চিলেকোঠার প্রেম পর্ব-০৬

0
528

#চিলেকোঠার_প্রেম

#Ishita_Rahman_Sanjida(Simran)

#পর্ব_৬

স্কুটি থামিয়ে একে অপরের দিকে তাকালো দুজনে। গাড়িদুটোর রং কুচকুচে কালো। গ্লাসগুলো তোলা। সায়েন চট করে ভেবে নিলো এরা কিডন্যাপার। দিশাকে চোখের ইশারায় বোঝালো তা। দুজনে মাথা নেড়ে প্রস্তুতি নিলো। দিশা ব্যাগ থেকে ছোট ছুরিটা বের করলো। এসব বিষয়ে তারা আগে থেকেই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। সায়েন ফিসফিস করে বলল,’দিশু আজ যা হয় হোক একটাকে খুন করেই ছাড়বো। কিডন্যাপ হলে হলাম তবুও একজনকে খুন করে ছাড়বোই ছাড়বো।’

দিশাও মাথা নাড়িয়ে বলল,’একটাকে কেন??দুইটা হবে। তুই একটা আর আমি একটা বুঝলি??’
‘হুম‌।’

গাড়ি থেকে দুজন কালো পোশাক পরিহিত লোক বের হলো। দুজনের কানে ব্লুটুথ ডিভাইস লাগানো। আর চোখে কালো সানগ্লাস। এটা দেখে ওরা দুজনে কনফার্ম হলো এরা কিডন্যাপার। লোকদুটো ওদের কাছে আসতেই সায়েন ছুরি উঁচিয়ে বলল,’কাছে আসলে একদম মেরে দেব। খবরদার কাছে আসবেন না কেউ??’

সায়েনের সাথে দিশাও গলা মেলালো। কিন্তু লোকদুটো আচানক মাথা নিচু করে ফেলল। একজন খুব নিচু কন্ঠে বলল,’ম্যাম আপনার ওড়না ঝুলে গেছে। যেকোন সময় চাকার সাথে পেচাতে পারে।’

চমকে উঠে সায়েন দিশার ও সেইম অবস্থা। সায়েন ওড়নার দিকে তাকালো। সত্যি অনেক খানি ঝুলে আছে। তাড়াতাড়ি সে ওড়না ঠিক করলো। লোকদুটো গাড়িতে উঠে বসলো। একজন জানালা দিয়ে তাকিয়ে বলল,’এবার আপনি যেতে পারেন।’
গাড়িটা এক ছুটে চলে গেল। সায়েন এখনও ঘোরের মধ্যে আছে। এসব কি হচ্ছে ওর সাথে??এই লোক দুটোই বা কে??দিশা অবাক কন্ঠে বলে,’ওড়না ঝুলে আছে এটা স্কুটি থামিয়ে এতো ঘটা করে বলার কি দরকার ছিল?? চলতি গাড়িতে থাকতেই তো বলতে পারতো?? কিন্তু কেন?? কিছু বুঝলি সায়েন??’
সায়েন মাথা নাড়িয়ে বলল,’নাহ!! কিন্তু গোলমাল কিছু তো একটা আছে!!:

‘এতো ভাবা বাদ দে। এখন চল তো??’

সায়েন স্কুটিতে উঠে বসে। দিশাও পেছনে চেপে বসলো। দিশাকে ওর বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে এলো সায়েন। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে শাফিন ও চলে এসেছে। কিন্তু ওদের দুজনের মন খারাপ হয়ে গেল কারণ শপিং এ ওদের মা ও যাবে। গেল দুজনের মুড খারাপ হয়ে। নিজেদের পছন্দমত তো কিছুই কেনা হবে না তাদের। তবুও সায়েন ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিলো। আজকে চিলেকোঠার ঘরে যাওয়া হয়নি সায়েনের। মনটা খচখচ করছে। জয়নব বেগমের রুমে উঁকি দিয়ে দেখলো তিনি এখনো তৈরি হচ্ছেন। সায়েন চট জলদি খাবার নিয়ে ছাদে চলে যায়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই আরাদ উঠে বসল। মুখটা গোমড়া করে বলে উঠলো,’আজকে না আসলেও পারতে।’

সায়েন বসতে বসতে বলল,’সেকি?? তাহলে আপনার খাবার দিতো কে??না খেয়ে থাকতেন নাকি??’

সায়েন যে তার রাগ ধরতে পারেনি সেটা বুঝে গেছে আরাদ। মেয়েটা এমন কেন??আরাদ যে রাগ করেছে সায়েনের উপর তা কি বুঝে না??এতো ছোট নাকি যে কারো রাগ ধরতে পারছে না?? আজকে সকালে ও আসেনি খাবার দিতে। খাওয়া নিয়ে আরাদের কিছু যায় আসে না। সে শুধু একপলক সায়েনকে দেখতে চায়। কিন্তু সেসব কবে বুঝবে সায়েন।এই বদ্ধ চিলেকোঠার ঘরে আর কতদিন থাকবে সে??আরাদকে এসব ভাবতে দেখে সায়েন বলল,’কি ভাবছেন??আমাকে যেতে হবে। শপিং এ যাবো। মা রেডি হচ্ছে আমাকে না পেলে বকাবকি করবে।’
সায়েন আর এক মুহূর্তও নষ্ট না করে চলে গেল। আরাদ কিছু বলতে চেয়েও পারলো না।রাগ হচ্ছে খুব সায়েনের উপর। একটু সময়ও দিলো না। খাবার টাও দূরে ঠেলে সরিয়ে দিলো। খাবে না যে আজকে। যার জন্য এত কষ্ট করে এখানে থাকছে সেখানে সায়েন একটুও বুঝলো না আরাদকে।
সায়েন নিচে নেমে এলো। সে বুঝতে পারছে যে আরাদ রাগ করেছে। কিন্তু কি করবে সে?? সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে। তাই আর ছাদে আসতে পারেনি। পানি দেওয়ার জন্য আসতে চাইলে ওর মা বারন করে দেয়। নিরুপায় সায়েন ছাদে যেতে পারলো না। তাই সায়েনের ও মনটা খারাপ ছিলো। সেটাও তো আরাদ বুঝলো না।

শপিং এ গিয়ে বোর হচ্ছে শাফিন আর সায়েন। কারণ ওরা কি পরবে না পরবে সব ঠিক করছেন জয়নব বেগম। বেছে বেছে তিনি একটা হলুদ শাড়ি আরেকটা হলুদ পাঞ্জাবী কিনলো যা দেখে সায়েন শাফিন দু’জনেই নাক সিঁটকায়। কারণ ওরা দুজনে হলুদ রঙ পছন্দ করে না। তবুও কিছু করার নেই। সায়েন শাফিনের কানে ফিসফিস করে বলল,’ভাবির কথা মা’কে কিভাবে বলবি ভাইয়া??’
শাফিন অসহায় মুখে বলল,’বোধহয় এজীবনে পারব না রে।’
‘আচ্ছা শফিকুল ইসলাম কে বলে দেখব।’

‘আব্বু রাজি হবে??আব্বু তো আম্মুর কথায় চলে।’
‘সিগারেট খাওয়া ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করলেই হবে।’
খুশিতে শাফিনেল চোখদুটো চকচক করে উঠলো সে বলল,’থ্যাঙ্কস বনু আমার।’

‘থ্যাঙ্কসে পেট ভরবে না আমার। বুদ্ধি দেওয়ার জন্য হাজার টাকা চাই।’

‘আমার ভাগের সব সম্পত্তি তোকে দিয়ে দেব।’

সায়েন মুখ ভেংচিয়ে বলল,’তোর বাপের আছে কি আর তুই দিবিই বা কি???’

শাফিন কিছু বলার আগেই জয়নব বেগম ডাক দিলেন। দু’জনে চুপ হয়ে গেল। কেনাকাটা শেষে বাড়িতে ফিরল ওরা। রাত হয়ে গেছে সবাই ক্লান্ত। শাফিন আর জয়নব বেগম রুমে চলে গেলেন। ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল সবাই। শুধু সায়েন খেল না। সে ব্যাগে করে চাইনিজ খাবার কিনে এনেছে। শপিং মলের একটা রেস্টুরেন্ট থেকে। ওয়াশরুমে যাওয়ার কথা বলে কিনে এনেছে সে। সবাই ঘুমিয়ে পড়তেই সায়েন ছাদে চলে আসে। আজকে একটা মোমবাতি নিয়ে এসেছে। আরাদ ওপাশ ফিরে শুয়ে আছে। শীত শীত পরেছে তাই একটা চাদর এনে দিয়েছে সায়েন। সেটা গায়ে জড়িয়ে শুয়ে আছে আরাদ। সায়েন মোমবাতি রেখে আরাদকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বলল,’এই যে শুনছেন?? আপনার খাবার এনেছি। খেয়ে নিন??’

আরাদ জেগে ছিল কিন্তু সাড়া দিলো না। সায়েন আবার ডাকলো আরাদ এবারও সাড়া দিলো না দেখে সায়েন বলল,’আমি কিন্তু কিছু খাইনি। দুপুরে অল্প খেয়েছিলাম। এখন ভিশন খিদে পেয়েছে। আপনি না খেলে তো আমারও খাওয়া হবে না।’

আরাদ চট করে উঠে বসে। সায়েন এতে একটু অপ্রস্তুত হয়ে পিছিয়ে যায়। আরাদ বলে ওঠে,’তুমি খাওনি কেন??’

‘আপনিও তো খাননি তাহলে আমি কিভাবে খাই?? আপনি এখন আমার দায়িত্বে। তাই আপনি না খেলে আমিও খাব না।’

আরাদ কিছু বলল না। সায়েন মুচকি হেসে পেছনে থাকা হাতটা সামনে আনলো। তাতে একটা লাল গোলাপ। আরাদ কপাল কুঁচকে তাকাতেই সায়েন বলল,’সরি।’

‘কি জন্য??’

‘আজকে সারাদিন আপনার কাছে না আসার জন্য। আসলে একদম সময় পাইনি। নাহলে তো আসতাম।’
এতক্ষণে আরাদের মুখে হাসি ফুটলো। মুচকি হেসে গোলাপটা হাতে নিয়ে বলল,’গোলাপ কোথায় পেলে??’

‘শপিং শেষে আসার পথে নিয়ে এসেছি।’

‘গোলাপ দিয়ে সরি বলার কারণ??’

সায়েন মৃদু হেসে বলল,’কারণ গোলাপ হলো অতি সুন্দর ফুল। মন খারাপ থাকলেও গোলাপ দেখে মন ভালো হয়ে যায়। গোলাপকে কেউ অপছন্দ করে না। তাই রাগ ভাঙানোর উওম উপায় গোলাপ। কেউ সহজে গোলাপকে ফিরিয়ে দিতে পারে না। সেটা প্রপোজ হোক বা সরি। কিন্তু ছেলেরা তা বোঝে না। বউ বা গার্লফ্রেন্ড এর উপর রাগ করে বারো টাকার সিগারেট খেতে পারে কিন্তু দশ টাকার গোলাপ যে সব সমস্যার সমাধান তা বোঝে না।’

আরাদ হাসলো সায়েনের কথায়। সায়েনের কথার মুক্তি আছে। সায়েন চাইনিজের প্যাকেট খুলে আরাদের দিকে এগিয়ে দিল। আরাদ ও খেতে লাগল। সায়েন নিজের প্যাকেট খুলে খেতে খেতে বলল, ‘দুপুরে নিশ্চয়ই খাননি রাগ করে??’

আরাদ চোখ তুলে সায়েনের দিকে তাকালো বলল,’হুম, ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তারপর উঠে দেখি কালো বিড়ালটা সব খেয়ে ফেলেছে। এখন সে আরামে ঘুমাচ্ছে।’
পাশেই সল্টু ঘুমাচ্ছে। এতক্ষণ সায়েন না দেখলেও আরাদের দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকালো সায়েন। সল্টুকে দেখে চোখ বড়বড় করে বলল,’সর্বনাশা বিড়ালটা এখানে কেন আসে??ওর জন্য ধরা পড়ে যাব নিশ্চিত।’

‘কেন??’

‘এটা ভাইয়ার বিড়াল। দিনরাত ভাইয়ার সাথেই থাকে। বিরক্ত লাগে আমার। বিড়ালে এলার্জি আছে আমার। তাই এর ধারে কাছেও যাই না আমি।’

‘আমার তো ভালোই লেগেছে। আচ্ছা তুমি তখন চাও না তখন এটাকে আর এখানে আসতে দেব না হ্যাপি??’

সায়েন দুদিকে মাথা দুলিয়ে বলল,’হ্যাপি।’

খাওয়া শেষে সায়েন বলল,’ছাদে যাবেন?? আজকে চাঁদ ওঠেনি তবে তারা আছে।’

আরাদ একটু ভেবে বলল,’যাওয়া তো যাবে কিন্তু, তোমার মা??’

সায়েন উঠে দাঁড়িয়ে বলল,’সবাই ঘুমিয়ে আছে। কেউ উঠবে না চলুন।’

আরাদ উঠে দাঁড়ালো। এসুযোগ কিছুতেই মিস করা যাবে না। আজকের রাতটা সায়েনের সাথেই কাটাবে সে। সায়েনের সাথে ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়ায় আরাদ। সায়েনের দৃষ্টি আকাশের দিকে। মুগ্ধ হয়ে সে তারা দেখছে। আশেপাশের বিল্ডিং এ লাইট জ্বলছে
সেই আলোতে সায়েনের মুখটা আবছা দেখা যাচ্ছে। আরাদের কাছে এটাই অনেক। সায়েন তারা দেখছে আর আরাদ সায়েনকে। আকাশ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সায়েন আরাদের দিকে তাকিয়ে বলল,’আজকের আকাশটা খুব সুন্দর লাগছে। আমি এভাবে কখনো আকাশ দেখিনি।’

আরাদ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল,’কেন??’

‘ছাদ তো বন্ধ থাকতো। আপনার জন্য খোলা। কখনো ছাদে আসিনি চন্দ্র বিলাস করতে। বা বিকেলের বাতাস অনুভব করতে। তাই রুচিটাও নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু প্রাকৃতিক এই সৌন্দর্য যে মনোমুগ্ধকর তা আজ দেখলাম। ভালো লাগলো।’

আরাদ বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলল। সায়েনের আরেকটু কাছে এসে দাঁড়ায় সে। তারপর আকাশের দিকে দৃষ্টি মেলে বলল,’জীবনটা তোমার তাই নিজের মতো করে বাঁচার চেষ্টা করো। বাবা মায়ের দায়িত্ব আছে তবে সেটা সন্তানদের ইচ্ছে অনুযায়ী। তাদের দায়িত্ব সন্তানদের ভুল ধরিয়ে দিয়ে তা শুধরে দেওয়া। কিন্তু তোমার মা বোধহয় একটু বেশি করছে। তোমাদের দুই ভাইবোন এর মতামত তার নেওয়া উচিৎ।’

সায়েন মাথাটা নীচু করে ফেলল। ও জানে যে ওর মা’কে যতোই বোঝাক না কেন সে বুঝবে না। জয়নব বেগম চান ওরা দুজন যেন তার ইচ্ছায় মানুষ হোক। এজন্য সবসময় চাপে রাখে ওদের। সায়েন ঘাড় ঘুরিয়ে আরাদের দিকে তাকিয়ে বলল,’এসব বাদ দিন। ওসব বিষয়ে কথা না বলে আজকের ওয়েদার টা উপভোগ করুন। আমি তো খুব এক্সাইটেড।’

আরাদ প্রসঙ্গ পাল্টে বলল,’আচ্ছা আমার যদি সব মনে পড়ে যায় তখন তো আমি এখান থেকে চলে যাব। আমাকে মিস্ করবে তখন??’

আরাদের এহেম কথা শুনে পূর্ণ দৃষ্টি মেলে তাকালো সায়েন। কেন জানি আরাদের কথাটা ভালো লাগলো না সায়েনের। তাই সে চুপ করে রইলো। আরাদ আবার বলতে লাগলো,’তখন তুমি আর কারো জন্য খাবার নিয়ে আসবে না। চিলেকোঠার এই ঘরে তো কখনোই না। তখন ভালো লাগবে তোমার?? আচ্ছা যদি আমার সব মনে পড়ে যায় তখন যদি তোমাকে ভুলে যাই আমি??তখন কি হবে??’

সায়েনের এবার কান্না পাচ্ছে আরাদের কথায়। আরাদ কি সত্যি সায়েনকে ভুলে যাবে?? এতদিন ধরে দুজনে একসাথে কথা বলছে কত স্মৃতি ওদের এই চিলেকোঠা আর ছাদ ঘিরে। সব ভুলে যাবে আরাদ??কেন ভুলবে??সায়েনের এবার সত্যি খারাপ লাগছে। আরাদ ওকে ভুলে যাবে এটা সে মেনে নিতে পারছেই না। বুকের ভেতর একটা চাপা কষ্ট অনুভব হচ্ছে যা সায়েন আরাদকে দেখাতে চাইছে না। এত সহজেই কি সব ভোলা যায়??আরাদ ভুলে গেলেও সায়েন তো ভুলতে পারবে না। আরাদ যে ওর প্রতিটা শিরায় শিরায় মিশে গেছে। সায়েন আর আরাদের দিকে তাকালো না। ক্ষোভে ফেটে যাচ্ছে সায়েন। তাই আরাদকে কিছু না বলে দৌড়ে চলে এলো। সায়েনের হঠাৎ এরকম করার মানে আরাদ বুঝলো না। তবুও আরাদ সায়েনের পিছু নিলো। কিন্তু সায়েন ছাদের দরজা বন্ধ করে চলে গেছে তাই আরাদ যেতে পারলো না। হতাশ হয়ে সে চিলেকোঠার ঘরে ফিরে গেল।
বিছানায় শুয়ে শুয়ে চোখের পানি ফেলছে সায়েন। কিন্তু কেন কাঁদছে তা সায়েন নিজেও বুঝতে পারছে না। আরাদের কথায় এতো কষ্ট হচ্ছে কেন ওর??আরাদ চলে গেলে ওর কি তাতে?? কিন্তু সায়েনের মন যে কিছুতেই মানছে না। চোখের পানি যেন বাঁধ মানছে না। এভাবে কাঁদতে কাঁদতে সায়েন ঘুমিয়ে পড়লো।

ভোরেই ঘুম ভাঙল সায়েনের। ফ্রেশ হয়ে গাছে পানি দিতে গেল সে। মনটা তার এখনও খারাপ। বারবার রাতে বলা আরাদের কথাগুলো মনে পড়ছে। আরাদ চলে যাবে খুব শীঘ্রই এটা মাথায় আসতেই সায়েনের মন আরো খারাপ হয়ে গেল। গাছে পানি দিতেও ভালো লাগছেনা সায়েনের। সায়েন বুঝল যে আজকে ওর সারাদিন খারাপ যাবে।

‘মন খারাপ কেন ম্যাডাম??’

আরাদের কন্ঠস্বর শুনে চকিতে তাকালো সায়েন। টাউজারের পকেটে হাত ঢুকিয়ে হালকা বাঁকা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আরাদ। ঠোঁটের কোণে তার মৃদু হাসি ঝুলানো। যা দেখে সায়েনের কষ্টটা আরেকটু বাড়লো। চলে গিয়ে তো সে ভালোই থাকবে তাই না?? এরজন্য এতো হাসছে। সায়েন আরাদের কথার জবাব না দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে আসতে নিলেই আরাদ সায়েনের হাতটা ধরে ফেলে।

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,