাস করবো তোমার কথা? জাহিদ আর নূরার দুইদিন পর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল সেই ছেলে নূরার সাথে কি এমন খারাপ আচরণ করতে পারে যার জন্য তোমার ওকে বাঁচানো লাগে?মিথ্যা গল্প বানানো বন্ধ করো।এই মেয়েটাকে আমি দেখে নিচ্ছি আজ।কথাটা বলে আশরাফ নূরার দিকে তেড়ে গেলেন।পরিস্থিতি বুঝতে পেরে সাদমান এগিয়ে এসে নূরার সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ালো,”আপনি এই নিরপরাধ মেয়েটার গায়ে হাত তুলতে পারেন না”
কথাটা শুনে আশরাফ রাগে আরও অস্থির হয়ে উঠলেন।সাদমানকে ধাক্কা দিয়ে বললেনন,তুমি কি করবে আমাকে?
পলি আর পরশি এসে আশরাফ সাহেবকে কোনোমতে সামলে তার শুয়ার ঘরে নিয়ে গেলেন।ফিরে এসে পলি বললেন,”তোমরা এবার দয়া করে এখান থেকে বিদেয় হও।তোমরা যত এখানে থাকবে আমাদের মান ইজ্জত তত নষ্ট হবে।আশরাফ তত উত্তেজিত হবে।এই মুহুর্তে বাসা থেকে বেরিয়ে যাও তোমরা।
আলেয়া পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেছেন নোহাকে আস্তেকরে বললেন ব্যাগপত্র নিয়ে আসতে।
সাদমান বিস্মিত হয়ে বললো,খালামনি এত রাতে ওরা কোথায় যাবে? আর নিচে মিডিয়ার লোকজন রয়েছে ভুলে গেছো সেটা তুমি?
“আমার এসব দেখার বিষয় না” রুক্ষকন্ঠে বললেন পলি।
সাদমান রাগ নিয়ন্ত্রণ করে বললো,তোমরা যা শুরু করেছো তা মোটেও ঠিক করছো না।এই মেয়েটাকে আমি ভালো করে চিনিও না তুমি সেটা জানো না খালামনি?
“আমার জানা না জানায় এখন কিছু যায় আসে না সাদমান”
কথাটা বলে পলি নিজের ঘরে চলে গেলেন।
পরশি এগিয়ে এসে বললো, “সাদমান ভাইয়া মিহি বার বার কল দিচ্ছে কি বলবো তাকে?”
সাদমান দাঁত কটমট করে বললো,জাহান্না’মে যেতে বল”
কথাটা বলেই সাদমান হনহন করে বেরিয়ে গেল।
আলেয়া পাথরের মুর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছেন।নোহা ব্যাগপত্র নিয়ে এসেছে।তিনি নূরাকে বললেন,বোরকা পরে আয় মা।
রাত বাজে নয়টা।আলেয়া নূরা আর নোহাকে নিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বের হলের অজানা গন্তব্যের দিকে।
অচেনা ভয় তার মনে জেঁকে বসে আছে..
চলবে..