এক টুকরো নূর পর্ব-১৪

0
109

#এক_টুকরো_নূর
——————–(১৪ পর্ব)
লেখা: উম্মে হানি মিম

“আমি আম্মার সাথে একেবারে চলে যেতে চাই।সারাজীবনের জন্য আপনার জীবন থেকে চলে যেতে চাই।
নূরা কাঁপা গলায় বললো কথাটা।
সাদমান খাওয়া থামিয়ে কয়েক সেকেন্ড নূরার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল।চোখদুটো ছলছল করছে।সাদমান বেরিয়ে আসা দীর্ঘশ্বাস গিলে ফেলে বললো,”হঠাৎ এমন একটা সিদ্ধান্ত কেন নিলে?”
“হঠাৎ কেন? এটাই তো হওয়ার ছিল তাই না? আপনার জীবনে আগাছার মতো এসেছি।পরগাছার মতো অবহেলায় পরে থাকার থেকে সরে যাই।তাছাড়া আপনি আর আমি সম্পূর্ণ আলাদা দুটি মানুষ।আমাদের কিছুতেই মিলে না বুঝতে পারেন?আমি চেষ্টা করি যতটা সম্ভব ধর্ম মেনে চলার।আপনি দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত। ধর্ম আপনার কাছে কোনো গুরুত্ব রাখে না।এমন একটা মানুষের সাথে আমি থাকতে চাই না।আর আপনিও তো আমাকে চান না।আমি চলে গেলে মিহিকে বিয়ে করে নিয়েন।আপনাদের জন্য সারাজীবন দোয়া করবো আমি।আপনাকে যেন আল্লাহ হেদায়েত দান করেন।
নূরা সাদমানের উত্তরের অপেক্ষা না করেই উঠে দাঁড়ালো ।সাদমানের অচেনা একটা অনুভূতি হচ্ছে।কাউকে বুঝাতে না পারার মতো অনুভূতি। যে অনুভূতি নিজেও বুঝা যায় না।খাবার শেষ না করেই উঠে যাচ্ছিল সে। নূরা চলে যেতে গিয়েও ফিরে তাকলো।নরম স্বরে বললো,” খাবার অপচয় করতে হয় না। আল্লাহ তাআলা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন,
তোমরা) খাও, পান করো ও অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৩১।
রোজ কত মানুষ না খেয়ে কষ্ট পায়,মা’রা যায় জানেন আপনি? যে খাবারগুলো আপনি অপচয় করছেন সেই খাবারের চার ভাগের এক ভাগ খাবারের জন্যও অনেকে আহাজারি করে।রিজিক অনেক বড় একটা ব্যপার।রিজিক নষ্ট করবেন না।
নূরা কথাগুলো বলে ঘরে চলে গেল।সাদমান বাধ্য ছেলের মতো খাবারগুলো শেষ করলো।আর মনে মনে ভাবলো।এই মেয়েটা কতকিছু ভাবে।এই ভাবনাগুলো তার মাথায় তৈরি করে দেয় কে! যে আয়াতগুলো বলে সে প্রত্যেকটা আয়াতের মর্তবা অনেক।হাদিসগুলো কী সুন্দর।ইসলামিক জীবন যাপন আসলেই কী এত সুন্দর! সাদমান দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।

নূরা ঘুম থেকে উঠে অযু করে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে বসলো।সাদমান তখন বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।নামাজ শেষ করে কোরআন শরিফ নিয়ে বসলো সে।তেলাওয়াত করতে শুরু করলো।
সাদমানের কানে হঠাৎ নূরার মধুর কন্ঠের তেলাওয়াত এসে বাজলো।চোখ কচলে তাকালো।নূরা আপন মনে তেলাওয়াত করে যাচ্ছে।কী যে ভালো লাগছে শুনতে।সাদমান চোখ কচলে কচলে এসে নূরার জায়নামাজের পেছনে মেঝেতে বসলো।মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছে সে আল্লাহর বানী।নূরার হঠাৎ খেয়াল হলো তার পেছনে কেউ বসে আছে।সাদমানের দিকে ঘুরে তাকালো সে।বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন করলো আপনি এখানে?
“শুনছিলাম”
“তেলাওয়াত? ”
“হ্যাঁ, ভালো লাগছে শুনতে।থামলে কেন?”
নূরার চোখদুটো ছলছল করে উঠলো। সাদমানের কাছে তেলাওয়াত ভালো লাগছে।যে ছেলে সারাদিন নাটক,সিনেমা নিয়ে মেতে থাকে তার কাছে তেলাওয়াত ভালো লাগছে।নূরা কমল কন্ঠে বললো,”একটা কথা বললে রাখবেন?”
“কী?”
“আমি তো চলে যাব কিন্তু আমার সারাজীবনের একটা আফসোস থেকে যাবে।আমি আপনার সাথে দু-রাকাত নামাজ পড়তে পারলাম না।পড়বেন আমার সাথে দু-রাকাত নামাজ?”
সাদমান আমতা আমতা করে বললো,”অনেক দিন নামাজ পড়া হয়নি।আমার ভুল হতে পারে।কীভাবে পড়বো?”
“ফাতেহা সহ কয়েকটা সূরা পারেন তো?”
“হ্যাঁ পারি।”
“আমি শিখিয়ে দিচ্ছি। আপনি অযু করে আসেন।”

সাদমান অযু করে এলো।নূরা নিজ হাতে সাদমানের টাউজারটা গুটিয়ে টাখনুর উপর ভাজ করে দিলো।
সুন্দর করে সব শিখিয়ে দিলো সাদমানকে।সেই অনুযায়ী পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দুজন নামাজ পড়লো।মধ্যরাত শহর যখন নিস্তব্ধ তখন দুজন স্বামী স্ত্রী একসাথে নামাজ পড়ছে। এর থেকে সুন্দর দৃশ্য হয়তো আর কিছু নেই।নূরা মোনাজাত করার জন্য হাত তুললো।ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো সে।সাদমানও দুহাত তুললো আল্লাহর দরবারে।নিঃশব্দে ফরিয়াদ করলো,হে আল্লাহ নূরার জীবনের সমস্ত কষ্ট দূর করে দাও।মেয়েটার জন্য যেটা ভালো সেটাই তুমি তাকে পাইয়ে দাও।সে যেন খুব সুখী হয়।আমার মতো পাপিকে এই পবিত্র আত্মার জীবন থেকে সরিয়ে দাও।সব মায়া কাটিয়ে দাও।আমার বুকের ভিতরের অদ্ভুত কষ্টগুলো দূর করে দাও।আমি যেন নূরাকে সহজভাবে মুক্তি দিতে পারি।

সকাল বেলা নূরা মিসেস লিপি আর হক সাহেবের জন্য চা নিয়ে তাদের ঘরে গেল।সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করলো সে।হক সাহেব প্রতিদিনের মতো চায়ে চুমুক দিয়ে প্রশংসা করলেন।
নূরা দুজনকে উদ্দেশ্য করে বললো,”বাবা -মা আমি একটা অনুমতি চাই আপনাদের?”
লিপি বললেন,কীসের অনুমতি? ”
“আমি আম্মার সাথে চলে যেতে চাই।”
লিপি আর হক সাহেব একে অপরের দিকে এক পলক তাকালেন তারপর লিপিই কথা বললেন,”ঠিক আছে ঘুরে এসো।বিয়ের পরে তো আর যাওনি তুমি।আমাদের আপত্তি নাই।”
হক সাহেবও সম্মতি দিয়ে বললেন,”কিন্তু তাড়াতাড়ি চলে আসা চাই মা।তোমার হাতে রোজ এই চা-টা না খেলে তো আমার সকালই শুরু হয় না।তুমি ঘরে না থাকলে ঘরটাই অন্ধকার লাগে।
নূরার খুব বলতে ইচ্ছে করলো বলতে যে সে একেবারে চলে যেতে চায়।তবুও মানুষগুলোর হাসিখুশি মুখটাতে বিষাদ দেখতে ইচ্ছে হলো না আর তার।নিঃশব্দে মাথা নাড়ালো।
লিপি বললেন,”আজকে একটু বের হও তোমরা। কালকে তো আলেয়া আপা চলে যাবেন।এখন তুমিও যেহেতু যাবে।সাদমানও তো যাবে।আজকে কিছু কেনাকাটা করে আনো তোমার মা আর নোহার জন্য।নতুন জামাই শ্বশুর বাড়ি প্রথম বার খালি হাতে যায় না।”
“এসব কুসংস্কার মা।তাছাড়া উনি যাবেন কী না আমি জানি না।”
লিপি ভ্রু কুচকে বললেন,”আমার কথা শুনো।বেশি কথা বলবে না। বিয়ের পর থেকে তোমার মা বোনকে আমাদের তরফ থেকে কোনো উপহার দেয়া হয়নি।সাদমানের উপর কী ওনাদের হক নাই?”
নূরা আর কিছু বললো না।লিপি নূরার পায়ের দিকে তাকিয়ে আঁতকে উঠলেন,”একি অবস্থা তোমার জুতাটার।ছিড়ে যাচ্ছে অবস্থা। আজকে তুমি জুতাও কিনে আনবে।নিজের জন্যও কিছু কিনবে।সেই পুরোনো জামাগুলোই পরে চলেছো তুমি।
লিপি সাদমানকে ডাক দিলেন।সাদমান আসতেই বললেন।নূরাকে নিয়ে শপিংয়ে যাও।আলেয়া আপা আর নোহার জন্য জামাকাপড় নিয়ে এসো।আর নূরার ঘরে পরার জামা জুতা পুরোনো হয়ে গিয়েছে।এগুলোও কিনে দিবে।সাদমান কেন জানি কোনো আপত্তি করলো না।শুধু বললো আমার পিএকে একটা কল করে আসি। নূরাকে বলো তৈরি হতে।

শপিং মলে একটা জুতার দোকানে ঢুকলো তারা।নূরা কিছু জুতা দেখছে।সাদমান কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে আছে।নূরা বসে একটা জুতা পরে দেখার চেষ্টা করতেই দোকানদার ছেলেটা ছুটে এলো।জুতাটা নূরার হাত থেকে নিয়ে বললো,আমি পরিয়ে দিচ্ছি ম্যাম। এই জুতাটা এভাবে পরে। দোকানদার নূরার পায়ে হাত দেয়ার আগেই সাদমান এগিয়ে এলো।লোকটার হাত থেকে টান দিয়ে জুতাটা ছিনিয়ে নিয়ে বললো,আমি দেখছি আপনি যান।
লোকটা চলে যেতেই সাদমান হাটুগেরে মেঝেতে বসে নূরার পায়ে জুতাটা পরিয়ে দিলো।নূরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে রইলো শুধু।এই যত্নগুলো মনে থাকবে তার। সাদমানের জীবনে সে না থাকলেও।

কেনাকাটা শেষ করে গাড়িতে উঠে বসলো দুজন।সাদমান র‍্যাপিং পেপারে মুড়ানো একটা গিফট নূরার হাতে দিয়ে বললো,”এটা আপনার জন্য।কালকে তো চলে যাবেন।আর কখনও হয়তো দেখা নাও হতে পারে।একটা অন্তত স্মৃতি থাকুক আপনার কাছে আমার দেয়া।

নূরা ব্যাগ থেকে একটা হাদিসের বই বের করে সাদমানের হাতে দিয়ে বললো,”এটা কিনলাম আপনার জন্য।যদি কখনও অবসর সময় পান পড়ে দেখবেন।সাদমান মাথা নাড়ালো।

নূরা শেষ বারের মতো বাসার সবকিছু গুছাচ্ছিল।সাদমানের ঘর গুছিয়ে।সুহার ঘরে আসলো সে।সুহা বাসায় নেই।নূরা বিছানা গুছাতে গিয়ে সুহার একটা খুবই ছোট পোষাক পরা ছবি পেল। নূরা মনে মনে আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ে ছবিটা ড্রয়ারের ভিতরে রেখে দিলো। ততক্ষণে সুহা এসে পরেছে।নূরাকে তার ঘরে দেখেই রেগে গেল। কড়াভাবে বললো,”আমার ঘরে তুমি কী করছো?”
নূরার সরল স্বীকারোক্তি, “ঘরটা গুছাচ্ছিলাম।”
“কোনো দরকার নেই।যাও এখান থেকে।”
নূরা ভয়ে ভয়ে বললো,”একটা কথা বলি সুহা।”
“তাড়াতাড়ি বলে বিদেয় হও।”
“এরকম ছোট জামা কাপড় পরা ঠিক না।”
সুহা বিদ্রুপ করে হাসলো।হাসতে হাসতে বললো ফ্যাশনের তো কিছুই বুঝো না।ভূতের মতো ড্রেস পরে থাকো।আমাকে জ্ঞান দিতে এসো না।আমার বয়ফ্রেন্ড এর থেকেও ছোটজামা কাপড় পছন্দ করে।
“তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে?”
“থাকবে না কেন? এই যুগে এমন কোনো মেয়ে আছে যার বয়ফ্রেন্ড নাই?”
নূরা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো,”তোমার বয়ফ্রেন্ড বলে এই ধরনের জামা পরতে?”
“হ্যাঁ বলেই তো।তার জন্যই তো আমি এসব পরি”
“তোমার বয়ফ্রেন্ড তোমাকে সত্যিকার অর্থে ভালোইবাসে না।”
“পাগলের মতো কী যাতা বলছো তুমি?”
“পাগলের প্রলাপ না।ভেবে দেখো আমরা যে জিনিসটা পছন্দ করি।মন থেকে ভালোবাসি।সেই জিনিসটাকে খুব যত্ন করে লুকিয়ে রাখি আমরা।যে খাবারটা ভালো সেটা ঢেকে রাখি।কারণ ঢেকে রাখা খাবারটাতে মাছি বসে না।নষ্ট হয় না।সে যদি তোমাকে ভালোবাসতো।তবে তোমার শরির ঢেকে থাকে এমন পোষাকে পছন্দ করতো।চাইত না অন্য কেউ তোমাকে এমন পোষাকে দেখুক।কিন্তু সে তো তোমাকে খোলামেলা রাখতেই আনন্দ পায় বেশি।তাহলে এটা কীসের ভালোবাসা? তার কাছে আসলেই কি গুরুত্বপূর্ণ তুমি?”
“চুপ করো তুমি।যাও গিয়ে ভাইয়ার ব্রেইন ওয়াশ করো আমার না।গেঁও ভূত যতসব।”
নূরা আর কথা বাড়ালো না সুহার ঘর থেকে বেরিয়ে এলো।”

রাতের খাবারে নূরা সবার পছন্দ অনুযায়ী রান্না করলো।হক সাহেব আর মিসেস লিপির জন্য বিভিন্ন পদের ভর্তা বানালো।
সাদমান ইলিশ মাছ পছন্দ করে খুব।সেটাও রাধলো।সুহার জন্য চায়নিজ খাবার রান্না করলো।
টেবিল ভর্তি সবার পছন্দের খাবার দেখে তো হক সাহেব আর লিপি অবাক।লিপি বললেন,”এত দেখি সবার প্রিয় খাবার।তুমি এতসব কী করে করলে।”
নূরা মুচকি হেসে জবাব দিলো,
“আমেনা খালা সাহায্য করে দিয়েছে আমাকে”

সাদমান খেতে বসে আমেনাকে ডাকলো,”আমেনা খালা একটু এসো।”
নূরা একদিন বলেছিল আমেনা খালাকে নাম ধরে ডাকা উচিৎ না।সাদমান কত তাড়াতাড়ি সম্মোধন বদলে ফেলেছে।
আমেনা আসতেই সাদমান বললো,”নূরা আমেনা খালাকে খাবার প্লেটে সাজিয়ে দাও।সে অনেক কষ্ট করে সারাদিন আজকে আমাদের সাথেই খাবে।
নূরা মুগ্ধ চোখে তাকালো এক পলক তারপর আমেনাকে প্লেটে খাবার সাজিয়ে দিলো।হক সাহেব আর লিপিও ছেলের আচরণে খুশি হলেন।
সবাই খুব তৃপ্তি করে খেলো।
খাবার শেষে সুহা নূরাকে ডেকে নিয়ে গেল নিজের ঘরে।তারপর বললো।আমাকে একটু রান্না করে দিও একদিন আমার বয়ফ্রেন্ড বাসার রান্না খুব পছন্দ করে।এত সুস্বাদু রান্না ওকে রেখে গলা দিয়ে নামছিল না।
নূরা মাথা নাড়িয়ে ঘরে চলে এলো।
সাদমান নূরার জন্যই অপেক্ষা করছিল।নূরা আসতেই বললো।চলুন বারান্দায় গিয়ে বসি।চাঁদ দেখতে দেখতে গল্প করবো।কালকে তো চলেই যাবেন।নূরা সম্মতি জানালো।
চাঁদের আলোয় বারান্দায় পাশাপাশি বসে আছে নূরা আর সাদমান।দুজনেই চুপ।বেশ কিছুক্ষণ থেকে এভাবেই নিরবে বসে আছে তারা।কেউ টু-শব্দটি করছে না।সাদমান গল্প করবে বলে এখানে এসে বসলেও কথা আর হচ্ছে না দুজনের।একদৃষ্টিতে দুজনেই চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে।শুধু একে অপরের নিঃশ্বাসের শব্দ শুনছে।নিরবতাই যেন আজকে কথোক হয়েছে।
নিরবতা ভেঙ্গে সাদমান বললো,”নূরা তুমি এই কয়দিনে আমার ভালো বন্ধু হয়ে উঠে ছিলে।এমন একজন বন্ধুকে হারিয়ে ফেলছি আমি।আসলেই আমি দূর্ভাগা।”
“নিজেই নিজের বন্ধু হয়ে উঠুন তাহলে আর হারাতে হবে না।”
“আমি খুব একা হয়ে যাচ্ছি নূরা।”
“সময় থাকতে সত্যিকারের সঙ্গ খুঁজে নিতে শিখুন।নাহলে একেবারে নিঃসঙ্গ হয়ে যাবেন।
” সেটা কী?”
“নামাজ।নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সানিধ্য তালাশ করুন।”
কথাটা বলে নূরা উঠে চলে গেল।
সাদমান বসে রইল একা। নিঃসঙ্গ হয়ে যাওয়ার ভয় তার সারা শরিরে কম্পনের সৃষ্টি করলো।আকাশের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বললো,”সাদমান হক নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে।তবে কী মিহির কথাই ঠিক হতে চলেছে।

পরদিন নূরা তৈরি হয়ে নিলো।বুকের ভিতর কোথাও একটা আশার সঞ্চার যেন এখনও হয়।মনে হয় কোথাও একটা পিছুটান আছে।কেউ একজন তাকে আটকে দিবে শেষ মুহুর্তে। সব অভিমান ভুলিয়ে দিবে।পরক্ষণে মনে পড়ে যায় সাদমানের সাথে থাকা সম্ভব না।সে বেনামাজি,আল্লাহ ভিরু না।এমন মানুষের সাথে থাকলে নিজের আমল,ইমান ঝুঁকির মুখে পড়বে।নূরা চোখের কোনে জমে উঠা পানি গড়িয়ে পরার আগেই মুছে নেয়।সাদমান নূরাকে আটকাবে দূরে থাক।শেষ মুহুর্তে কথাও বলে না।নিরবে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়।কীসের যেন ভয় তার। নূরার সামনে কথা বললেই যেন ধরা পড়ে যাবে সে।আটকে যাবে।আটকালেই যেন নিঃশেষ হয়ে যাবে…
চলবে..