মায়ার জালে পর্ব-০৬

0
311

#গল্প::#মায়ার_জালে
#writer::#পাপন
#পর্ব::০৬

আয়ান— লং ড্রাইভে যাবে ।

অনু— যাওয়া যায় । (বাইরে প্রকাশ না করলেও মনে মনে অনু ভীষণ খুশি হয়)

দুজনে তৈরি হচ্ছে যাওয়ার জন্য । আয়ান কালো জিন্স কালো শার্ট পড়েছে । অনুও আয়ানের সাথে ম্যাচিং করে কালো শাড়ি পড়েছে । দুজনকে একসাথে খুব ভালো মানাচ্ছে । একদম পারফেক্ট দম্পতি। দুজন একসাথে নিচে নামে।। তারপর আয়ান তার মাকে বলে,,,,,,

আয়ান— মা আমরা একটু বাইরে যাচ্ছি ।

আয়ানের মা— আচ্ছা সাবধানে যেও।(রিতু পাশ থেকে বলে উঠলো,,)

রিতু— কোথায় যাবে আয়ান । আমিও তোমাদের সাথে যাবো।

আয়ান— তুমি গিয়ে কি করবে।

রিতু— ফুফি বলোনা । আমার বাড়িতে একা একা ভালো লাগে না।

আয়ানের মা— আয়ান নিয়ে যা না তদের সাথে । মেয়েটা বাড়িতে একা একা বোর হচ্ছে ।

আয়ান— ঠিক আছে। তাড়াতাড়ি আসো(মন খারাপ হয়ে গেছে)

একটু পর তিনজন বের হলো। আয়ানের মনে মনে ছিল অনুর সাথে আলাদা টাইম স্পেন্ড করবে। কিন্তু কপালে না থাকলে যা হয় আরকি। থার্ড পারসন এসে হাজির। আয়ান ড্রাইভিং সিটে বসলো। রিতু সামনে বসতে নিলেই,,,,

আয়ান— রিতু তুমি পিছনে যাও। এখানে অনু বসবে।

রিতু মন কালো করে পেছনে বসলো। আর অনু আয়ানের পাশে বসলো। গাড়ি চলছে আপন গতিতে । আয়ান আড়চোখে তাকাচ্ছে অনুর দিকে। অনুও কম যায় না। সেও আড়চোখে তাকাচ্ছে আয়ানের দিকে । চোখাচোখি হলেই দুজনে চোখ নামিয়ে নিচ্ছে । অন্যদিকে রিতু এসব কাহিনী দেখছে আর ফুলছে। গাড়ি থামলো এক পার্কের সামনে । পার্কটা অনেক নিরিবিলি ও মনোরম পরিবেশ । পার্কের পাশে একটা লেক আছে। তিনজন গিয়ে লেকের পারে বসলো। কারো মুখে কথা নেই। মনে হচ্ছে যেন তিনজনই উপভোগ করছে পরিবেশটাকে। নিরবতা ভেঙে আয়ান বললো,,,,,,,

আয়ান— জানো অনু। আমি এখানে প্রায়ই আসতাম। খুব ভালো লাগে জায়গাটা ।

অনু কিছু বললো না । একটু হাসলো ।। রিতু বললো,,,,

রিতু— সত্যি জায়গাটা অনেক সুন্দর ।

আয়ান— বেশি কথা বলে। আমার ভালো লাগাটা তো তুই সাথে এসে নষ্ট করে দিয়েছিস । ( মনে মনে বললো কথাটা)

তারপর তিনজন মিলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরলো ।অনেক ইনজয় করেছে তিনজন মিলে। দেখতে দেখতে রাত হয়ে গেছে। এবার রিতু বললো,,,,,

রিতু— খুব খিদে পেয়েছে আয়ান।

অনু— আমারও ।

তারপর আয়ান তাদের নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে গেলো। খাওয়া দাওয়া শেষ করে বিল চুকিয়ে তিনজন গাড়িতে এসে বসলো। কিছুক্ষণ পর তারা বাসায় পৌছালো । কলিং বেল বাজাতেই আয়ানের মা দরজা খুলে দিলেন।

আয়ানের মা— কিরে এতো লেট হলো তদের।

রিতু— অনেক জায়গায় ঘুরেছি ফুফি।তাই একটু লেট হয়েছে।

আয়ানের মা— আচ্ছা তোমরা ফ্রেশ হয়ে আসো। আমি টেবিলে খাবার দিচ্ছি ।

আয়ান— না মা। আমরা ডিনার করে আসছি। এখন আর খাবো না।

তারপর সবাই রুমে চলে গেলো। আয়ান রুমে ঢুকেই ওয়াশ রুমে গেলো ফ্রেশ হতে।খুব টায়ার্ড লাগছে। ফ্রেশ হয়ে আসার পর অনু গেলো ফ্রেশ হতে। আয়ান ভুল করে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়লো। অনু ফ্রেশ হয়ে বের হলো। বের হয়েই তার চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গেলো। আয়ান বিছানায় ঘুমিয়েছে । অনু কোথায় ঘুমোবে সে সুফায় ঘুমোতে পারে না। কি করবে অনু ভেবে পাচ্ছে না।কিছুটা সংকোচ বোধ করে অনু আয়ানকে বিছানার একপাশ করে অন্য পাশে সে ঘুমিয়ে পড়লো।

/

সকালের মিষ্টি রোদের আলোয় আয়ানের ঘুম ভাঙলো । ঘুম ভাঙতেই আয়ান অনুকে তার বুকের মাঝে আবিষ্কার করলো। অনু আয়ানকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।আয়ান কি একটা ভেবে অনুকে ছাড়িয়ে উঠতে নিলেই অনুরও ঘুম ভেঙে যায় । আয়ানকে তার এতো কাছে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় । আয়ান সরি বলে তাড়াহুড়ো করে উঠতে নিলেই আবার অনুর উপরে গিয়ে পড়ে।

/

এবার দুজনেই ফ্রিজ হয়ে যায় । দুজন দুজনের দিকে ঘোরলাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আয়ান ঘোরলাগা ভাবেই অনুকে কিস করতে অগ্রসর হয়। কিস করেই দেয়। অনু তো এবার একেবারেই ফ্রিজড । হঠাৎ আয়ানের খেয়াল হয় । আয়ান তাড়াতাড়ি করে ওঠে সরি বলে ওয়াশ রুমে চলে যায় ।

/

অনু এখনও সেভাবেই রয়েছে। বিষয়টি তার কাছে কাল্পনিক লাগছে। হঠাৎ অনু হেসে দেয়। হাসির কারণ তার জানা নেই। অন্যদিকে আয়ান ভাবছে,, অনু কি আমাকে ভুল বুঝেছে। আমি তো ইচ্ছে করে করিনি।,, আয়ান যেন আর কিছুই ভাবতে পারছে না। কিছুক্ষণ পর আয়ান ওয়াশ রুম থেকে বের হলো। অনুকে দেখলো সুফায় বসে আছে।আয়ান অপরাধী সুরে বললো,,,

আয়ান— সরি অনু। আমি নিজের মধ্যে ছিলাম না।

অনু মাথা নাড়িয়ে ওয়াশ রুমে চলে যায় । ওয়াশরুমে ঢুকে অনু হাসিতে ফেটে পড়ে। অনু আয়ানকে সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছে। আয়ানেরও একই অবস্থা । অথচ কেউ কাউকে বলতে পারছে না।

/

অনু সাওয়ার নিয়ে বের হয়ে দেখলো আয়ান অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে । অনু অজান্তেই আয়ানের কাছে গিয়ে টাই বাঁধতে লাগে। আয়ান তো পুরাই অবাক। অনুর যখন খেয়াল হলো,, তখন সে লজ্জা পেয়ে যায় । আমতা আমতা করে টেবিল গোছাতে লেগে যায় । আয়ান হেসে দেয়। তারপর দুজনে একসাথে নিচে যায় । তারপর সবাই মিলে নাস্তা করে। আয়ান অফিসে চলে যায় । অনু রুমে বসে থাকে।

/

একয়েকদিনে সবাই আকাশের কথা ভুলে যায় । পুলিশও কোনো ইনফরমেশন দিতে পারে নি আকাশ সম্পর্কে । অনুও যেন ভুলে গেছে । এদিকে রিতু তো অনুকে সামনে ভালো ব্যবহার দেখালেও পিছনে ঠিকই অনুকে মারার চিন্তা করে। অনু বিছানায় বসে বসে আয়ানের কথা ভাবছে আর হাসছে।তখন রিতু ঢুকলো হাতে দু কাপ কফি নিয়ে ।

রিতু— একা একা হাসছো কেনো অনু।

অনু চমকে পেছনে তাকায়। রিতু কে দেখে বললো

অনু— আরে রিতু আসো।

রিতু হাতের এক কাপ কফি অনুকে দেয়। তারপর দুজনে গল্প করে।

রিতু— তর সাথে বন্ধুত্ব করেই তকে সরাতে হবে আয়ানের থেকে।( মনে মনে বললো)

অনু— ও তো আমাকে দেখতেই পারে না তাহলে আমার সাথে এতো ভালো ব্যবহার করছে কেনো।(মনে মনে)

দুজনে কিছুক্ষণ গল্প করে রিতু চলে যায় নিজের রুমে। আর অনু একা একা বসে নানা কথাই ভাবছে,,,,,,,

চলবে,,,,,,