দূরত্ব পর্ব-৯+১০

0
183

#দূরত্ব
#part:9-10
#writer:Maliha Islam Tafsi(Jeba)

ভাবী আসবো?
রিহার কথায় বালিশ থেকে মুখ তুলে মুখে হাসির রেখা টেনে বললো- আসো(প্রীতি )

রিহা এসে প্রীতির পাশে বসল

-তুমি কি ঘুমাচ্ছিলে ভাবী?সরি,,,আমার কারণে তোমার ঘুম ভেঙে গেল।
-না গো ননদীনী এমনিতেই শুয়ে ছিলাম। কিছু বলবা?
-আসলে ভাবী,,,,,,

প্রীতি রিহার দিকে তাকিয়ে দেখল রিহা ভীষণ লজ্জা পাচ্ছে কোনো বিষয়ে । আর হাতে দুটো মুঠো করে রাখছে । প্রীতি মুচকি হেসে রিহার গালে হাত রেখে বলল-

-ভাবীর কাছে কিছু বলতে লজ্জা পেতে নেই।
-ভাবী তুমি তো আমাদের ফ্যামিলি সম্পর্কে আগে থেকেই জানো সবাই কে চিনো।
-হুম,,
-আচ্ছা ভাবী তুমি পিয়াশ ভাই কে চিনো?
-হু,,,তোমার রাহাত ভাই এর ফ্রেন্ড ।
-ভাবী,,,,, (রিহা ইতস্তত করে বলল)
-ভালোবাস তাকে? (মুচকি হেসে বলল প্রীতি)

প্রীতির কথায় রিহা চোখ বড় বড় করে বলল-
-হুম ভাবী,,,
-তাহলে এখন আমার তোমার জন্য কি করতে হবে ননদীনী?

রিহা প্রীতি কে সব খুলে বলল।
-ঠিক আছে আমি তোমার ভাইয়া কে বলব।
-সত্যি ভাবী? (একগাল হেসে)
-হুম সত্যি।
-আই লাভ ইউ সো মাচ আমার মিষ্টি ভাবী।
-আই লাভ ইউ টু ননদীনী ।

আচ্ছা এখন নিচে চলো সবাই মিলে আড্ডা দিবো।
ওকে চলো।



প্রীতি নিচে রান্না ঘরে গেল। গিয়ে দেখল তার শাশুড়ি রান্না করছে। প্রীতি কে দেখে আফসানা বেগম মুচকি হেসে বলল-
কিরে ঐখানে দাঁড়িয়ে আছিস যে আয় ভিতরে আয়।
প্রীতি ভিতরে এসে দাঁড়াল ।

-মা আমাকে বলুন আমি আপনার হেল্প করতে চাই রান্নার কাজে
-আমাকে তোর মা ভাবিস তো?
-হুম ভাবী।
-তাহলে আর কখনও বলবি না কাজ করার কথা। আমি আমার মেয়েদের দিয়ে কোনো কাজ করাবো না তারা হচ্ছে আমার রাজকন্যা । এতো সার্ভেন্ট কি আমার মেয়ে কে দিয়ে কাজ করানোর জন্য রেখেছি নাকি?তুই রুমে গিয়ে রেষ্ট নে। তুই আর রিহা হচ্ছিস আমার রাজকন্যা ।

কথা গুলো বলে প্রীতির কপালে ভালোবেসে একটা চুমু দিলেন আফসানা বেগম।

মা নতুন মেয়ে পেয়ে আমাকে ভুলে গেছো তাই না?
রিহার কথা শুনে আফসানা বেগম প্রীতি দুইজন হাসতে লাগল।



পরেরদিন খুব সুন্দর করে সাজানো হলো প্রীতি কে। পুরো শেখ বাড়ি জাকঝমক ভাবে সাজানো হলো। আজকে রাহাত আর প্রীতির রিসেপশন পার্টি । সব মেহমান চলে আসছে। সবাই খুব সাজগোজ করে নিচে নেমে এল। পিয়াশ ও এসে রাহাত এর সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলতে লাগল। রিহা বার বার দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখছে তার প্রিন্স টা কে। হঠাৎ আফসানা বেগম রিহার পাশে এসে দাঁড়াল ।

-কিরে কি করছিস?
-কই কিছু নাতো।
-আচ্ছা সব মেহমান চলে এসেছে আর প্রীতির ফ্যামিলি ও আসছে রাস্তায় আছে।
তুই গিয়ে প্রীতি কে নিচে নিয়ে আয়।
-ঠিক আছে মা।

প্রীতি তোকে তো আজকে বিয়ের দিনের চেয়ে ও বেশি সুন্দর লাগছে।
নিহার কথায় প্রীতি হেসে বলল তাই নাকি?
-হু,,,

রাহাত ভাই কে ও খুব সুন্দর লাগছে নিচে দেখে আসলাম।

নিহার কথায় প্রীতি কিছু বলতে যাবে তখনি রুমে রিহা প্রবেশ করল।
-ভাবী চলো। নিচে সবাই অপেক্ষা করছে।
-ওকে,,,,
-ভাবী আজকে তো রাহাত ভাই চোখই সরাতে পারবে তোমার থেকে । এতো বেশি সুন্দর লাগছে তোমায়। আসলে খুব খুব সুন্দর তুমি তাই তো আমার ভাই টা এতো ভালোবাসে তোমায়।

রিহা আর নিহা প্রীতি কে নিচে নিয়ে আসল। দুইজন মানুষ খুব গভীর চোখে প্রীতি কে দেখতে লাগল।
রাহাত মুচকি হেসে প্রীতির দিকে এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে দিল । প্রীতি মুচকি হেসে রাহাতের হাত টা ধরল সবাই করতালি দিতে লাগল। প্রীতি আর রাহাত কে একসাথে বসানো হলো। সবাই এসে তাদের শুভেচ্ছা জানাতে লাগল ।

প্রীতির পরিবারের সবাই এসে প্রীতির কাছে বসল।
প্রীতির পরিবারের সবাই রাহাত এর পরিবারের সাথে কথা বলতে লাগল । প্রীতির ভাই এসে প্রীতির পাশে বসল-
-কেমন আছিস পুচকি? (মুচকি হেসে নিরব)
-ভাইয়া তুমি আমাকে সবার সামনে পুচকি ডাকছো? (ভেংচি দিয়ে )
-তুই আমার পুচকি তো পুচকি বলবো।

নিরব এর কথায় মুচকি হেসে রাহাত বলল ঠিক বলেছেন ভাইয়া আপনার বোনটা আসলেই পুচকি।

রাহাতের কথায় প্রীতি রাগি লুক নিয়ে রাহাতের দিকে তাকালো। রাহাত হাসি দিয়ে বলল এইভাবে রাগ করলে তো পুচকি টার মেকআপ নষ্ট হয়ে যাবে।
রাহাতের কথা শুনে নিহা রিহা পিয়াশ নিরব সবাই হাসতে লাগল।প্রীতি গাল ফুলিয়ে বলল দাঁড়াও ভাইয়া এইবার বাসায় যেয়ে নিই তোমার আর নিহার কথা কিন্তু মাকে বলে দিবো যদি আর পুচকি ডাকো।
-তাহলে তো আরও বেশি করে ডাকবো । বোন প্লিজ তাড়াতাড়ি বলিস মাকে এইবার তোর বান্ধবী টা কে বউ বানিয়ে নিয়ে আসতে ইচ্ছে করছে। হি হি হি,,,,

হাই এভরিওয়ান,,,,,

রোহান এর বাবার কথায় সবাই ওনার দিকে তাকালো।

-আপনারা সবাই জানেন আমার বড় ছেলে রাহাত শেখ এর বিয়ের রিসেপশন পার্টি আজকে। এই খুশির দিনে আমি আরও একটা খুশির এনাউনমেন্স করতে চাই,,,

কাম মাই বয় রোহান শেখ এন্ড কাম মাই সুইট গার্ল নাজিফা ।
সবাই নাজিফা নাম শুনে চমকে গিয়ে তাকালো। একটা খুব সুন্দর মেয়ে ব্লাক কালার একটা শাড়ি পড়া স্টেজের দিকে এগিয়ে গেল। সবার চোখ আটকে আছে তাতে। অনেক মায়াবী একটা চেহারার মেয়ে টার। আজ রোহান ও ব্লাক কালার পানজাবী পড়েছে। মেয়ে টা রোহানের পাশে গিয়ে দাঁড়াল । সবার চোখ তাঁদের দিকে।
প্রীতি কিছু বুজতে পারছে না। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে।

– নাজিফা হচ্ছে আমার ফ্রেন্ড এর মেয়ে । আপানারা হয়তো জানেন না নাজিফা আর রোহান এর এনগেইজমেন্ট ঘরোয়া ভাবেই পনের দিন আগে হয়েছিল । কিন্তু আমি এখন ওদের বিয়ের ডেট ঘোষণা করতে চাই। আগামী মাসে আমার ছোট ছেলের বিয়ে নাজিফা হক এর সাথে।



নাজিফা আর রোহান এর বিয়ের কথা শুনে একটা বড়সড় ধাক্কা খেল প্রীতি। এই কি শুনছে সে?তাহলে নিহা কাল ভুল কিছু বলে নি? রোহার আমার সাথে শুধু টাইম পাস করেছে। আমি তোমাকে বুঝিয়ে দিবো রোহান শেখ যে আমি তোমার জন্য আর কষ্ট পাই না। তুমি যদি আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করে ঠকিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারো তাহলে আমি কেনো পারবো না রাহাত কে স্বামী হিসেবে মেনে নিয়ে ভালো থাকতে????? (মনে মনে কথাগুলো বলল প্রীতি)

নাজিফা সবার সাথে কথা বলে প্রীতির দিকে এগিয়ে আসল-
-কংগ্রেস,,,
-থেংকস,,,
-তুমি খুব সুন্দরী ।
-আপনি তো আরও বেশি।
অনেক্ষণ প্রীতি আর নাজিফা হেসে হেসে কথা বলল।

দূর থেকে রাহাত এর বাবা মা তাদের দেখে বললেন-
আমরা খুব লাকি। এতো ভালো দুইটা ছেলের বউ পেয়েছি। আমার সংসার টা খুব পরিপূর্ণ এখন আর নাজিফা আসলে আরও পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে।
-ঠিক বলেছো।

অনুষ্ঠান শেষে সবাই চলে গেল। প্রীতি রুমে এসে ফ্রেশ হতে যাবে তখন কেউ ওর হাত ধরে টান দেয়,,,

চলবে,,,,

#দূরত্ব
#part:10
#Writer:Maliha Islam Tafsi (jeba)

প্রীতি রুমে এসে ফ্রেশ হতে যাবে তখন ওর হাত ধরে কেউ টান দিল। প্রীতি তার না দেখেই তার স্পর্শে বুঝে গেল মানুষ টা আর কেউ নয় রোহান ।
প্রীতি চোখ বন্ধ করেই বলল কি হচ্ছে রোহান?
হাত টা ছাড়ো। রোহান আচমকা প্রীতি দেয়ালের সাথে চেপে ধরল। রোহানের প্রতিটা শ্বাস প্রীতির মুখের উপর পড়ছে। রোহান প্রীতির হাত টা চেপে ধরে রাখল। প্রীতির আর বুঝতে বাকি রইল না যে রোহান ড্রিংকস করেছে। আজ রোহান কে খুব বিরক্ত লাগছে প্রীতির কাছে। আজ প্রীতির মন বার বার বলছে অন্য কারো বউ হয়ে অন্য কাউকে ভালোবাসা পাপ আর স্পর্শ তো দূরের কথা। আর ভুলে গেলে চলবে না যে রোহান ঠকিয়েছে সে এখন অন্য কারো স্বামী হতে যাচ্ছে । নিজেকে কঠোর হতে হবে রাহাত কে ঠকাবো না আমি রোহান এর মিথ্যে ভালোবাসার জন্য । কথাগুলো ভাবতেই প্রীতি ধাক্কা দিয়ে রোহান কে সরিয়ে দিল। রোহান নিজেকে সামলাতে না পেরে পরে গেল। প্রীতি কাঁদছে আর বলছে-

আপনার কি লজ্জা নেই রোহান শেখ নিজের ভাবি কে এইভাবে ড্রিংকস করে এসে ছিঃ!!! ভুলে যাবেন না আমি আপনার ভাবি হয়। আর আপনার ভালোবাসার অভিনয়ে এখন আর আমি কাঁদি না। আর যেই মেয়ে টার সাথে আপনার বিয়ে হচ্ছে তাকে অন্তত আমার মতো ঠকাবেন না। বেরিয়ে যান আমার রুম থেকে এখনি বেরিয়ে যান।
(চিৎকার করে বলল প্রীতি)


“রোহান রুমথেকে বেরিয়ে গেল। প্রীতি দরজা লাগিয়ে ফ্লোরে বসে পড়ল।
একদম কাদবি না প্রীতি। তোকে এই মিথ্যে ভালোবাসার মায়া থেকে বের হতে হবে। তোকে মানতে হবে তুই রাহাত এর বউ। তুই একটা বৈধ সম্পর্কে জরিয়ে আছিস রাহাত স্বামী হিসেবে মানতেই হবে তোর। ভুলে যেতে হবে রোহান শেখ নামে একটা জঘন্য মানুষ তোর জীবনে কখনও ছিল (বিড়বিড় করে কথা গুলো বললপ্রীতি)



রোহান রুমে এসে দরজা লাগিয়ে কাউকে ফোন দিল-
-হ্যালো
-থেংক ইউ নাজিফা ।
-কেন রোহান?
-বিয়ের মিথ্যে অভিনয় করার জন্য ।
-রোহান আজকে কি তুমি প্ল্যান মোতাবেক ঐ কাজটা করেছ?
-হুম,,,মাত্র করে আসলাম।
-রোহান কেন করছো এমন?তুমি জানো প্রীতি তোমাকে কতটা জঘন্য ভাববে আর ঘৃণা করবে এই কাজটার জন্য?
-আমি তো চাই তাই নাজিফা।
-আমার মনে হচ্ছে তোমার সবাই কে সবকিছু বলে দেওয়া উচিত রোহান। আজ প্রীতি কে দেখে বুঝতে পারলাম ও কতটা কষ্ট পেয়েছে আমাকে তোমার পাশে দেখে। প্লিজ ওকে সবাই কে বলে দাও তাহলে প্রীতি হয়তো কষ্ট পাবে কিন্তু তোমাকে এইভাবে ঘৃণা তো করবে না।
-প্রীতি আমাকে যতো ঘৃণা করবে ততোই তাড়াতাড়ি রাহাত ভাই কে নিয়ে সুখে থাকতে পারবে। তুমি শুধু আমার সঙ্গে থাকো প্লিজ।
-আমি তোমার সঙ্গে সবসময়ই থাকবো। তুমি নিজের খেয়াল রেখো।
-ওকে,,,আল্লাহ হাফেজ
-আল্লাহ হাফেজ।




প্রীতি ফ্রেশ হয়ে নিজের লম্বা চুল গুলো ছেড়ে দিল। পুরো পিঠে ছড়িয়ে রইল চুল গুলো। বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াল।ইশশ,,,,গরম কফি খেতে ইচ্ছে করছে এখন নিচে গিয়ে বানিয়ে নিয়ে আসি বলে পিছনে ফিরে দেখল রাহাত হাতে দুই কাপ কফি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
-আপনি???
-কেন ভয়ে পেয়ে গেলে?
-না।।।
প্রীতির দিকে এক কাপ কফি এগিয়ে দিল রাহাত আর প্রীতি নিয়ে নিল।
-আচ্ছা আপনি কিভাবে জানলেন আমার কফি খেতে ইচ্ছে করছিল?
রাহাত প্রীতির পাশে এসে দোলনায় বসল।
-আমি যখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকি তখন আমারও কফি খেতে ইচ্ছে করে খুব। একবার রুমে এসে দেখলাম তুমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছো তাই নিচে গিয়ে কফি বানিয়ে আনলাম আমার মনে হলো তোমার ও হয়তো কফি খেতে ইচ্ছে করছে।
-সত্যি কফি খেতে খুব ইচ্ছে করছিল।ওমমমমম,,,আপনি তো খুব ভালো কফি বানান। অসাধারণ! !!
-থেংক ইউ ।
-এখন থেকে প্রতিদিন আমাকে কফি বানিয়ে খাওয়াবেন।
-জ্বী না,,,
-কেনো?
-একদিন আমি বানিয়ে খাওয়াবো আর একদিন তুমি ।
-ওকে ডান। বাট আমি আপনার মতো এতো ভালো কফি বানাতে পারি না।
-তা তো খেলেই বুঝবো।
-হুম,,,,

এইভাবে কথা বলতে বলতে হঠাৎ রাহাত খেয়াল করল প্রীতি কোনো কথা বলছে না। রাহাত তাকিয়ে দেখল প্রীতি রাহাতের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে।

এতো তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লো আমার বউ টা। সারাদিনের ক্লান্তি তে হয়তো তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেছে। আচ্ছা বউ এতো মায়াবী কেনো তুমি? দিন দিন পাগল করে দিচ্ছ আমাকে? ইশশ,,,তুমি কবে আমাকে ভালোবেসে বলবা তোমাকে বুকে নিতে?জানো বউ খুব ইচ্ছে করে তোমাকে বুকের মধ্যে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরে রাখতে।

(মনে মনে কথাগুলো বলে মুচকি হেসে প্রীতি কে কোলে তুলে নিল রাহাত। বিছানায় এনে শুয়ে দিল প্রীতি । তারপর কাঁথা জরিয়ে দিল প্রীতির গায়ে। রাহাত নিজেও শুয়ে পড়ল সোফায় গিয়ে )




সকালে সূর্যের আলো এসে প্রীতির মুখে পড়ল। চোখ খুলে নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করল প্রীতি।
-আমি তো দোলনায় ছিলাম বিছানায় কিভাবে আসলাম।
-কোলে করে
রাহাত এর কথায় অবাক হয়ে প্রীতি তাকিয়ে রইল।
-কি হলো?এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন বউ
-কোলে করে মানে?
-রাহাত আয়নার সামনে নিজের চুল ঠিক করতে করতে বলছে কোলে করে মানে আমি তোমাকে কোলে করে এনে শুয়ে দিয়েছি। তুমি রাতে দোলনায় আমার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছিলা। বুঝেছো বউ?
-হুম,,আসলে আমার কখন চোখ লেগে গেছে বুঝতে পারি নি আপনার কষ্ট করে আমাকে কোলে করে এনে শুয়ে দিতে হলো।

রাহাত মুচকি হেসে প্রীতির একদমকাছে এসে বলল-সারাজীবন কোলে নিতে রাজি আছি বুঝেছো বউ?
-হু,,,
-হু,,কি?
-কিছু না। আচ্ছা আপনি কথায় কথায় বউ বলেন কেনো?

-বউ কে তো বউ ই বলবো। এখন নিচে আসো রেডি হয়ে তাড়াতাড়ি নাহলে তো আমার শশুড় বাড়ি যেতে দেরি হবে?

-প্রীতি এক লাফে উঠে রাহাত এর কাছে এসে বলল -শশুড় বাড়ি মানে আমাদের বাড়ি যাচ্ছি?
-হুম,,,



প্রীতি খুশিতে রাহাত কে জরিয়ে ধরল। রাহাত অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইল বাড়ি যাওয়ার কথা শুনে এতো খুশি যে আমাকে কাছেই যেতে দেই না এখন জরিয়ে ধরেছে?😊(মনে মনে বলল রাহাত)
:
:
প্রীতি হঠাৎ খেয়াল করল সে রাহাত কে জরিয়ে ধরে আছে।তাড়াতাড়ি করে রাহাত কে ছেড়ে দিয়ে সে লজ্জায় ওয়াশরুমে ডুকে পড়ল।
রাহাত ওইখানে দাঁড়িয়ে হাসতে লাগল তারপর ওয়াশরুমের দরজা নককরে বলল-

শাড়ি কি আমি পড়িয়ে দিব নাকি রিহা কে পাঠাবো?
-রিহা কে পাঠিয়ে দিয়েন ।

:
:
রিহাতে এসে প্রীতি কে খুব সুন্দর করে একটা গোলাপি শাড়ি পড়িয়ে দিল।
-ভাবী?
-বলো?
-ভাইয়া কে বলেছো?
-সরি গো,,,কালকে একদমখেয়াল ছিল না আজকে বলবো।
-ভাবী পিয়াশ চাচ্ছে এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে যেন হয়। কারণ আর দুই সপ্তাহ পর ও চলে যাবে।
-ঠিক আছে আমি বলবো তোমার ভাইয়াকে । তুমি একদম চিন্তা করো না।

রিহা প্রীতি কে জরিয়ে ধরল।
-তুমি খুব ভালো ভাবী।
-আমার চেয়ে ও খুব ভালো তুমি ননদীনী ।

এখন চলো নিচে সবাই অপেক্ষা করছে।
ওকে চলো।


“নাস্তার টেবিলে সবাই আছে রোহান বাদে। রাহাত তার মাকে বলল-
-রোহান কোথায়?
-এখনও ঘুমায় ।
-কেনো ওর কি শরীর খারাপ মা?
আমার শরীর একদম ভালো আছে চেয়ারে বসতে বসতে বলল রোহান।
সবাই নাস্তা শেষে যার যার রুমে চলে গেলো। প্রীতি রুমে এসে বসতে না বসতেই রাহাত আসল।

-চলো আমরা শপিং করতে যাবো।
-আমরা তো বাসায় যাবো এখন।
-বাসায় কি খালি হাতে যাবো নাকি?
-তাহলে কিভাবে যাবেন?
-আমার বউ টা এখনও সত্যিই একটা পুচকি । সবার জন্য গিফট কিনবো। এখন চলো আমার সাথে।
-আমি পুচকি???😠
-না বউ। তুমি যদি এখন রাগ করো তাহলে কিন্তু দেরি হয়ে যাবে যেতে।
-ওকে চলুন।

রাহাত আর প্রীতি মিলে প্রীতির পরিবারের সবার পছনদমতো গিফট কিনলো তারপর বাসায় এসে প্রীতি আর রাহাত রেডিহয়ে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হলো প্রীতির বাসায় যাওয়ার জন্য ।


চলবে,,,,,,,,