#ঝরা_স্রোতধারা
#পর্ব_৪
Tahrim Muntahana
১০.
শান্তি নেই তাহিবের মনে। চিন্তা, হতাশা তাকে ঘিরে ধরেছে। কাজের সূত্রে অনিন্দিতাকে নিয়ে ঢাকায় নিজেদের ফ্ল্যাটে চলে এসেছে। সেদিন থেকেই জীবনের রঙ যেন ফুরিয়ে গেছে। সারাদিন কাজের পর মন খুলে যে একটু কথা বলবে তাও বলতে পারে না। ভরসা, ভালোবাসার জায়গায় বউ টা তার বড্ড উদাসীন। এর জন্য তো সেই দায়ী। উহু সত্যিই কি সে দায়ী? নাকি তাকে জোর করে দায়ী করানো হচ্ছে। সে কি এই কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে? নাকি এ কষ্ট তাকে সারাজীবন তাড়া করে বেড়াবে। এসব ভাবতে ভাবতেই ফোনে ম্যাসেজের শব্দ এলো। এত রাতে কে ম্যাসেজ দিবে ভেবে ফোন ওপেন করতেই চোখে পড়লো,
‘লুকিয়ে লাভ নেই। কষ্ট সবাইকেই পেতে হবে। প্রত্যক্ষ হোক পরোক্ষ। তুমিও পাবে কষ্ট। পরোক্ষ ভাবে ধুকে ধুকে শেষ হবে হয়তো। প্রত্যক্ষ না হলেও তোমার শাস্তি তুমি নিজেই নিজেকে দিচ্ছো!’
তাহিবের মুখে কেন জানি হাসি ফুটে উঠলো। সেই সাথে বিদ্রুপ নিজের প্রতি। সেতো কষ্ট পাচ্ছেই। ভালোবাসার মানুষটাকে সারাক্ষণ প্রতিমুহূর্তে অন্যের কল্পনায় বিভোর থাকতে দেখে ভালোথাকা যায়?
বেলকনিতে চাইলো তাহিব। সোফাটাই বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে অনিন্দিতা। হয়তো প্রিয়জনকে কল্পনায় আঁকছে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের কাজে মন দিলো। সামনে যে অনেক কিছু দেখার বাকি।
অনিন্দিতা ভাবছে রিয়াবের সাথে কাটানো মুহূর্তের কথা। সে তো একসময় রিয়াবকে কত বলতো,
জানো রিয়াব তোমাকে নিয়ে আমি সুখের একটা রাজ্য গড়েছি। যে রাজ্যে তুমি রাজা আর একমাত্র রানী আমি। না আছে প্রজা না আছে দাসী। তোমার সকল সেবা একমাত্র আমি করবো। ভালোবাসবো ভিষণ করে। রাজাদের অনেকগুলো রানী থাকে বলে ভেবোনো তোমার ও থাকবে। আমি ছাড়া তোমার আর গতি নেই। তাই অন্যমেয়ের দিকে ভুলেও যেন না তাকাও। ভালোবাসার প্রতিফল হয়ে আসবে ফুটফুটে সন্তান। আমার কিন্তু অনেকগুলো বাচ্চা চাই। তুমি জানো আমার বাচ্চা এতো এতো পছন্দ। দেখলেই শুধু চুমু দিতে ইচ্ছে করে। কি ভালোবাসবে তো? পাশে থাকবে তো?
প্রতিত্তরে রিয়াব দুষ্ট হেসে বলতো,
অনেকগুলো বাচ্চার জন্য তো অনেক অনেক ভালোবাসতে হবে! পারবে সহ্য করতে?
অনিন্দিতা লজ্জায় মুখ লুকাতো। ছেলেটার মুখে কিছু আটকায় না। রিয়াব লাজুকলতা অনিন্দিতাকে দেখে শব্দ করে হেসে দিতো। অনিন্দিতা রিয়াবকে মারার জন্য ছুটে যেত। কত মধুর সম্পর্ক ছিলো। এসব ভেবেই হালকা শব্দ করে হেসে উঠে অনিন্দিতা। তাহিব চমকে তাকায় সেদিকে। মেয়েটির হাসি মুখ অন্তত দেখতে পেলো। হয়তো তা অন্যের কল্পনায় বিভোর থেকে, তাতে কি এসে যায় সে তো ওই মেয়েটিকে হৃদয় থেকে ভালোবাসে!
১১.
ভাগ্য! ভাগ্য এমন এক স্তর যে স্তরে খারাপ ভালো দুটোই বিরাজ করে। হঠাৎ করে রোদ জ্বলজ্বল করা আকাশে ঘন মেঘের হাতছানি টা একটা মানুষের ভাগ্যের মতো। কখনো রোদের মতোই জ্বলজ্বল করে আবার কখনো ঘন কালো মেঘের মতোই জীবনে নেমে আসে। আর মানুষ নিজেদের জীবন বয়ে নেয় ভাগ্যের পথ চেয়ে। নিয়তি বড্ড আজব জিনিস! কাউকে হাসায় কাউকে কাঁদায়।
একসময় রিয়াবের ভাগ্য খারাপ ছিলো আজ এই ভাগ্যই তাকে এতদূর নিয়ে আসলো। যা কল্পনাই করে নি কখনো। বর্তমানে রিয়াব দাড়িয়ে আছে বাংলোর সামনে। আধুনিকতায় ভরপুর বাংলাটো তা বাইরে থেকেই দেখা যাচ্ছে। বাংলোর সামনে বাগান। সরু রাস্তা। কেয়ার টেকার দৌড়ে এসে গেট খুলে দিলো। মালামাল সব সে উপরে নেওয়ার ব্যবস্থা করবে বলেই কাজে লেগে পড়লো। দারোয়ানের অমায়িক ব্যবহারে রিয়াব মুচকি হেসে এগিয়ে গেলো। তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করতেই রিহার মুখ হা হয়ে এখলো। কাল যা যা থাকার কথা বলেছিলো সব আছে এখানে। সব যে নতুন দেখেই বুঝতে পারছে। তিনটা রুম একটা রান্নাঘর মধ্যে ড্রয়িং রুম। বেশ ভালো লাগলো রিয়াবের। রান্নাঘরটাও বেশ বড়। রিহায় মনের মধ্যে অপার্থিব কিছু অনুভূতি হচ্ছে। হয়তো অধরা কিছু ধরায় পরিণত হয়েছে বলে।
নিজেদের রুম বেছে নিয়ে দুই ভাইবোন ফ্রেশ হতে গেলো। আবার বেরোতে হবে। অনেক কিছু কেনার আছে। রিহা আজ খুব খুশি। রিয়াব ফ্রেশ হয়ে বেলকনিতে দাড়ালো।
অনিন্দিতা কে খুব মনে পড়ছে। মেয়েটা এসব শুনলে কতই না খুশি হতো। অথচ সে মেয়েটাকে একটু সুখ দিতে পারলো না। যেখানে শুধু দায়িত্বের বেড়াজালে পড়ে থাকবে সেখানেই পাঠিয়ে দিলো। হঠাৎ ই গাল বেয়ে কয়েকফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো। আর পারছে না সে। আর কত সহ্য করবে। কষ্ট কি তার পিছু ছাড়বে না। এমনটা তো হওয়ার কথা ছিলো না।
মেয়েটাকে নিয়ে তো সে হাজারটা স্বপ্ন বুনেছিলো। দুজন এক ছাদের নিচে বসবাস করবে যেখানে কোনো দুরত্ব থাকবে না, একসাথে লেপ্টে থাকবে, ভালোবাসায় ভরপুর থাকবে জীবনটা, কখনো কষ্ট পেতে দিবে না! কিন্তু কি করলো সে? শেষ পযর্ন্ত এক সাগর কষ্টের মাঝে মেয়েটাকে ছুড়ে ফেলে দিলো। একসময় রিয়াব ধপ করে নিচে বসে পড়লো। মাথার চুল খামচে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দিলো। আর সম্ভব নয় ধরে রাখা। সে ছেলে বলে কি কাঁদতে পারবে না? হৃদয়ের হাহাকার কি হৃদয়কে গ্রাস করবে?
পাশাপাশি রুম থাকায় ভাইয়ের আত্মচিৎকার কানে পৌঁছাতেই রিহার অর্ন্তআত্মা কেঁপে উঠলো। হঠাৎ কি হলো আবার! এক দৌড়ে ঘর থেকে বের হলো। ভাইয়ের এমন অবস্থা দেখে রিহার শরীর একদম অশার হয়ে গেছে। এর আগে ভাইকে এমন কোনোদিন দেখেনি। এক ছুটে ভাইয়ার সামনে বসে কাঁপা কাঁপা হাত মাথায় রাখলো। রিয়াব চোখ তুলে বোনকে দেখে মনে হলো আরো আবেগী হয়ে উঠলো। একটু ভরসার হাত পেলো। যেখানে সে নিমেষেই নিজের দুঃখটা ভাসিয়ে দিতে পারবে। বোনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। বুকে কি অসহনীয় ব্যাথা হচ্ছে। একসময় কান্না থামিয়ে উঠে দাড়ালো রিয়াব। বোনের চোখের পানি মুছে দিয়ে মুচকি হাসলো। আহ! নিজের মধ্যেই কেমন হালকা লাগছে। মনে হচ্ছে কতদিন পর ভেতরটায় আঁধার কেটে আলো নেমে এসেছে। আচ্ছা এটা কি ক্ষণিকের? জীবনের মোড় ঘুরতে তো সময় লাগে না। কখন কোন ঝড় আসে বলা যায় না। তাকে যা করতে হবে খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। হাত ফসকে একবার বের হয়ে গেলে ধরা মুশকিল!
১২.
রিয়াব বোনের পাশে পাশে হাটছে আর রিহা শপিং করছে। নিজের পছন্দ মতো সব কিনতে বলেছে রিয়াব। এত বড় শপিংমলে এসে রিহার হাসি যেন উপচে পড়ছে। নিজের পাশাপাশি ভাইয়ের জন্য অনেককিছু কিনলো। তারপর গেলো একটা রেস্টুরেন্টে। মন মতো খাবার খেয়ে এখন রান্নার সর্বপ্রকার সরঞ্জাম কিনতে এলো। সব কিছু প্যাক করে নিয়ে একটা ট্যাক্সি ভাড়া করলো। আজ এই পযর্ন্তই। এরপর বোনকে সব জায়গায় ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে। আগেই বলে রেখেছে রিহা সে ঢাকার সব জায়গা দেখবে। বোনের খুশির জন্য রিয়াব সব করতে পারে।
বাড়ি ফিরে ক্লান্ত থাকায় কথা বাড়ায় না দুজন। ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দেয়। ক্লান্ত থাকার দুচোখ জুড়ে ঘুম নেমে আসে তাড়াতাড়িই। দুঘন্টা পর রিহার ঘুম ভাঙলে ফ্রেশ হয়ে রান্নাঘর গুছানোর কাজে লেগে পড়ে। রাতের রান্নাটা করতে হবে আবার।
রিয়াব আরো আধাঘন্টার পর ঘুম থেকে উঠে অফিসের সব ডিটেইলস চেক করছিলো। একটা ল্যাপটপ ছিলো ওয়াড্রপে। এত এত সুযোগসুবিধা পেয়ে রিয়াবের মনে কোম্পানিটার প্রতি অগাধ দায়িত্ববোধের প্রভাব পড়ছে। মনে মনে পণ করেও নিয়েছে যে করেই হোক কোম্পানিটাকে আবার আগের অবস্থানে নিয়ে যাবে। রিয়াবের মুখে মুচকি হাসি ফুটে উঠলো। মনে পড়ে গেলো অনিন্দিতার সাথে সেই দ্বিতীয় দিনের কথা…
ভার্সিটি এসে না দাড়াতেই অনিন্দিতা ছুটে এলো রিয়াবের কাছে। একহাত জড়িয়ে ধরে হাটতে লাগলো। মনে হচ্ছে কত চেনা তারা দুজন। রিয়াবের মনেও ভালোলাগা কাজ করছিলো। ভালোবাসার মানুষটার সাথে সময় টুকু উপভোগ করার জন্য নিজেও সায় জানাচ্ছিলো অনিন্দিতার আবুল তাবুল কথায়। এমন সময় অনিন্দিতা বলে উঠলো,
রিয়াব প্রপোজড মি ফাস্ট!
রিয়াব চমকে তাকায় অনিন্দিতার মুখের দিকে। ঠোঁটের কোণে দুষ্টু হাসি খেলা করছে। কি স্নিগ্ধ মুখশ্রী। চারপাশ তাকিয়ে দেখে তারা দুজন বর্তমানে মাঠের মাঝখানটাই দাড়িয়ে আছে। এখন প্রপোজ করলে সবার চোখে পড়বে। রিয়াবের বুঝতে বাকি রইলো না অনিন্দিতার মনোভাব। সে যে এই মেয়েটির একান্তই নিজের মানুষ সেটিই প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছে বর্তমানে। মুচকি হেসে মাটিতে এক হাটু রেখে বসে পড়লো। হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ অনিন্দিতার চোখে দিকে তাকিয়ে রইলো। এই চোখে নিজের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছে। অগাধ বিশ্বাস, ভরসা, সুখে থাকার প্রয়াস! মুচকি হেসে বলতে শুরু করলো,
কিভাবে প্রপোজ করতে হয় জানিনা। ভালোবাসা কি, তার মূল সংঙ্গা আমার জানা নেই। গোলাপ ফুল দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করার সামর্থ্য আমার নেই, দিবস উপলক্ষ্যে দামি গিফট দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই কিন্তু বিশ্বাস করো একবার হাতটা ধরে দেখো কোনোদিন ছাড়বো না। মৃত্য পযর্ন্ত এই হাত দ্বারা তোমার কোনো ক্ষতি হবে না। সবসময় আগলে রাখবো। পার্কে ঘুরাতে পারবো না কিন্তু নিস্তব্ধ প্রকৃতিতে তোমাকে নিয়ে ডুব দিবো। নতুন ভাবে ভালোবাসার রূপ দেখাবো তোমায়। তোমার ওই হাসি আর চোখের প্রেমে তো সেই কবেই পড়ে গেছি। একটু ভালোবাসবে আমার। আমার বোনের মা হবে? ছোট্ট বোনটাকে আগলে রাখবে দুহাতে, আমি তোমাকে আগলে রাখবো। নিঃসঙ্গ রাতে সঙ্গী হবে? একসাথে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনবো। মেতে থাকবো তোমাতে। হাত বাড়িয়ে দিবে?
স্তব্দ হয়ে দাড়িয়ে আছে অনন্দিতা। রিয়াবের চোখে মুখে ফুটে উঠছে আকুলতা। ভালোবাসার আকুলতা। অনিন্দিতার মনে হচ্ছে আজ পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষ সে। হাত বাড়িয়ে দিলো অনিন্দিতা। চারপাশ থেকে করতালির শব্দে রিয়াব লাজুক হেসে উঠে দাড়ালো। অনিন্দিতা লজ্জায় তাকাতেই পারছে না কারো দিকে। প্রথম তো এমন হচ্ছিলো না। রিয়াব যে তার, কেউ যেন এই দিকে নজর না দেয় তাই তো এই পন্থা। কিন্তু এখন কেন একরাশ লজ্জা এসে ঘিরে ধরেছে তাকে। গুলুমুলু গাল দুটো লাল হয়ে আসছে। কোনদিক না তাকিয়েই রিয়াবের হাত ধরে ছুট লাগালো সে। একসময় বাগানের সাইড এসে খিলখিলিয়ে হাসতে লাগলো। রিয়া মুগ্ধ হয়ে প্রেয়সীর মায়াময়ী হাসি দেখছে। কতদিন পর সেই হাসির খিলখিল শব্দ। মনের মধ্যে আলাদা শিহরন। রিয়াবকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অনিন্দিতা ধাক্কা দিতেই রিয়াব ঘাসের উপর শুয়ে পড়লো। নিজেও অনিন্দিতার হাসিতে যোগ দিলো।
ভাইরের ঘর থেকে জোরে জোরে হাসির শব্দ শুনে রিহা চমকে উঠলো। এইভাবে তার ভাই হাসছে! দৌড়ে এসে দরজায় দাড়াতেই দেখতে পেলো অনিন্দিতার ছবি বের করে উদাসীন হয়ে হেসেই যাচ্ছে। রিহার আর বুঝতে বাকি রইলো না তার ভাই অতিতের কোনো ঘটনায় বিভোর হয়ে হাসছে। হয়তো অনিন্দিতার সাথে কিছু সুখময় স্মৃতির কথা স্মরণ হয়েছে! রিহা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রান্নাঘরের দিকে হাটতে লাগলো। ভাইকে আর বিভ্রান্তিতে ফেলতে চায় না সে।
একসময় হাসতে হাসতে নিজের অবস্থা সম্পর্কে খেয়াল আসতেই রিয়াবের মুখ মলিন হয়ে এলো। এই স্মৃতিগুলো তাকে যে সারাজীবন তাড়া করে বেড়াবে। ভুলতে পারবে না। না স্বাভাবিক ভাবে বাঁচতে পারবে। আঁখিযুগল থেকে এক ফোটা পানি গড়িয়ে ঠিক ফোনটার মধ্যে খানে পড়লো। ইশশ চোখে পানি কোনো বাঁধায় মানে না। লজ্জাহীন ভাবে উপচে পড়ে। ছেলেদের কাঁদতে আছে নাকি?
দু’একবার মনে মনে কথাটি আওড়িয়ে উঠে দাড়াল রিয়াব।
আর কাঁদবে না সে। কিছুতেই কাঁদবে না। এবার সে কাঁদাবে! একজন কে খুব করে কাঁদাবে!
কথাটি বলেই রিয়াব কিটকিটিয়ে হেসে দিলো। কি চলছে রিয়াবের মনে? কাকে সে কাঁদাবে?
চলবে….?