পরকীয়ার শেষ পরিণতি পর্ব-০২

0
323

#পরকীয়ার_শেষ_পরিণতি
#পর্ব_২
#Shimul

বাসার দিকে রওনা দিলাম। বাসার গেটের কাছে এসে আমি তো অবাক হয়ে গেলাম, একটা সাইকেল বাসার গেটে রাখা। আর সাইকেল টা কার সেটা আমিও জানি,
সাইকেল টা হল সাব্বিরের আমার ছেলের প্রাইভেট মাস্টার। কিন্তু সে এ অসময় আমার বাসায় কেন? আমি আস্তে আস্তে বাসার ভিতরে ঢুকতে লাগলাম।

বাসার ভিতরে ঢুকে তো শরীর রাগে ফুলতে লাগল।

কারণ আমার স্ত্রী আর সাব্বির বারান্দায় দাঁড়িয়ে হেসে হেসে কথা বলছে।

গত 15 দিন যাবত আমার সাথে মনে হয় এভাবে হেসে এক মিনিটও কথা বলেনি। আমাকে দেখে একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল, সাথে সাথে মুখের হাসি বন্ধ হয়ে গেল। আমি মনে হয় এসে তাদের কথাবার্তার নির্ঘাত বারোটা বাজিয়ে দিয়েছি?

সাব্বির আমাকে দেখে বলল,,,,,,,,,

“আরে স্যার কেমন আছেন”

আমিও উত্তর দিলাম,,,,,,,,

“এইতো আলহামদুলিল্লাহ ভালো, তুমি কেমন আছো”

“জি স্যার ভালো”

“তো এ অসময়”

“আসলে স্যার এদিক দিয়ে একটু বাজারে যাচ্ছিলাম, তাই ভাবলাম দেখা করে যাই”

“ভালো করেছো, চলো ভিতরে চলো চা খাবে”

“না স্যার আজকে খাব না, আজকে বাজারে জরুরী একটু কাজ আছে”

“আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে যাও”

বলে আমি আমার রুমে এসে ল্যাপটপ এ কিছু কাজ করতে লাগলাম। এমন সময় আমার বউ এসে হাজির, এসে বললো,,,,,,,,,,,,,

“কি হলো আজকে অফিসে যাবা না”

“নাহ আজকে ভালো লাগতেছে না, অফিসের কিছু কাজ আছে সেগুলো ল্যাপটপের সেরে নেব”

সাথে সাথে মুখটা কালো করে আমার রুম থেকে চলে গেল। আমি ল্যাপটপ এর কাজ রেখে, তার পেছন পেছন গেলাম এবং তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম আর বললাম,,,,,,,

“কি হলো মুখটা কালো করে চলে আসলা কেন”

“এমনি”

“চলো আজকে তোমাকে নিয়ে শপিং করব”

“না আমার শপিং করতে ভালো লাগেনা”

আমি কথাটা শুনে অবাক হয়ে গেলাম,,,,,,

“কি বলো আগে তো সাপ্তাহে একদিন শপিংয়ে না গেলে আমার সাথে রাগ করে কথা বলতে না আর এখন ইদানিং কি হয়েছে তোমার”

“কিচ্ছু হয়নি আমার শপিং করতে ভালো লাগে না, তাই শপিংয়ে যাব না” একটু বিরক্তি নিয়ে কথাটা বললো।

“আচ্ছা ঠিক আছে তুমি না যেতে চাইলে জোর করব না। রুমে এসে ল্যাপটপে কাজ শুরু করে দিলাম।

দুপুর ২ টায় ছেলেকে স্কুল থেকে বাসায় নিয়ে আসলাম। এসে ফ্রেশ হয়ে দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে বউকে বললাম,,,,,,,,

“চলো আজকে বিকেলে ঘুরে আসি”

বউ একরাশ বিরক্তি নিয়ে এমন ভাবে না করল, যেন তাকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছি।
তাই বাধ্য হয়ে রুমে এসে বিছানায় গাটা এলিয়ে দিলাম। বুঝিনা কি জন্য এখন সবকিছুর মধ্যে বিরক্তি তার ভাব প্রকাশ করে।

কিছুক্ষণ পরে আমার ছেলে আমার রুমে এসে বলতে লাগল,,,,,,

“আব্বু আব্বু”

“কি হয়েছে বাবা”

“স্যার এসেছে, কিন্তু আজকে আমি স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়বো না”

“কেন বাবা”

“আজকের সারা বিকাল তোমার সাথে ঘুরবো”

“না বাবা সামনে তোমার পরীক্ষা না, প্রাইভেট না পড়লে পাশ করতে পারবা। আরেকদিন তোমাকে ঘুরতে নিয়ে যাব”

“না আমি আজকে যাব”

কি করব ছেলের জোরাজুরিতে বাধ্য হয়ে রাজি হলাম।আসলে আমি এজন্য যেতে চাচ্ছিলাম না, যে আমার বউ ঈশিতা যাবে না।

আমি ছেলেকে নিয়ে ড্রইং রুমে আসলাম, এসে দেখি সাব্বির বসে আছে। আমি সাব্বিরকে বললাম,,,,,,,

“সাব্বির আজকে ওকে নিয়ে একটু ঘুরতে যাব, তুমি বরং আজকে চলে যাও”

সাব্বির উঠে চলে যাচ্ছে। পিছন থেকে আমর বউ সাব্বির’কে ডাক দিল, দিয়ে বললো,,,,,,,,,,,

“কি হলো সাব্বির চলে যাচ্ছো কেন”

“আজকে ভাইয়া রোহান কে নিয়ে নাকি ঘুরতে যাবে, তাই চলে যাচ্ছি”

“আচ্ছা ঠিক আছে তো চা খেয়ে যাও”

“না আজকে চা খাব না, প্রতিদিনের তো আসতে হয় পড়ে না হয় খাব” বলে চলে গেল।

বিকাল ৫ টা ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। বউকে অনেক করে বললাম আসার জন্য, কিন্তু ওর নাকি শরীর ভালো লাগতেছে না, আসতে পারবে না।
কি করার তাই বাধ্য হয়ে ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। জানিনা ওর ভিতরে এরকম পরিবর্তন কি জন্য, আগে সাপ্তাহে একদিন ঘুরতে না নিয়ে গেলে দুদিন আমার সাথে রাগ দেখিয়ে কথা বলত না।
আর এখন আমি নিজে বলি ঘুরতে যেতে, কিন্তু সে বিভিন্ন অজুহাত দেখায়।

বাবা ছেলে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করলাম। বাসায় এসে ছেলেকে বললাম পড়তে বসতে। আমি আমার রুমে এসে দেখি বউ এমন ভাবে শুয়ে আছে, স্বামী-স্ত্রীর দৈহিক মিলন করার পর যে অবস্থা হয় সে অবস্থায়। শাড়ি আওলা জাওলা করে শরীরের পেছানো, চুলগুলো এলোমেলো, ঠোটে লিপিস্টিক আঁকা বাঁকা হয়ে আছে।

আমি তা দেখে ওঁকে বললাম,,,,,,,,

“তোমার এই অবস্থা কেন”

সে উঠে শাড়িটা শরীরে পেছাতে পেছাতে বললো,,,,,,

“আসলে তোমরা চলে যাওয়ার পর মাথাটা প্রচন্ড ব্যথা করছিল, ব্যথার তাড়নাই নাই কখন যে আউলা যাওলা হয়ে ঘুমিয়ে পরেছি বলতে পারি না”

আমি তার চোখে বিন্দুমাত্র ঘুমের লক্ষণ দেখতে পাইনি, মানুষ ঘুম থেকে ওঠার পর তার চেহারায় ঘুমের একটা ভাব থাকে। কিন্তু আমার স্ত্রীর চেহারায় ঘুমের কোন ভাবে নাই, সে আমাকে বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা বলেছে সে ঘুমিয়ে ছিল।

রাতে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
আজকেও তাকে কাছে টানার চেষ্টা করেছি, সে একই কথা তার শরীর ভালো না। আমিও আর কিছু বলতে পারি না, কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করা যায় না।

সকালে উঠে ছেলেকে ইস্কুলে পৌঁছে দিয়ে, আমি অফিসে চলে গেলাম।

সন্ধ্যায় বাসায় এসে দেখি, ছেলে বারান্দায় বসে কান্না করছে। আমি ছেলের কাছে গিয়ে বললাম,,,,,,,,

“কি হয়েছে বাবা কান্না করে কেন”

ছেলে আমাকে জড়িয়ে ধরে আরো জোরে জোরে কান্না করতে লাগল, কান্না করতে করতে হিচকি উঠে গেছে। আমি ছেলেকে বুকে জড়িয়ে বললাম,,,,,,,

“কি হয়েছে বাবা, বল আব্বুকে বল”

কিন্তু ছেলে হেঁচকি ওঠার কারণে কথা বলতে পারছে না। আমি ছেলেকে কোলে নিয়ে কপালে চুমু দিয়ে বললাম,,,,,,,,,,,,

“কি হয়েছে বল আব্বুকে, তোমার আম্মু মেরেছে”

ছেলে কান্না করতে করতে মাথা নাড়িয়ে বলল “হ্যা”

কোথায় মেরেছে দেখি, ছেলে বাম গালটা দেখালো। আমি তো এতক্ষণে খেয়াল করি নাই, গালে পাঁচ আঙ্গুলের দাগ পড়ে গেছে। ছোট বাচ্চাকে এত জোরে থাপ্পড় মারে, আমি ছেলেকে বললাম,,,,,,,,,,,,

“তুমি কি কিছু করেছো, যে তোমাকে এত জোরে থাপ্পর দিয়েছে”

ছেলে কান্না করতে করতে বললো,,,,,,,,,,

“আমি কিচ্ছু করিনি আব্বু”

“তুমি কিছু না করলে তোমাকে এত জোরে থাপ্পর মারবে কেন, তুমি নিশ্চয়ই বড় ধরেন কোন দুষ্টামি করেছো”

“না আব্বু আমি কোন দুষ্টামি করি নি, আমি সত্যি কথা বলছি”

“আচ্ছা ঠিক আছে চলো”

আমি আমার ছেলেকে নিয়ে রুমের ভিতরে গেলাম। যেয়ে দেখি বউ শরীরে চাদর দিয়ে শুয়ে আছে, আমি তো বুঝতে পারি না অসময়ে শুয়ে থাকার মানেটা কি?

বউ আমার আসা টেরপেয়ে বিছানা থেকে উঠতে যাবে, আমি বউয়ের দিকে তাকিয়ে তো আমার চোখ ছানাবড়া। কারণ বউয়ের শাড়ি সম্পূর্ণ ভাবে খোলা, বুকে অন্য কোন কাপড় নেই। চেহারা কি রকম এক ফ্যাকাশে দেখা যাচ্ছে। আমি এগুলার কথা জিজ্ঞাসা না করে বউকে বললাম,,,,,,,,

“তুমি ছেলেটা কে এভাবে থাপ্পর দিয়েছো কেন”

“তোমার ছেলে দিনদিন বাঁদর হচ্ছে, আমার একটা কথা শুনেনা। দুষ্টমির শেষ চূড়ায় পৌঁছে গিয়েছে এজন্য থাপ্পড় দিয়েছি”

“কি এরকম দুষ্টুমি করেছে যে এত জোরে থাপ্পর দিয়েছো, ছেলেটার গালে পাঁচ আঙ্গুলের দাগ পড়ে গিয়েছে”

“কী দুষ্টমি করেছে তোমার ছেলেকে জিজ্ঞাসা কর”

ছেলের দিকে তাকিয়ে দেখি ছেলে ভয় নিয়ে ওর আম্মুর দিকে তাকিয়ে আছে। ওর আম্মু ও ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ছেলেকে বললাম,,,,,,,,,,,

“কি দুষ্টুমি করেছ বাবা”

কিন্তু আমার ছেলে কোন উত্তর দেয়না, ওকে দেখে বোঝা যাচ্ছে ও অনেক ভয় পাচ্ছে।

আমি ছেলেকে কিছুক্ষণ আদর করে ঘুম পারিয়ে দিলাম। তারপর বউয়ের রুমে এসে বললাম,,,,,,,,

“কি হয়েছে তোমার, কি সমস্যা”

“কেন কি করেছি আমি”

“তুমি এ অসময় এলোমেলো হয়ে শুয়ে থাকো কেন? কাপড়ের ঠিক থাকে না, কোন কিছু ঠিক থাকে না। তোমার শরীর যদি অসুস্থ হয় তাহলে আমাকে বলো, তোমাকে হসপিটাল এ নিয়ে যাব”

“আমার এরকম কিছুই হয় নাই, যে আমাকে হসপিটালে যেতে হবে। মাঝে মাঝে ভালো লাগেনা তাই ঘুমিয়ে থাকি, তাতে সমস্যা কি” রাগ এবং বিরক্তি নিয়ে বললো।

“আমি আর কিছু বললাম না, রাতে খাবার
সময় ছেলেকে ঘুম থেকে ডেকে তুললাম।
ছেলে আমাকে কিছু বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগেই আমার বউ চলে আসে। আমিও সেরকম আর গুরুত্ব দিইনি।

পরপর দু’দিন চলে গেল। এই দুই দিন প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাসায় এসে দেখি, বউ আওলা জাওলা হয়ে শুয়ে থাকে। কাপড় চোপড় কোন কিছুই ঠিক থাকে না, আমিও তেমন কিছু বলি না। হয়তো ভেবে নেই অসুস্থ।

এর পরের দিন ভোরের সিক্ত সকাল শুরু হওয়ার আগেই নিঝুম ধারায় বৃষ্টি পড়তে লাগলো। বৃষ্টি মনে হয় পৃথিবীকে অন্ধকারাছন্ন করে তার জল দিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে সাগরের পট ভূমিকাতে।

আস্তে আস্তে রাত তার অন্ধকার কাটিয়ে, ভোরের আলো কে নিমন্ত্রণ জানিয়ে। অন্ধকার হারিয়ে যাচ্ছে শূন্য কোন এক অজানা পথে, তার সাথে সাথে বৃষ্টির ও বেগ কমতে লাগলো। যখনই ভোরের আলো উঁকি দেবে, তখনও ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়তে লাগলো।

আজকে মনে হয় আর অফিসে যাওয়া হবে না। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা বানিয়ে ছেলের রুমে গেলাম, ছেলে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ঘুমন্ত অবস্থায় ছোট বাচ্চাগুলোকে এত সুন্দর কেন লাগে, মনে হয় বিছানার মাঝখানে কোন এক পদ্ম ফুল ফুটে আছে। আমি আস্তে করে ছেলের কপালে একটা চুমু খেলাম। সাথে সাথে ছেলের ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছে। তারপর আমাকে জড়িয়ে তার পাখির মত ছোট্ট ঠোঁট দিয়ে বলতে লাগলো,,,,,,,

“আব্বু আজকে তো বৃষ্টি আজকে আমি স্কুলে যাব না। আমি ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু দিয়ে বললাম ঠিক আছে আব্বু”

সকাল 9 টা সূর্য তার আলো দিয়ে পৃথিবীকে আলোকিত করতে মেঘের সাথে তুমুল যুদ্ধ লেগে গিয়েছে। হয়তো অল্পক্ষণের জন্য মেঘের জয়ী হবে, আবার অল্প কিছুক্ষণের জন্য সূর্যর জয়ী হবে। অদল বদল করে মেঘ আর সূর্য আজকের দিনটাকে গুড় অন্ধকার আর আলো মিলে ফ্যাকাসে করে ফেলেছে।

সকালে নাস্তা করে ছেলেকে নিয়ে ঘুমের দেশে হারিয়ে গেলাম। বেলা 12 টায় মোবাইলের টিং টিং কোন শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল, ফোনটা রিসিভ করার সাথে সাথে বস বলতে লাগলো,,,,,,,,,

“হ্যালো, কোথায় তুমি তাড়াতাড়ি অফিসে আসো”

নিজের অনিচ্ছা শর্তেও বসের জরুরি তলবে হালকা রোদ বৃষ্টির মাঝে বেরিয়ে পড়লাম। অফিসে গিয়ে শুনি আমাদের নতুন কনট্রাকের এর সব কাগজপত্র ওলট পালট হয়ে গিয়েছে, এগুলো ঠিক করে আগামী তিন ঘন্টার ভিতরে বসের হাতে পৌঁছাতে হবে। তা না হলে ক্যানসেল দিস কন্টাক্ট।

সবাইকে যার যার কাজ দ্রুত শেষ করার কথা বলে আমি আমার কেবিনে এসে কাজ শুরু করে দিলাম। যে কাজ বাকি আছে, মনে হয় না আগামী তিন ঘন্টার ভিতরে শেষ করা যাবে। তারপরও চেষ্টা করতে হবে, তা না হয়তো কন্টাক ডিল অন্য কোন কোম্পানির হাতে চলে যাবে।

আমি খুব মনোযোগ সহকারে কাজ করতে শুরু করলাম, সময়ের দিকে খেয়ালই নাই। সময় তার নিজস্ব গতিতে ঠিকই চলতে লাগলো। ঘড়ি দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম দুপুর ২.৪০, তারপর রানিং কাজ চলতে লাগলো।

হঠাৎ করে পাশে রাখা মোবাইলে দুইটা টং টং শব্দ শুনতে পেলাম, কাজে এতটাই বিভোর যে কে মেসেজ দিয়েছে সেদিকে খেয়াল করার মনোভাব তৈরি হয়নি।

যখন পুরো কাজ কমপ্লিট হয়েছে, তখন মোবাইলটা হাতে নিলাম। মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখি, আমার খুব পরিচিত নাম্বার থেকে একটা মেসেজ। আর সেই পরিচিত ব্যক্তি টা হল আমার ওয়াইফ। মেসেজটা সিন করে পড়তে লাগলাম, জান তুমি কোথায়? আজকে আসবানা, আজকে তো বৃষ্টি হচ্ছে প্রচুর মজা হবে, তাড়াতাড়ি চলে আসো। আমি তোমার অপেক্ষায় বসে আছি।

আমার ওয়াইফ আমাকে এ মেসেজ দিয়েছে, এ মেসেজটা আমার ছয় বছরের বিবাহ জীবনে কখনো দেইনি। আর এক মিনিটও বিলম্ব না করে গাড়ি নিয়ে বাসার দিকে রওয়ানা দিলাম।

গাড়িতে বসে ঘড়িতে একবার খেয়াল করলাম ৪.৫০, পেটে প্রচন্ড খিদে লেগেছে। এতক্ষণ কাজের চাপে খিদের কথা ভুলে গিয়েছিলাম, গাড়ি খুব স্পিডে চালিয়ে গেটের সামনে এসে জুড়ে হার্ট ব্রেক কসলাম। হার্ট ব্রেক কষার কারন গেইটের সামনে একটা সাইকেল রাখা, আর সাইকেলটা নিশ্চয়ই সাব্বিরের।

সকালে অফিসে যাওয়ার আগে সাব্বিরকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছি, যে আজকে বৃষ্টি আজকে তোমার আসার দরকার নাই। আমার ছেলে আজকে প্রাইভেট পড়বে না। তাহলে সাব্বির কেন আসলো? বুকের ভিতর ধুক ধুক করতে শুরু করে দিয়েছে।

গাড়িটা গেটের কাছে রেখে আস্তে আস্তে ভিতরে ঢুকলাম, হালকা ঝিরঝির বৃষ্টি। কোথায় থেকে যেন একটা কান্নার আওয়াজ আমার কানে ভেসে আসছে, বারান্দার দিকে তাকিয়ে তো আমি থমকে
দাঁড়ালাম,,,,,,,,,,,

চলবে।