বৃষ্টিবিলাস পর্ব-১২+১৩

0
475

#বৃষ্টিবিলাস
১২+১৩
#writer_Mousumi_Akter

“আমার জন্য তোমার কাজল পরতে হবে না,
বৃত্ত কালো টিপ পরতে হবে না,
তোমার কোমর ছুঁই ছুঁই সুদীর্ঘ চুল লাগবে না,
চুলে মুখে রং,
গায়ে সুগন্ধী ছিটাতে হবে না!
আমি তোমায় ভালবাসি,
এ বেলায় মিথ্যে প্রেমের অভিনয় করতে আসিনি, তাই তোমার যা কিছু খুঁত, যা কিছু ভুল থাকুক, তাতে আমার কিচ্ছু আসে যায় না!
আর যাই হোক আমার জন্য তোমার,
ঘটা করে সাজতে হবে না,
সবচেয়ে ভালো শাড়িটা পরতে হবে না,
নিয়ম করে শাসন করতে হবে না,
যদি প্রেম না বুঝো তবে কষ্ট করে প্রেম পূজারি হতে হবে না!
তোমার যা কিছু ভুলভাল, অসুন্দর আছে তাই আমার কাছে সুন্দর, তা নিয়েই আমি দিব্যি সুখে থাকবো!
মূলত আমি তোমায় ভালবাসি, তোমার সাথে প্রেম নিয়ে তো ব্যবসা করতে আসিনি, যে দরদাম করে লাভ-ক্ষতির হিসাব কষবো।
আমার জন্য তোমার নতুন করে মিষ্টি কথা শিখতে হবে না,
শিখতে হবে না কেমন করে রাগ ভাঙাতে হয়,
কায়দা করে তলপেটের মেদ, চোখের কিনারার ভাঁজ লুকাতে হবে না!
তোমার কথার মাঝে যে বিষ,
নিয়ম ভাঙার যে দোষ আছে তাতেই না হয় আমি মুগ্ধতা খুঁজে নিব।
হয়তো ভাবছো এত্ত এত্ত দোষ, এত্ত এত্ত অনিয়ম!
তবুও এত্ত ভালবাসা!
ভালবাসা না ছাই, সবই আদিক্ষ্যেতা! দুদিন পরে কই হারাবে ভালবাসা আর কই হারাবে মধুর কথা!
সত্যি বলছি,
এগুলো আদিক্ষ্যেতা না, এরও একটা কারন আছে!
কারন,
কারন তো একটাই তোমায় আমি ভালবাসি! আর আমি তো কোনো সওদাগর নই, যে প্রেম নিয়ে সওদা করবো!
প্রেম নিয়ে যে সওদা করে, লাভ-ক্ষতির হিসাব কষে, নারীর হাজারো খুঁত খুঁজে বেড়ায়!
সে আর যাই হোক, আমার কাছে কোনো প্রেমিক হতে পারে না!”

রোজার হেচকি ততক্ষণে কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিলো রোজা নিজেও জানতো না।প্রিয়মানুষের মুখে প্রিয় কিছু বাক্য শুনলে মন দূর অজানায় কল্পনায় হারিয়ে যাওয়াটা মারাত্মক কোনো অন্যায় নয়।বরং মন না হারানোটায় বোধহয় মারাত্মক অন্যায়।মাথার উপর স্হির হয়ে কিরণ ছড়ানো দাঁড়িয়ে থাকা চাঁদটাও মিটিমিটি হাসছিলো।চাঁদ নিজেই আস্ত এক ভালবাসার সাক্ষী হয়ে গেলো।এত সুন্দর ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ কেউ কি আগে কখনো করেছে রোজার সামনে।রোজা এক মনে প্রার্থনা করছে এটা যেনো সত্য হয় রোজার যেনো নিছক কোনো ভাবনা না হয়।রোজা চোখ বন্ধ করে আছে।চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে শুভর তার সন্নিধ্যে এসে বলা কথা গুলো।চোখ বুজে থাকলেই বোধহয় অনুভূতিরা গহীনে গভীরে প্রবেশ করতে পারে,ভেতরে আরো বেশী তোলপাড় করতে পারে।

শুভ রোজাকে দেখছে,যেনো রাতপরী দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে।মেয়েটা কি একটু বেশী সুন্দর না।পৃথিবীতে এই মেয়েটা কি কোনো যাদু জানে।শুভ কে পুরোপুরি আসক্ত করে ফেলেছে।মেয়েটা কোনো মায়াবিনী নয়তো।নাহলে এত মায়া কোনো মেয়ের মাঝে কিভাবে থাকতে পারে।যাকে ছোয়ার থেকে বেশী অনুভব করতে ভালো।রোজাকে ভেবে শুভ অনমনে নিজের সাথে কথা বলে যাচ্ছে।

‘শুভ রোজাকে বললো,মিস ইরহাম আহমেদ রোজা কোথায় হারিয়ে গেলে,হেচকি গিয়েছে।’

‘রোজা চোখ খুলে তাকালো শুভর দিকে।শুভর মুখে হাসি,ভীষণ সুন্দর ছিলো সে হাসি।’

‘রোজা এমন বিশ্রিভাবে প্রপোজ করলাম রাগ করোনিতো।একচুয়ালি তোমার হেচকি কমানোর জন্য এমন করেছি।তুমি যেভাবে হেচকি তুলছিলো।জানো কাউকে ভীষণ ভাবে চমকে দিলে তার হেচকি চলে যায়।’

‘এটা জাস্ট হেচকি কমানোর জন্য ছিলো।মন ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো রোজার।’

‘উহু!অন্য কারণ ও ছিলো।’

‘কি কারণ।’

‘যে প্রশ্নটা তুলে রেখেছিলাম মানুষ কোন জায়গা বারবার বেহায়া সেই উত্তর টা খুজে পেলে এটাও বুঝবে।’

‘আমি সত্যি চমকে গিয়েছি শুভ।’

‘অশুভটায় তো বেষ্ট ছিলো,শুভ কেনো আবার।’

রোজার মুখে স্পষ্ট প্রেমে পড়ার হাসি।ভীষণ হাসি।প্রিয় মানুষ টা কাছাকাছি থাকলে মেয়েরা এতটা লজ্জা পায় কেনো?চাইলেও লজ্জা লুকাতে পারেনা।এই বিল্ডিং এর পাশের যে ছাদ টা সেটা এই বিল্ডিং কে ছুই ছুই হয়ে আছে প্রায়।

‘রোজা বললো চলুন না ওই ছাদটা ঘুরে আসি।বলেই রোজা লাফিয়ে অন্য ছাদে গেলো।’

‘রোজা সাবধানে যদি পড়ে যেতে।’

‘আমি পড়বো না শুভ,আপনি ও আসুন না।’

‘এখন কি এভাবে ছাদে ছাদে বেড়াবো।’

‘হ্যাঁ বেড়াবো, আমার ভীষণ ভালো লাগছে।ওয়াও আই লাভ দিস শুভ।দেখুন না একটা ছাদ থেকে আরেক টা ছাদের দূরত্ব মাত্র এক হাতের ও কম ডিফারেন্স। ‘

‘এভাবে কি শহর জুড়ে ঘুরবে রোজা।’

‘হ্যাঁ ঘুরবো তাও আপনাকে সাথে নিয়ে ঘুরবো।’

‘তোমার পিছেই তো ঘুরছি কয়েকজন্ম ধরে।’

“কি বললেন।’

‘একটু রাগানোর চেষ্টা করলাম আরকি।’

‘আমি এখন একটুও রাগ করবো না।আপনি যেটায় বলবেন আমি রাগ করবো না।’

‘আমি এখুনি তোমায় রাগিয়ে দিতে পারি।’

‘তাই চেষ্টা করেই দেখুন।’

‘তুমি তো মনে মনে আমাকে ভালবেসে ফেলেছো তাই আমার সাথেই ঘুরতে চাইছো রাইট মিস ইরহাম আহমেদ রোজা।’

‘ইয়েস রাইট,রোজা আকাশের দিকে দুই ডানা মেলে বললো,আই লাভ ইউ শুভ।এই খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে বলছি আমি তোমাকে ভালবাসি শুভ।শুভ তুমি শুনতে পেয়েছো আমি ভালবাসি তোমাকে।’

শুভ ধপাস করে ছাদে বসে পড়লো।এক্ষুণি বোধহয় হার্ট ফেইল হবে তার।এই মেয়েটা সত্যি রাগলো না।শুভর আগে শুভকেই আই লাভ ইউ বলে দিলো।রোজার মুখে মিষ্টি হাসি,দাঁত গুলো চিকচিক করছে, ঠোঁটের নিচের তিলটার জন্য রোজাকে বেশী সুন্দর লাগে।গেজ দাঁতে অসম্ভব সুন্দর টোল পড়ে রোজার গালে।এই সৌন্দর্য না দেখে কি কোনো ছেলে থাকতে পারে।শুভ ও তার ব্যাতিক্রম নয়।শুভ কে এভাবে বসে পড়তে দেখে রোজা এগিয়ে এসে শুভর পাশে বসে বললো,

‘শুভ কি হলো আপনার এভাবে বুকে হাত দিয়ে রেখেছেন কেনো?..’

‘আর তুমি বা এত সুন্দর করে হাসছো কেনো?তুমি জানো হাসলে তোমাকে একটু বেশী।’

‘আই নো শুভ আমার হাসি ভীষণ বিশ্রী।মাছ কাটার সময় বলেছিলেন।’

‘কুচ নেহি জানা তুমনে মিস ইরহাম।রাজদের বাসার নিচের এক ভাড়াটিয়া ভীষণ লুচু। তুমি হাসছিলে আর সে লুচুর মতো তোমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।তাই তোমার এই সুন্দর হাসি যেনো থামিয়ে রাখো তার জন্যই মিথ্যা বলা।তোমার হাসি একটু বেশী সুন্দর রোজা।’

‘আপনি কি সত্যি ভালো হয়ে গিয়েছেন।আজ হঠাত এত ভালো ব্যাবহার করছেন কেনো?কাহিনী কী অশুভ সাহেব।’

‘ভাবলাম অহেতুক তোমাকে রাগিয়ে লাভ নেই।যত রাগাবো তত ভুল বুঝবে।তাছাড়া এক ই বাড়িতে আছি আমরা এখন ফ্রেন্ড ই তো।কি দরকার ঝগড়া করে।তাছাড়া আর এক মাস পরে আপনার বিয়ে।বিয়ের আগে এত রাগ শরীরে পুষে নিয়ে বেড়ানো ভালো নয় রোজা।এতে তোমার একমাত্র জামাই এর কষ্ট হবে।বেচারা অধীর আগ্রহে বউ এর মুখের মিষ্টি কথা শুনবে বলে অপেক্ষা করছে।এখন আমি রাগিয়ে রাগিয়ে তেতো বানিয়ে দিলে কি হবে তার।’

‘আমার বিয়ে এক মাস পরে হওয়ার কথা ছিলো আপনি কিভাবে জানলেন বলুন তো।আপনাকে তো আমি বলি নি।’

‘কই আমি তো জানিনা জাস্ট কথার কথা বললাম আরকি।’

‘যায় হোক হওয়ার কথা ছিলো বাট হবেনা।বিকজ ওই বুইড়াকে আমি বিয়ে করবো না বলেই পালিয়ে এসছি।’

‘এভাবে পালিয়ে কতদিন বেড়াবে তুমি।এই বাসায় উপরে গেলে দশ দিন তার বেশী থাকতে তো তোমার নিজের ই লজ্জা লাগবে। আই মিন তুমি মাইন্ড করোনা।ভেবে দেখো এটা তোমার একান্ত কোনো আত্মীয়ের বাসা নয় রোজা।’

‘বাবার কাছে ফিরে যাবো। বাবা আমাকে ভীষণ ভালবাসে।আমি গেলেই বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরবে।’

‘দেখা গেলো তোমার সেই বুইড়া ও জেদ ধরে বসে আছে তোমাকেই বিয়ে করবে তার এমন ইচ্ছা।হয়তো প্রবল ইচ্ছা।’

‘ওই অশুভ লোকটার জন্য আজ আমার জীবনের এই পরিণতি।শুভ দেখুন না দূরে একটা ছাদ বাগান।ওই বাগান থেকে একটা ডালিয়া ফুল এনে দিবেন প্লিজ প্লিজ প্লিজ।’

‘না বলে নিলে চুরি করা হবেনা।’

‘প্লিজ!প্লিজ!প্লিজ শুভ।আমার ভীষণ ভালো লাগে ডালিয়া ফুল।’

পনেরো বিশ টা ছাদ পার হয়ে শুভ একটা ডালিয়া ফুল ছিড়ে রোজার খোপায় গুজে দিলো।শুভ রোজার কানে কানে ফিস ফিস করে বললো,জীবনের প্রথম চুরি এটা শুধু তোমার জন্য।

এই রাত টা শুভ আর রোজার জন্য বিশেষ রাত ছিলো।কেননা এই রাতেই দুজনের শত্রুতা মিটে বন্ধুত্বে পরিণত হলো।দুজনের মাঝে ভীষন ভাব ভালোবাসা হয়ে গেলো।গল্প করতে করতে অনেক রাত পেরিয়ে গেলো।কত গুলো ছাদ পার হয়ে কত দূর এসছে তারা ঠিক নেই।

‘শুভ প্রশ্ন করলো, রোজা আমার এই ভ্রুর দাগ নিয়ে অনেক বার বলেছো তুমি।তোমার কি কোনো স্মৃতি আছে।বিশেষ কোনো স্মৃতি।’

‘না মানে।’

‘থাকলে বলো,শুনতে ইচ্ছা করছে।’

‘আমাদের বাসা তখন মিরপুরে ছিলো।আমি বেশ ছোট তবে ছোট বেলার সব ঘটনা মনে আছে।আমাদের বেলকনির সাথে পাশের বাসার বেলকনি একদম মিশে ছিলো।ওই বাসায় একটা ছেলে থেকে।আমার থেকে বেশ বড় ছিলো।ওই ছেলেটা আমাকে বলতো এই মেয়ে তুমি এত কিউট কেনো?একদম পুতুল লাগে দেখতে।আমি বড় হলে তোমাকে বিয়ে করবো। জানেন কি পাকা ছিলো ওই বয়সে কি কেউ বিয়ের কথা ভাবে ছিঃছি।আমাকে খুব ক্ষেপাতো আর রাগ হতো আমার।একদিন একটা পাথর ছুড়ে মেরেছিলাম রাগ করে।কে জানতো ওইভাবে ভ্রু টা কেটে যাবে।ছেলেটা সাথে সাথে বসে পড়েছিলো ভ্রু চেপে ধরে।অনেক র*ক্ত পড়ছিলো। আমি ভয় পেয়ে খুব জোরে কেঁদে দিছিলাম।ছেলেটা কি অদ্ভুত জানেন নিজে ব্যাথা পেলো অথচ আমাকে বলছিলো তুমি কি রক্ত দেখে ভয় পাও।কেঁদো না প্লিজ আমার ফিউচার বউ।তোমার কাঁন্না আমি সহ্য করতে পারিনা।তার অল্প বয়সে অমন কথা শুনে আমি তো ভীষণ অবাক হতাম।তার ভ্রু কাটার পর ভয়ে আর তার সামনেই যেতাম নাহ।তার পর এক বছর পরে আমরা বাসা চেঞ্জ করেছিলাম।আর দেখা টেখা হয়নি তার সাথে।’

‘এটা কি বাচপান কা পেয়ার স্টোরি ছিলো।’

‘আরে নাহ আমি কি তখন প্রেম বুঝতাম নাকি।তবে তাকে পেলে বলতাম সরি।’

‘সে সামনে আসলে চিনতে পারবে।’

‘একটুও না তবে সে অনেক কিউট ছিলো।’

‘এরই মাঝে ফজরের আজান দিয়ে দিলো।শুভ বললো,রোজা আজান হয়ে গেলো আর আমরা বুঝতেই পারলাম নাহ।’

‘দশ মিনিট আগে না এসছি এখানে।’

‘একটা রাত কেটে গেলো আর তোমার কাছে দশ মিনিট মনে হচ্ছে।বাড়ির কেউ দেখে ফেলার আগে চলো ঘুমোতে যায়।’

বিছানায় এসেও কারো চোখে ঘুম নেই।মনে হচ্ছিলো আরো একটু সময় থাকলে ভালো লাগতো।রাত টা কি আরেক টু বড় হতে পারতো না।রাত টা এত ছোট কেনো হতে গেলো।সুন্দর সময় এত দ্রুত শেষ হয়ে যায় কেনো।মনে হচ্ছে কখন দিনের আলো ফুটবে আর দুজন দুজন কে দেখবে।ঘড়িতে রাত চার টা বাজে।দুজন মানব মানবী কারো চোখে ঘুম নেই।নিদ্রাহীন রাত সব সময় দুঃখের নয় সুখের ও হয়।বিছানায় এপাস ওপাস করতে করতে দুজন দুজনকে ভাবতে ভাবতে ভোর হয়ে গেলো।রোজার একটুও ঘুম হয়নি সারারাত।সকাল ছয়টা বেজেছে ঘড়িতে সময় দেখতে দেখতে।খুব ভোরেই রোজা বিছানা ছেড়ে উঠে আরেকটা ড্রেস পরলো।সাজতে ইচ্ছা করছে রোজার।ভীষণ সুন্দর ভাবে সাজতে ইচ্ছা করছে।একটা নীল রঙের গাউন আর চুরিদার পরে মনে হচ্ছিলো তার এখন কতগুলো নীল চুড়ি হলে সাজ টা পরিপূর্ণ হতো।কিন্তু কোথায় পাবে সে চুড়ি।শুভর চোখে কি তাকে ভালো লাগবে।কপালে ছোট্ট কালো টিপ চোখে কাজল দিয়ে ঠোঁটে হালকা লিপিস্টিক দিয়েছে।রোজা বার বার আয়না দেখছে আর লজ্জায় মুখ ঢাকছে।ইস!কি ভয়ানক লজ্জাটায় না লাগছে তার।
সোহানা আর রাজের আম্মা নামাজ পড়ে বাইরে বেরিয়েছে।ভোরে রাজের আম্মা হাঁটতে বের হয়।

–রোজা কে দেখে বললো আরে রোজা তোমাকে তো খুব মিষ্টি লাগছে।হাঁটতে যাবে আমার সাথে।

–হাঁটতে গেলে যদি শুভ উঠে যায়।তার জন্য ই তো রোজার এই সাজগোজ।

–রোজা বললো ইয়ে আন্টি আমার না খুব খুদা পেয়েছে আমি বিকালে হাঁটবো আপনার সাথে।

–তুমি খেয়ে নাও কিছু।বৌমা রোজা কে রান্নার আগে খাবার বানিয়ে দাও।রাজ শুভ ওদের জন্য ও বানাও।

–মা আমি খাবার বানাচ্ছি আপনি চিন্তা করবেন না।

রোজা বারবার উঁকি দিচ্ছে কখন শুভ উঠবে।এই নিয়ে কয়েক কোটিবার উঁকি দিয়েছে।তার চোখ দুটো যেনো বিশাল কোনো দায়িত্ব পেয়েছে কাউকে দেখার।এত অস্হিরতা কাউকে দেখার জন্য হতে পারে রোজা জীবনে প্রথমবার অনুভব করলো।

–সোহানা এসে বললো,ইয়ে রোজা একটু দেরি হলো।তোর দুলাভাই ছাড়ছিলো না।

–কেনো বউ কি সারারাত কাছে ছিলোনা।

–বিয়ে হোক বুঝবি,সারারাত কাছে থাকলেও কাছে পাওয়ার চিন্তা বেড়েই যাবে।

–রোজা এটা বিশ্বাস করে নিলো কেননা কাল সারারাত শুভ তার পাশে ছিলো তবুও মনে হচ্ছে তাকে এক্ষুণি দেখতে হবে মানে এক্ষুণি।সোহানা ডিম আর পরোটা ভাজি এনেছে।রোজার খাওয়ার কোনো ইচ্ছা ই নেই।খুদা লেগেছে এটা জাস্ট হাঁটতে না বেরোনোর অজুহাত ছিলো।রোজা প্লেটে পরোটা নিয়ে শুধু নেড়েই যাচ্ছে।

–এরই মাঝে রাজ এসে বললো,হাই পরী থুক্কু নীল পরি।

–রাজ ভাইয়া আপনিও না।

–আমি মারাত্মক ভালো জানি।এখব বলো ঘুম কেমন হলো?

–বেশ ভালো।

— বাই দ্যা ওয়ে রোজা তোমার বয়ফ্রেন্ড নেই তাইনা?না থাকলে খুব খুশি হবো।বিয়াইনসাব আমার হক আমার আগে বুঝলে।

–রোজা স্বভাব সুলভ হাসি দিয়ে বললো,ইয়ে অশুভ উনি উঠবেন না।

–কখন উঠবে ঠিক জানিনা বুঝলে।

–উনাকে একটু ডেকে দিবেন? না মানে ফোন করবো একটু।

–আমার ফোন দিয়ে ফোন করোনা নাও।

–আমার আসলে মুখস্হ নেই উনার ফোনে আছে।

–তুমি যাও ডেকে আনো।

‘রোজা রাজের প্রস্তাব টা শুনে খুব খুশি হলো।দ্রুত চলে গেলো শুভকে ডাকতে।’

চলবে???