ব্যক্তিগত সুখ পর্ব-০৪

0
253

#ব্যক্তিগত_সুখ
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ৪

মিমের এক কথায় ইমানের মুখে তালা ঝুলে গেলো। মিম বুক ফুলিয়ে ফিরে এলো নিজের ডিপার্টমেন্টে। সেখানে,
পিঠা উৎসব নিয়ে সকলে আলোচনা করছিল। মিম যাওয়ার পরে তারা মিলে পিঠা উৎসবের প্লানিং শুরু করেছে। প্লানিং শেষ করে তারা এই বিষয়ে তাদের ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান আবেদ স্যারকে জানালো। তিনি স্টুডেন্টদে’র বললেন,
– “আমি জানি তোমরা তোমাদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করবে। কাজেই, এখানে নতুন করে আমার কিছু বলার নেই। তোমরা শুধু বলবে। তোমাদের কি কি উপকরণ এবং সামগ্রী লাগবে?
এগুলো যোগান দেওয়া’ই আমার কাজ তোমরা সব ধরনের সাহায্য পাবে আমার কাছ থেকে।” অতঃপর আধ ঘন্টার একটা ক্লাস নিয়ে আবেদ সাহেব তাদের ছুটি দিয়ে দিলেন। মিম তারপর ও রাত সাতটার পর বাড়িতে ফিরেছে। ও কে দেখার জন্য রেষার শাশুড়ি বেশ তটস্থ হয়ে ছিলেন, কিন্তু,
মিম ঘরে ঢুকেই দরজা টা লক করে দিয়েছে ভেতর থেকে তবুও নুহাস গিয়ে বারবার তাকে নাম ধরে ডেকে বিরক্ত করতে লাগলো। একপর্যায়ে ফাইজান সাহেব গিয়ে রেষার শাশুড়ি কে বললেন,
– “বেয়ান, আপনি কি নূন্যতম ম্যানার্স টুকু শেখাননি আপনার ছেলেকে?”
– “আপনি রেগে যাচ্ছেন কেন বেয়াই? ক’দিন পরেই দু’জনের চার হাত এক হয়ে যাবে।” ফাইজান সাহেব তখন হাসতে হাসতে বলে উঠলেন,
– “হাসালেন আপনি, আপনার কেন মনে হলো আমি এমন একটা অপদার্থ ছেলের হাতে তুলে দেবো আমার সবচেয়ে আদরের মেয়ে টা কে?” ঝুমা মুচকি হেসে বললেন,
– “জানেন তো বেয়াই? সোনার আংটি ব্যাকা হলেও অনেক দামী।”
– “কিন্তু, আমার যে সোনা রূপা কিংবা তামা কোনো টাই দেখে মনে হচ্ছে না আপনাদের ছেলেকে দেখে। আর তাছাড়া,
আপনার নুহাস আমার মেয়ের নখের ও যোগ্য না৷ জানেন আমার মেয়ের জন্য কত ভালো ভালো ঘরের সম্বন্ধ আসে?
আত্মীয়তা করতে হলে আমি তাদের সাথে করবো। আপনাদের কাছে আমার লক্ষী মেয়ে টা কে দিতে যাবে কোন দুঃখে? ছেলে জন্ম দিয়েছেন ভালো কথা। তাকে শিখিয়ে পরিয়ে মানুষের মতোন মানুষ তৈরি করার চেষ্টা করুণ।
সোনার আংটি ব্যাঁকা হলেও অনেক দামী। এই ইউজ -লেস কথা টা বারবার বলবেন না অন্তত, আমার সামনে বসে। কারণ আমার কন্যা খাঁটি সোনা, যার- তার হাতে আমি কখনো তুলে দিতে পারবোনা তাকে”
ফাইজান সাহেবের কথায় ঝুমার কপালে দুঃশ্চিন্তার ছাপ দেখা দিলো। তখন হালিমা ফাইজান সাহেবকে ডেকে নিয়ে বললো,
– “তুমি কি সুখে দেখতে চাও না আমাদের বড় মেয়ে টা কে?” তিনি বললেন,
– “দেখো, যে গোল্লায় গেছে যাক। তাকে ফেরানোর কোনো সুযোগ নেই আমার হাতে।
তবে তার জন্য…..আমি আমার অন্যান্য সন্তানদের কষ্ট পেতে দেবো না। ওর খুশির জন্য, আমি আমার আরেক সন্তানের বলি দিয়ে দেবো। সেটা তুমি ভাবলে কোন সাহসে?
একবার ও লজ্জা করলো না তোমার? আমি ওকে বলেছিলাম, পালিয়ে বিয়ে করতে? কি হলো? হুমম?
চুপ করে গেলো কেন? বলো, শুনি তোমার আর কি কি বলার আছে?”
স্বামীর ঝাড়ি খেয়ে চুপ করে গেলেন হালিমা। কিছু ক্ষণ পর, তিনি মিমের জন্য খাবার নিয়ে তার ঘরে গিয়ে দেখলেন ফাইজান সাহেব মেয়েকে খুব যত্ন করে মুখে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে।
হালিমা মন মরা হয়ে ফিরে গেলেন, ফাইজান সাহেব মেয়েকে বললেন,
– “আম্মু, ঘরের দরজা টা লক করে রেখো ভেতর থেকে।” মিম হাসিমুখে বললো,
– “আচ্ছা।” তারপর তিনি বেড়িয়ে গেলেন মেয়ের ঘর থেকে। তখন সকাল সাতটা,
সাত সকালে মিমকে খান ম্যানশনে দেখে সবাই বেশ অবাক হয়ে গেছে। ইমান ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে এলো। আজমির সাহেব ছেলের কাছে জিজ্ঞেস করলেন,
– “বাবা,
তুমি কি বেয়াদবি করেছ মিম মামণির সাথে?”বাবার মুখে ‘মিম’ নাম টা শোনার পর যেন ইমানের টনক নড়লো। সে ভালো করে সামনে তাকিয়ে দেখলো মিম পায়ের ওপরে পা তুলে বসে আছে।
ও হঠাৎ করেই কাঁদতে শুরু করলো, এমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– “দেখুন আন্টি,
আমার এতো৷ বড় একটা সর্বনাশ করার পরে এখন আপনার ছেলে আমাকে চোখ রাঙাচ্ছে।” ইমান থতমত খেয়ে বললো,
– “দেখ বাবা, আমি মোটেও চোখ রাঙাইনি ওনাকে।
– “তাহলে কি? হুমম? বেয়াদবি করেছ ওর সাথে?”
ইমান তখন আমতা আমতা করতে লাগলো, মিম কান্নার বেগ বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
– “আঙ্কেল আপনার ছেলে না কি দেশের আইন- আদালত সব নিজের পকেটে রাখে?
আমি না কি কখনো’ই সুবিচার পাবোনা? উনি না কি আমার সাথে যাচ্ছে তাই করা’র অধিকার রাখে?
এখানে কেউ না কি আমার কথা শুনবে না? উনি ওনার বাগান বাড়িতে গিয়ে রাত কাটানোর মত এক টা নোংরা প্রস্তাব দিয়েছেন আমাকে।” এমা এবার রেগে গিয়ে বলে উঠলেন,
– “ইমান বুঝলাম, এর আগেও তুমি প্রেম করেছ বেশ কয়েকজনের সাথে। কিন্তু মিম, সে তোমার প্রেমিকা নয় আর না কল গার্ল তুমি এই ধরনের নোংরা প্রস্তাব কি করে দিতে পারো তাকে?” তুর্ণ তখন বলে উঠলো,
– “আসলেই ভাইয়া,
কেউ আমাকে এমন একটা নোংরা প্রস্তাব দিলে তুমি সহ্য করতে পারবে?” ইমান বলে উঠলো,
– “আরে ধুরর,
আমি শুধু ওনাকে ভয় দেখানোর জন্য কথা এই গুলো বলেছি। বিশ্বাস করো আমি কোনো বেয়াদবি করিনি ওনার সাথে।” মিম তখন চোখের জল মুচতে মুছতে বললো,
– “তাহলে কে আমার শাড়ি টেনে খুলে ফেলার চেষ্টা করছিল? ভূতে?” ইমান এবার লজ্জা পেতে শুরু করলো, মাথা ঠান্ডা রেখে বললো,
– “তোমার শাড়ি কখন খুললাম? হাতে লেগে কুচি গুলো খুলে গেছে।” তুর্ণ দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
– “ওহ মানুষের হাতে লেগে কুঁচি খুলে যায়? ভাইয়া? আজ এই প্রথম শুনলাম তোমার কাছে।”
ইমান তখন বোকার মতো দাঁড়িয়ে মাথা চুলকতে লাগলো আজমির সাহেব মিমের মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে বললেন,
– “বলো মা, এখন কি শাস্তি দেবো আমি আমার এই গর্ধব ছেলেটা কে?”ইমান চোখ ছানাবড়া করে মিমের দিকে তাকিয়ে রইলো, মিম বললো,
– “বেশি কিছুনা,
ওনাকে সাতদিন পথ শিশুদের আহার করাতে হবে।”
– “আর?”
– “আর কিছুনা, শুধু বলবেন উনি যেন আর কখনো বেয়াদবি না করে আমার সাথে।”
– “আর?”
– “সব সময় নিচের দিকে তাকিয়ে আমার সাথে কথা বলবে। ওনার চোখের চাওনি, যেটা খুবই বিরক্ত করে আমাকে।”
মিমের কথা শুনে মিটিমিটি হাসলেন এমা পাশ থেকে তুর্ণ বলে উঠলো,
– “মা ইস্পা বাদ, ভাইকে টাইট দিতে ওকেই আমার প্রিয় ভাবি করে আনতে হবে।” তিনি হাসতে হাসতে বললেন,
– “সে যা বলেছ।”
– “হুমম,তবে এর জন্য দু’জনের মাঝে সাপেনেউলের সম্পর্ক টা বজায় রাখতে হবে।”
– “কিন্তু তা কি করে সম্ভব?”
– “দেখ না আমি জাস্ট কি করি? শোনো, মিম আপু। ভাইয়ার জন্য এই শাস্তি গুলো অনেক, অনেক টাই কম হয়ে যাচ্ছে।”
– “তুর্ণ?”
– “প্লিজ, চেচামেচি করোনা ভাইয়া। চেঁচামেচি করলে কি তোমার অপরাধ একটুও কম হয়ে যাবে? এগুলো কোনো শাস্তির মধ্যে’ই পরেনা।
মিম আপু। আমি তোমাকে বলছি এই শাস্তি গুলোর পাশা-পাশি অন্য কোনো মনে রাখার মতোন শাস্তি তোমাকে ভাইয়াকে দিতে’ই হবে।”
মিম এবার একটু চিন্তিত হয়ে পরলো, সে একটু ভেবে চিন্তে বললো,
– “এ বাড়িতে পুলিশ ডাকলে আঙ্কেল আন্টির ফেইস লস হবে।
উনি হবেন হয়তো একটা অপদার্থ, তবে তার জন্য আমি কষ্ট পেতে দেখতে পারবোনা আঙ্কেল আন্টিকে
।”
– “তুমি না ভীষণ ভালো আপু্।” এমা বলে উঠলেন,
– “তুমি চাইলে,
দু’ চারটে চড় থাপ্পড় মে’রে শাসন করতে’ই পারো আমার বখে যাওয়া ছেলেটাকে।” তুর্ণ মিটিমিটি হেসে বললো,
– “বেস্ট পানিশমেন্ট মা।” মিম একটু ইতস্তত বোধ করে বললো,
– “আমি দুঃখিত আন্টি। বয়সে বড় একজন মানুষের গায়ে হাত তুললে সেটা অনেক বড় বেয়াদবি বলে মনে হবে।” ইমান মিটিমিটি হেসে বললো,
– “শুধু কুঁচি ধরার জন্য এতো কিছু? আগে জানলে কব্জি ডুবিয়ে খেয়েদেয়ে ফিরে আসতাম বাড়িতে।”
ছেলের কথা শুনে’ই প্রচণ্ড রেগে গেলেন আজমির সাহেব। মিম উঠে তার কান টা ভালো করে মলে দিল এই সুযোগে……..।
ইমান কানে হাত দিয়ে চোখ বড় বড় করে মিমের দিকে তাকিয়ে রইলো। মিম বললো,
– “ছোটো বোন ভেবে ক্ষমা করে দেবেন আমাকে।” ইমান রেগে গিয়ে ফুঁসতে শুরু করলো, আজমির সাহেব বললেন,
– “সাপের বাচ্চা একটা, সাপের মতোই ফোঁস ফোঁস করছে।” মিম তার কথা শুনে হাসতে লাগলো, নিজে কে সামলে নিয়ে বললো,
– “আচ্ছা, আজ আসি? আমাকে এখন যেতে হবে।” এমা তাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
– “তোমার এখুনি কোথাও যাওয়া হচ্ছেনা মা।কোনো অতিথি কখনো না খেয়ে যায়নি আমার বাড়ি থেকে। আর তুমি আমার মেয়েই মতোন,
এভাবে শুকনো মুখে আমি কি করে ছাড়ি তোমাকে?
মিম তখন আজমির সাহেবের দিকে তাকিয়ে রইলো,
তিনি বললেন,
– “হ্যাঁ মা, তুমি কিছু মুখে না দিয়ে যেতে পারবেনা এ বাড়ি থেকে। প্রয়োজনে আমি তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসবো। তোমার ভয় পাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই ইমানকে।” ইমান তখন মিটিমিটি হাসতে হাসতে নিজের ঘরে চলে এলো। সে রেডি হয়ে নিচে ফিরে এসে দেখলো সকলেই মিমকে বিভিন্ন ধরনের খাবার দাবার নিয়ে সাধাসাধি করছে।
ইমান গিয়ে চেয়ার টেনে তার পাশেই বসে পরলো সে তৎক্ষনাৎ একটা ভূবণ ভুলনো হাসি দিয়ে বললো,
– “ম্যাডাম,
এই গরিবের খানাপিনা কি; রুচবে আপনার মুখে?” মিম রুটি, ডাল, ভাজি খেতে খেতে বললো,
– “কেন নয়? আমি ব্রিটিশ ভেবেছিলাম আপনাকে।” ওর কথা শুনে হেসে ফেললো সবাই। ইমান জ্যাম পাউরুটি খেয়ে উঠে গেলো নাস্তার টেবিল থেকে। হঠাৎ আজমির সাহেবের কাছে অফিস থেকে ফোন চলে এলো। তিনি চিন্তিত মুখে মিমকে বললো,
– “আমি দুঃখিত মা,
একটা ইমারজেন্সির জন্য আমাকে এখুনি অফিসে যেতে হবে।” ইমান মুচকি হেসে বললো,
– “আমি তো আছি বাবা?
আমি না হয় ইউনিভার্সিটিতে নিয়ে যাবো ওনাকে। আর তুমি দয়া করে চিন্তা করো না আমি এতো টাও খারাপ না। এতটুকু ভরসা নিশ্চয়ই তোমার আমার ওপরে আছে?”
তিনি ছেলের কথা শুনে হাসতে লাগলেন, বললেন,
– “বলা তো যায় না, বাবা।
কখন তোমরা মাথার পোকা গুলো মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে?” বাবার কথা শুনে নিচের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে ফেললো ইমান। সে মিমকে নিয়ে রওনা হলো গন্তব্যের উদ্দেশে…….।
প্রায় বিশ মিনিটের মধ্যে ইমান মিমকে নিয়ে ভার্সিটি তে পৌঁছে গেলো। মিমের ইমানকে চুপচাপ দেখে এক
-টু সন্দেহ হচ্ছে। তবুও সে তাকে এটা ওটা নিয়ে প্রশ্ন করতে লাগলো তখন ইমান বেশ স্বাভাবিক ভাবেই বললো,
-“আচ্ছা এখন আসি? আজ আমার এক টা ক্লাস আছে।” মিম অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলো।
যদিও, তারপর সে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে এগিয়ে গেলো নিজের ডিপার্টমেন্টের দিকে।
সিড়ি বেয়ে ওঠার সময়, হঠাৎ করেই তার মেঝেতে নজর চলে গেলো। তার দেখে মনে হতে লাগলো যেন হয়তোবা কেউ ইচ্ছে করে, ইচ্ছে করেই সিঁড়িতে তেল ফেলে রেখেছে। ও খুব সন্তর্পণে,
সিঁড়ি বেয়ে তিন তলায় উঠে গেলো। পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো ইমান এদিকসেদিক তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। মিম তাকে ভেংচি কেটে নিজে’র ডিপার্টমেন্টে চলে গেলো। পরপর তিনটে ক্লাস শেষে সে বাহিরে বেড়িয়ে এসে তামান্নাকে জিজ্ঞেস করলো
– “হ্যাঁ রে, ওই নতুন ‘মাল্টা’ তোদের কেমন ক্লাস নিচ্ছে?” তামান্না হাসতে হাসতে বললো,
– “পুরোই জোশশশশশ, মানে আগুন আগুন। এবার ব্যবস্থাপনা ডিপার্টমেন্টের সবাই টপ রেজাল্ট করবে। – “মানে?”
– “তারা আসলে পড়াশোনা নিয়ে যতটা না সিরিয়াস ইমান স্যারকে দেখার পরে এক একজন বিদ্যাসাগর এর নাতনি হয়ে গেছে।” মিম তার কথা শুনে হাসতে লাগলো, সে বললো,
– “ওনার আজ আর কোনো ক্লাস আছে?”
– “সাইদুর রহমান তারিক স্যারে’র ক্লাস টা আজ ইমান স্যার নিবেন বলেছেন,
তারিখ স্যার আজ আসেননি ইউনিভার্সিটিতে।” মিম কি ভেবে তামান্না কে জিজ্ঞেস করলো,
– “আমাকে একটা বোরকা জোগাড় করে দিতে পারবি?” সে মুচকি হেসে বললো,
– “অবশ্যই বান্ধবী, কেন নয়? দু’টো স্টকে আছে।” মিম তার কথা শুনে বললো,
– “ওকে ডান,
তবে আজ আমিও ইমান স্যারের একটা ক্লাস করবো
তোদের সাথে।” তামান্না ওর কথা শুনে হাসতে লাগল
তরপর বললো,
– “ওকে ডান। আগেভাগে তৈরি হ’য়ে থাকিস, যখন তখন ইমান স্যারের ক্লাসের ডাক পরে যাবে।” মিম তামান্নার কথা মতোই তৈরি হ’য়ে রইলো। তারপর সে সময় মতো ওদের সাথে চলে গেলো ইমানের ক্লাস করতে…..।
ক্লাস শুরু হলো, ইমান প্রথম থেকেই খুব সুন্দর করে সকল পরা বুঝিয়ে দিচ্ছে। পড়া বোঝানো শেষে সে একে একে সকলের কাছেই এম.সি.কিউ জিজ্ঞেস করতে লাগলো। প্রশ্ন করতে করতে সে এসে থামলো মিমের কাছে মিম প্রস্তুত হয়েই ছিলো। কিন্তু, ইমান তাকে কোনো প্রশ্ন না করে।
প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলো,তার পাশে বসা মেয়েটির কাছে মিম যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো সে নিচে তাকিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। ইমান ক্লাস শেষ করে বেড়িয়ে গেলো। মিম রুম থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পর,
হঠাৎ কেউ একজন নটেনে হিঁচড়ে বাথরুমের মধ্যে নিয়ে গেলো তাকে। মিমের যেন দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম? সে নিজেকে কিছুতে’ই ছাড়াতে পারছেনা এই বলিষ্ঠ বাহুডোর থেকে।
ও নিজেকে ছাড়ানোর জন্য, আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগলো। অবশেষে সে ব্যার্থ হয়ে চুপটি করে দাঁড়িয়ে পরলো এক পাশে।
অতঃপর সে মুখ তুলে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি ‘র মুখের দিকে তাকালো। সে যেন একটা বড় সড় ধাক্কা খেলো ইমানকে দেখে……………… ইমান একটু একটু করে মিমের দিকে এগোতে লাগলো। মিম ভয়ে চুপচাপ,
ওয়ালের এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে। সে চোখ বুঝে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেললো। ততক্ষণে ইমান, ওর খুব কাছে চলে এসেছে। তার পালানোর কোনো পথ নেই। ইমান এগিয়ে এসে আচমকা ওর মুখের ওপর থেকে নিকাব টা তুলে জিজ্ঞেস করলো,
– “আমার ক্লাস করানোর ধরন টা আপনার পছন্দ হয়েছে?” মিম খুব ভাব নিয়ে বললো,
– “জ্বি নাহ,
কোনে পদের না।”
– “হুমম, আসলে তা কেন হতে যাবে? আপনি হলেন আইনের লোক আর আমি হলাম ব্যবসায়ি। যাগগে,
ক্লাস করার জন্য এমন চোরামি কে করতে বলেছে আপনাকে?
আপনাকে আমার শ্রেণিকক্ষে স্বাগতম, যখন মন চায় তখন’ই না হয় চলে আসবেন ক্লাসে? আমি কোনো বাঘ ভাল্লুক নই, খেয়ে ফেলবো না আপনাকে।”

চলবে,,,