ব্যক্তিগত সুখ পর্ব-০৬

0
212

#ব্যক্তিগত_সুখ
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ৬

– “সে সব কি তোমার আগে মনে থাকে না? আর রেষা এসব কি শুরু করেছে?
তুমি আমার মেয়েকে ও বাড়িতে বিয়ে দিতে চাইছ? হুমম, কেন সাহসে?”
– “আমার কথা শোনো।”
– “কি শুনবো? নতুন করে তোমার আর কি বলার আছে? তোমার জামাই না কি খুব ভালো ছেলে? এত ভালো যখন,তখন সে গিয়ে থাকুক না ভালোর সাথে।
আমার কাছে কি চাই? ও কি চাইতে এসেছে আমার কাছে?”স্বামীর এমন প্রশ্নে স্থির হ’য়ে দাঁড়িয়ে রইলেন হালিমা।
ফাইজান সাহেব গিয়ে অনেক ডাকাডাকি করার পরেও মিম বের বের হ’য়নি ঘরে থেকে। তিনি মন খারাপ করে ঘরে ফিরে এলেন। ইসাত গিয়েও ডাকা- ডাকি করে বোনকে বের করতে পারেনি ঘর থেকে। তাই তার সমস্ত রাগ গিয়ে নয়নের ওপর পরলো। নয়ন বললো,
– ” আমি কি জানি ভাইয়া?
সব তো বড় আপু আর মা করেছে।” এতটুকু শুনেই, সে দু’জন কে গিয়ে ধমকাতে লাগলো।
দীপ্ত রেগে গিয়ে দু-চার কথা শুনিয়ে দিলো মা-বোন কে………বাড়ির পরিবেশ এখন শান্ত। হালিমা খাবার
টেবিলে নিয়ে বসে আছে। ইসাত গিয়ে বোনের জন্য খাবার বাড়তে লাগলো, দীপ্ত বললো,
– “ভাইয়া তুই খাবার নিয়ে আয় আমি ওকে বের করছি রুম থেকে। আর মা, তুমি দয়া করে বাবাকে খেতে দাও।
রেষাকে বলে দাও, ও যা চাইছে তা করা একে বাইরে অসম্ভব আমাদের পক্ষে। ওর খুশির জন্য আমরা কখনো বোনুকে কষ্ট দিতে পারবোনা নিজের দোষে’ই আজ ও….ওই রকম একটা পরিবারে গিয়ে পরেছে।
কাজেই, ওর দুঃখ ঘোচানোর দায় মেঝোর না আর আমরা দু’ই ভাই বেঁচে থাকতে এমনটা কখনো হতে দেবো না ওর সাথে।”
– “আমি কি তোদের বোন না?”
– “হ্যাঁ বোন, তবে তোমার জন্য আমরা কখনো কষ্ট দিতে পারবোনা ওকে। তোমার জন্য যদি ওকে কষ্ট পেতে হয় ওর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয় তাহলে উই আর সরি।”
তারপর, ইসাত দীপ্ত উপরে চলে এলো মিমের কাছে।
লাবণি দু’জনের কাণ্ডকারখানা দেখে হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করলো,
– “এখন তোমরা দরজা কি করে খুলবে?” ইসাত ওর চুল থেকে এক টা কালো ক্লিপ খুলে নিয়ে সে টা বাঁকাতে বাঁকাতে বললো,
– “ইট’স ম্যাজিক, এখুনি দেখতে পাবে।”অনেক চেষ্টা ‘র পর তারা দরজা খুলতে সক্ষম হলো। মিম মশা মা’রার ব্যট নিয়ে দু’ই ভাইয়ের পেছন পেছন ছুটতে ছুটতে বললো,
– ” ওই আমার ঘরের দরজার লক টা নষ্ট করতে কে বলেছে তোমাদের দু’জনকে?”ওরা দু’জনে ছোটাছুটি করে বেশ কিছুক্ষণ পর, বোনের কাছে ধরা দিলো। মিম তাদের উওম-মাধ্যম দিতে দিতে বললো,
– “কাজ টা কি ঠিক করলে তোমরা বলো আমাকে?”
– “না বলতাম না, মা’র খেতে খেতে মুখ ব্যাথা হয়ে গেছে।” মিম দীপ্তর কান টেনে বললো,
– “মারলাম তোমার পিঠে আর তোমাদের মুখ ব্যাথা করছে? এটা কিন্তু একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে।” ইসাত এই সুযোগে বোনের মুখে গ্রাস তুলে দিলো দীপ্ত বোন এর হাত পা চেপে ধরে বললো,
– “না খেলে কিন্তু এভাবেই ঘরে বেঁধে রেখে যাবো তোমাকে।” অগ্যতা,
মিম তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও খেতে লাগলো। তারপর, তিন ভাই বোন মিলে আড্ডা দিতে লাগলো এক সাথে বসে। এদিকে, ইমান বেশ মন ম’রা সে ভেবেই পাচ্ছে না মেয়ে টা হঠাৎ করে কোথায় গায়েব হয়ে গেছে? তবে কি সত্যি’ই বিয়ে করে নিয়েছে মেয়ে টা সংসার শুরু করেছে অন্য কারো সাথে। এ সব চিন্তা করতে করতে তার দু’চোখ জুড়ে ঘুম নেমে এলো। সে স্লিপিং পিল’স খেয়েছে বেশ কিছুক্ষণ আগে।
আজমির সাহেব ছেলেকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলেন। ইমান ঘুমের মধ্যে বাবার হাত চেপে ধরে জিজ্ঞেস করলো,
– “মিম, একটু ও কি ভালোবাসা যেত না আমাকে? না কি আমি তোমার যোগ্য না?
শুনলাম, বিয়ে করেছ তুমি? নিজের পছন্দে? তোমার আমার ওপরে এতো কিসের ক্ষোভ? কেন নিজের যোগ্য বলে তুমি মনে করতে পারলেনা আমাকে? কি দোষ ছিল আমার? বলো না বলো? ছয় মাস পরে হঠাৎ করে কেন আবারও কেন ফিরে এলে আমার লাইফে?
আমি নিজেকে সামলে নিয়ে ছিলাম, মানিয়ে নিয়ে ছিলাম। কিন্তু তুমি আবারও এলোমেলো করে দিলে আমাকে….!” ছেলের কথা শুনে, তার মাথার কাছে’ই বসে রইলেন আজমির সাহেব। তুর্ণ তাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– “বাবা, আমি নিশ্চিত। ভাইয়ার নিশ্চয়ই কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। কারণ, মিম আপুর কাজিন মুন আমার’ই ক্লাসমেট,
এমন কিছু হলে ও নিশ্চয়’ই বলতো আমাকে?”
তখন ইস্পা এগিয়ে এসে বললো,
– “বড় খালু, মেয়ে টা যেই হোক না কেন? তোমাদের ভাইয়ের বউ করে আনা উচিত তাকে। হ্যাঁ, এখন হয়তো ওই মেয়ের, ভাইয়ের প্রতি কোনো অনুভূতি নেই……..কিন্তু, একবার বিয়ে টা হ’য়ে গেলে স্বামীর আদর, আহ্লাদ পেয়ে সবটা ভুলে যাবে।” ইস্পার কথা
-য় সহমত হলো সবাই,সে তুর্ণ কে জড়িয়ে ধরে বলল
– “জানিস বোন, আমার ওই মেয়ে টা কে খুব করে দেখতে ইচ্ছে করছে। ও নিশ্চয়ই অনেক বেশি সুন্দর দেখতে?” তুর্ণ ওর কথা হেসে উড়িয়ে৷ দিলো, ও আসলে চাইছেনা এই মুহুর্তে ইস্পাকে মিমের ব্যাপারে জানতে দিতে।
পরেরদিন, সকাল সকাল ইমান ওর এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে হাজির হলো। বন্ধুর মেয়ের জন্মদিনের জন্য তাকে যেতে হয়েছে সেখানে সবাই মিলে যে যার মতো আনন্দ করতে লাগলো,আকিব ইমানকে বলল,
– “এখনো আয়োজনের কিছুই হয়নি বন্ধু রাতে সকল নিমন্ত্রিত অতিথিরা হেসে হাজির হবে।”
– “তোর বাড়ি থেকে কেউ আসবে না?”
– “আসবে বলতে সবাই খুব ব্যস্ত আছে মামাতো ভাই দীপ্তকে বলেছিলাম ও বোনকে নিয়ে আসবে। এসে ওর ও দাঁড়ানোর মতোন সময় নেই।
বোনের ও ভার্সিটিতে ক্লাস আছে। কোনো মতে অনু -ষ্ঠান টা শেষ করে ওরা আবারও রওনা হবে। কি বলি বল?
চাইলে ও পারবো না বোনটা কে বেঁধে রাখতে। মেয়ে টা আবার ফুফি অন্ত প্রাণ। আয়াসের জন্যই মেয়ে টা কে পড়াশোনা বাদদিয়ে কুমিল্লা আসতে হচ্ছে” ইমান তার কথা শুনে হাসতে লাগলো, সে বললো,
– “তোর সব আত্মীয়স্বজন যখন ঢাকায়,তখন তোকে কুমিল্লায় এসে কে বাড়ি করতে বলেছে?”
– “কি বলি বল?
নিজের বোকামির জন্য এখন নিজেকে’ই পস্তাতে হচ্ছে।”ইমান তার কথা শুনে হাসতে লাগলো। ওদিকে দীপ্ত, মিমকে নিয়ে রওনা হয়েছে কুমিল্লার পথে। পথিমধ্যে তাদের গাড়িতে কিছু সমস্যা হওয়ায় তাদের পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধ্যা সাতটা বেজে গেলো। মিম এসেই ফ্রেশ হয়ে আয়াসকে সময় দিচ্ছে। আয়াস তার ফুফিকে পেয়ে ভীষণ খুশি। সে তার কোলে উঠে গলা জড়িয়ে বসে আছে। ততক্ষণে, রাই মেয়ের জামাকাপড় নিয়ে এলো। ননদকে বললো
– “বোন, এগুলো ওকে পরিয়ে একটু উদ্ধার কর আমাকে।”
মিম আয়াশকে তৈরি করতে লাগলো। ইমান আয়াস এর খোঁজ নিতে এসে দরজা নক করে রাইমাকে জিজ্ঞেস করলো,
– “ভাবি আয়াস কি করছে?” রাই বাহিরে বেড়িয়ে এসে বললো,
– “ও ওর ফুফির কাছে রেডি হচ্ছে ইমান ভাইয়া৷ ফুফি ফুফি করে কেঁদেকেটে মেয়ে আমার চোখ নাক মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে।”
ইমানের নাম শুনে যেন কিঞ্চিৎ ঘাবড়ে গেলো মিম। কণ্ঠস্বর শুনে তার ভয় দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। মনেমনে সে ইমানের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলো। ইমান দরজা নক করে ভেতর আসার জন্য পারমিশন চাইলো মিমের কাছে।
মিম তাড়াতাড়ি একটা সার্জিক্যাল মাস্ক পরে নিলো ইমান রুমে ঢুকতে না ঢুকতেই একটা জরুরী ফোন কল চলে এলো তার কাছে কল রিসিভ করে সে কথা বলতে বলতে বাহিরে চলে গেলো। মিম এই সুযোগে আয়াস কে নিয়ে হাজির হলো স্টেজে……..কথা শেষ করে ইমান হাসি মুখে দীপ্তের কাছে এগিয়ে গেলো। সে জিজ্ঞেস করলো,
– “একটা কথা বলুন তো ভাই কোথায় দেখেছি আপনাকে?” দীপ্ত মিটিমিটি হেসে বললো,
– “মনে করার চেষ্টা করুণ, ব্রেইনে জোর দিন আশা করি চার-পাঁচ ঘন্টার মধ্যেই মনে পরে যাবে?” ইমান একটু চমকে গেলো, তার নজর গেলো মিমের দিকে। তাকে চিনতে না পারলেও ইমান মিমের সাথে অনেক কিছু মিল খুঁজে পেলো। তার মনে হতে লাগলো যেন সে এখানেই আছে……।
কেক কাটার কিছুক্ষণ আগে আয়াসের সকল বন্ধুরা চলে এলো। মিম তখন নাইফ নিয়ে ফিরে আসার সময় দেখলো, ইমান দীপ্তের সাথে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে।
ও চুপটি করে দু’জনের পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো কারণ সে দু’হাত পেছনে বেধে দাঁড়িয়ে ফোন টাকে ও ওভাবে ধরে রেখেছে। তারপর,
সে ইমানে’র আইফোনের লক টা খুলে বিভিন্ন পোজে ছবি তুলতে লাগলো। আয়াস এসে নিঃশব্দে সঙ্গ দিতে লাগলো তার ফুফিকে। হঠাৎ ইমানের অদ্ভুত একটা অনুভূতি হতে লাগলো,
সে পিছন ফিরে তাকাতেই আয়াস তার হাত চেপে ধরে বললো,
– “চলো আঙ্কেল, আমরা কেক কাটবো না তাই নিতে এসেছি তোমাকে আর চাচ্চু কে।” ইমান তাকে কোলে তুলে নিয়ে হাসতে হাসতে বললো,
– “আচ্ছা, চলো মাম্মা। আমার গিফট টা কি তোমার পছন্দ হয়েছে?”
– “হুমম,খুব। জানো? ফুফি আমার জন্য ঢাকা থেকে নিজের হাতে ক্যাপ্টেন আমেরিকার কেক বানিয়ে নিয়ে এসেছে?”
– “বাব বাহ! তোমার ফুফির তো গুণ অনেক। তাকে বিয়ে দিবে আমার সাথে?” আয়াস হাসতে হাসতে বললো,
– “নাহ, বিয়ে দেবো না। ফুফিকে বিয়ে দিলো ও আর আসতে পারবেনা আমার কাছে। তুমি অন্য কাওকে বিয়ে করো৷ আমি একটা ভালো মেয়ে খুঁজে দেবো তোমাকে ।” আয়াসের পাকা পাকা কথা শুনে সকলে হাসতে লাগলো মিম একটা লজ্জা পাচ্ছে। ইমান পাশে দাঁড়িয়ে, তার ঈষৎ কালো লম্বা চুল গুলো মুগ্ধ হয়ে দেখছিল।
হঠাৎ আকিব তার কাঁধে হাত রেখে হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করলো,
– “কি ব্যাপর বন্ধু? তোর কি হয়েছে?” সে ফিসফিস করে বললো,
– “তোর বোনের চুল গুলো ভীষণ সুন্দর। এতো লম্বা চুল আমি কখনো সামনাসামনি দেখিনি এর আগে।”
– “ও মানুষ টাও ভীষণ সুন্দর,
কিন্তু ঘোর বিয়ে বিরোধী। মনে হচ্ছে চির জীবন একা
‘ই কাটিয়ে দেবে?”
– “কেন? তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে কোনো?”
– “আরে না, ধুরর। বিয়ের নাম নেওয়া যায় না ওর সামনে বসে আর আমার মামাও আরেকজন মেয়ে যা বলবে তাই।
মেঝো মেয়েকে বড্ড বেশি ভালোবাসে।” ইমান তার কথা শুনে হাসতে হাসতে বললো,
– “ওহ এই ব্যাপার?
আসলে এটা কোনো ব্যাপার’ই না? বাবারা তাদের মেয়েদের ওপর একটু বেশিই দূর্বল থাকে।” আকিব হাসতে হাসতে বললো,
– “হুমম, বুঝলাম চল খেতে চল। বোনের জন্য ছেলে দেখা হলে জানাবো তোকে।” অতঃপর, তারা এক সঙ্গে খেতে বসে গেলো।
ইমান দীপ্তকে জিজ্ঞেস করলো,
– “ভাইয়া আপনার বোন কে দেখতে পাচ্ছি না আশে পাশে?”
– “ও আয়াসকে নিয়ে রুমে বসে খাচ্ছে, তাই আর এখানে ছেলেদের মাঝে ডাকিনি তাকে।”
– “উনি কি মহরম, নন-মহরম মেনে চলেন?”
– “না আসলে,
হঠাৎ এতো অপরিচিত লোক জন দেখে ও একটু চমকে গেছে। দ্যাট’স ইট।”
– “ভাইয়া আপনারা কি আজ রাতে স্টে করবেন না কুমিল্লাতে?”
– “না ইমান, এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। বোন কে নিয়ে বাবা আজ রাতেই ফিরতে বলেছে আমাকে। তিনি একটুও বোনকে চোখের আড়াল করে থাকতে পারেননা। জানি না বিয়ে-শাদি হয়ে গেলে বোন কে ছেড়ে কি করে থাকবে?” ইমান তার কথা শুনে মিটি মিটি হাসলো। আকিবকে খোঁচা মে’রে বললো,
– “বন্ধু, আমাকে তো পরিচয় করিয়ে দিলি না তোর বোনের সাথে?”
– “আমাকে মাফ করে দাও বন্ধু, তোমার কারণে আমি উধম কেলানি খেতে পারবোনা আমার বোনের হাতে।” ইমান এবার অট্টহাসিতে ফেটে পরলো।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ পর দীপ্ত মিমকে নিয়ে রওনা হলো ঢাকার উদ্দেশ্যে।
রাত বারোটায় ইমান ও কুমিল্লা থেকে ঢাকার ফ্লাইট ধরলো। ঢাকা পৌঁছে সে একটা মিটিং শেষ করে চলে গেলো বাড়িতে।
পুরো একটা দিন সে বাড়িতে বসে রেস্ট নিলো। মিম নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে ঘর বন্দী করে রেখেছে। দুপুরে, হালিমা দরজা খোলা পেয়ে মেয়ে’র
জন্য কিছু ফলমূল কেটে নিয়ে এলেন। মিম তাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো,
– “কি উদ্দেশ্য আপনার? হুমম, দয়া করে খুলে বলুন আমাকে?”
– “আমি কি তোমার কাছে আসতে পারি না?”
– “না, কি চাই সেটা বলুন আগে?” ফাইজান সাহেব মেয়ের কথা শুনে ঘরে ঢুকলেন, তিনি বললেন,
– “ফল গুলো চট করে খেয়ে ফেলো মা। তোমার পছন্দের ফল গুলোই সব আনা হয়েছে বাজার থেকে
।”
– “এ গুলো আমার পছন্দের ফল না বাবা, তোমার স্ত্রী বোধ হ’য় অবগত নন আমার পছন্দ অপছন্দ সম্পর্কে।”
– “একদিন একটু ভুল হয়ে গেছে মা।”
– “তোমার স্ত্রী সবসময় আমার ব্যাপারেই ভুল গুলো করে থাকে। যাগগে, ফলমূল আমার বিষেশ পছন্দের নয়।
আর তাছাড়া বলা তো যায় না, কখন আবার আমার মুখের সামনে থেকে ফলের থালা টা ফেলে দেবে৷ না মানে এসব নতুন নয়। এর আগেও তিনি খাবারের থালা টা বেশ কয়েক বার ফেলে দিয়েছেন আমার মুখের সামনে থেকে আর তাই আমি জানতে চেয়েছি ওনার আসল উদ্দেশ্য টা কি?
উনি নতুন করে কি চাইতে এসেছেন আমার কাছে?” মেয়ের কথা শুনে হতবাক হয়ে গেলেন ফাইজান সাহেব। প্রচণ্ড রেগে, তিনি তাকিয়ে আছেন স্ত্রীয়ের মুখের দিকে।
মিম কিছুনা খেয়েই বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলো, ইমান
তার কেবিনে বসে গ্যালারি চেক করতে গিয়ে অবাক হয়ে গেছে আয়াসের সাথে মিমের ছবি দেখে। সে যেন বড় সড় একটা ধাক্কা খেলো। এবার দীপ্তের এত হেয়ালি করার কারণ স্পষ্ট তার কাছে। তার হার্টবিট দ্রুত বেড়ে যেতে লাগলো। সে এক হ্রাস অস্থিরতা নিয়ে কেবিনের বাহিরে এসে দেখলো…….
মিম কিছুটা দূরেই দাঁড়িয়ে আছে। নিরা ওকে দেখে পালিয়ে গেলো,
হঠাৎ মিমের তার দিকে চোখ পরতেই, সে ভ্রু নাচিয়ে কিছু একটা জিজ্ঞেস করলো তার কাছে? মিম সেসব বুঝতে না পেরে, এক দৌড়ে নিজের ডিপার্টমেন্টে ঢুকে গেলো। ইমান হাসতে হাসতে বলে উঠলো
– “আবারও মেয়ে টা ভয় পেয়েছে আমাকে দেখে।
আরেহ..! ভয়’ই যখন পাবে, তখন কেন দুষ্টুমি করতে গেলে আমার সাথে?”

চলবে,,,