মায়ার জালে পর্ব-০৯

0
297

#গল্প::#মায়ার_জালে
#writer_পাপন
#পর্ব::০৯

আয়ান accident করেছে শুনা মাএই অনু অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় । আয়ানের মা পাশে থাকা পানির বোতল থেকে অনুর মুখে পানি ছিটান। কিছুক্ষণ পর অনুর জ্ঞান ফেরে।তারপর দুজনে তাড়াহুড়ো করে লোকটির দেওয়া হাসপাতালের ঠিকানায় চলে যান। আকাশ ফ্রেশ হয়ে বাইরে এসে দেখে কেউ নেই। কাজের লোকটিকে বলে,,,,

আকাশ— বাড়ির সবাই কোথায় গেলো।

কাজের লোক— ছোট সাহেব accident করছেন তাই সবাই ওনারে দেখতে গেছে।

আকাশ— ওওও।

আকাশ যেন কথাটা কে তেমন গুরুত্ব দিলো না। সে তার রুমে গিয়ে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে । অন্যদিকে আয়ানের মা,অনু আর রিতু আয়ানের পাশে বসে আছেন। আয়ানের এখনও জ্ঞান ফিরে নি। আয়ানের বেশি সমস্যা হয় নি শুধু ডান হাতে একটু ছট পেয়েছে আর কপালে কিছুটা কেটে গেছে। আয়ানের পাশে বসা সবাই চিন্তা করছে। অনু যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে । ডাক্তার দু এক বার এসে দেখে গেছে।

/

কিছুক্ষণ পর আয়ানের জ্ঞান ফিরে। আয়ানের জ্ঞান ফিরেছে দেখে অনু তাড়াতাড়ি করে আয়ানের পাশে বসে তার হাত ধরে। আয়ান ওঠে বেডের সাথে হেলান দিয়ে বসে। অনু তাকে বসতে সাহায্য করে। আয়ানের মা বলেন,,,,,,,,,,,,,,,,,

আয়ানের মা— কিভাবে accident করলি বাবা।(কান্না করছেন)

আয়ান— আমি ড্রাইভ করছিলাম হঠাৎ করে একটা গাড়ি সামনে চলে এসেছে।

আয়ানের মা— দেখেশুনে ড্রাইভ করবি তো। তর যদি কিছু হয়ে যেত।

আয়ান— আরে মা কান্না করছো কেনো। কিছু হয় নি তো আমার । আমি ঠিক আছি।

রিতু নিস্তব্ধ হয়ে বসে আছে।হয়তো আয়ানের accident এ সেও কষ্ট পেয়েছে । অনু তো আয়ানের হাত ধরে নিরবে কান্না করছে।আয়ান মনে মনে বললো,,,,, ,,,,,

আয়ান—— আমি accident করায় অনু কান্না করছে কেন। অনুর তো খুশি হওয়ার কথা। তাহলে কি অনু আমাকে ভালোবাসে। অনু যদি আমাকে ভালোবাসে তাহলে আকাশ ভাইয়াকে এসব কথা বললো কেন? নাকি আমি ভেবে অনু এসব কথা বলেছে। না আমাকে বলতে যাবে কেন।(আয়ান যেন আর কিছু ভাবতে পারছে না)

কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বললো আয়ান কে বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন। আয়ানের অবস্থা তেমন গুরুতর না হওয়ায় তারা আয়ানকে নিয়ে বাড়ি পৌছায়। অনু আর আয়ানের মা আয়ানকে ধরে উপরে নিয়ে যান। আয়ানকে বিছানায়হেলান দিয়ে বসিয়ে আয়ানের মা যান খাবার আনতে। অনু আয়ানের পাশে বসে আছে। কিছুক্ষণ পর আয়ানের মা খাবার নিয়ে আসেন। অনুর হাতে খাবারের প্লেট দিয়ে তিনি নিচে চলে যান। অনু আয়ানকে খাইয়ে দিচ্ছে । আয়ান মন খারাপ করে খাচ্ছে। আয়ানের মন খারাপ দেখে অনু বললো,,,,,,,,

অনু—- আজ তো বড় শান্ত ভাবে খাবার খাচ্ছেন। হাতে কামড় দিচ্ছেন না। আপনার তো হাতে কামড় না দিলে পেটই ভরে না।

আয়ান কিছু বলছে না। চুপচাপ খাচ্ছে । অনুও আর কিছু না বলে আয়ানকে খাইয়ে দিয়ে আয়ানকে বিছানায় শুইয়ে দিলো। তারপর সেও একপাশে ঘুমিয়ে পড়লো।

/

রাত দুইটা ছুঁই ছুঁই । অনুর ঘুম ভেঙে গেলো। ভীষণ পিপাসা পেয়েছে তার। অনু বিছানা থেকে নেমে রুমের লাইট অন করলো। দেখলো টেবিলে রাখা বোতলে পানি নেই। তাই সে নিচে গেল পানি খেতে। অনু নিচে নামতে আয়ানেরও ঘুম ভেঙে যায় । দেখলো রুমের দরজা খোলা। তাই সে বিছানা থেকে নেমে দরজার দিকে গেলো।

অন্যদিকে অনু পানি খেয়ে আসতে যাবে তখনই আকাশের মুখোমুখি হলো। আকাশ অনুর হাত ধরে নেয়। আর ঠিক তখনই আয়ান উপর থেকে দেখে আকাশ অনুর হাত ধরে আছে।এই দৃশ্য দেখে আয়ান যেন দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। তাই সে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ে। আকাশ অনুর হাত ধরায় অনু এক ঝাটকায় হাত সরিয়ে নেয় । তারপর বলে,,,,,,,

অনু— আপনি এভাবে আমার হাত ধরবেন না মি: আকাশ । আমি এখন একজনের বিবাহিত স্ত্রী ।

আকাশ— তাতে কি হলো তোমার তো আমার সাথেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। আর তুমি তো আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসতে।

অনু— যে ছেলে বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে যায় সে তো পুরুষ না কাপুরুষ । আর আপনি আমার অতীত । আমি বর্তমান নিয়ে অনেক খুশি আছি।

অনু আর আকাশকে কিছু বলতে না দিয়ে উপরে চলে যায় । বিছানায় উঠে ঘুমোতে গেলে আয়ান বলে ,,,,,,

আয়ান— কোথায় গিয়েছিলে।

অনু— অহ্ আপনি জেগে আছেন। ওই একটু পানি খেতে গিয়েছিলাম ।

আয়ান—- ওওওও ( আয়ান তো সন্দেহ করছে)

কিছুক্ষণ পর অনু ভেবেছে আয়ান ঘুমিয়ে পড়েছে তাই সে আয়ানের কাছে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে । এদিকে আয়ান যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে । মনে মনে বলছে,,,,,,

আয়ান—- অনু কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসে। নাকি ঘুমের মাঝে জড়িয়ে ধরেছে। অনু যদি আমাকে ভালোবাসে তাহলে ভাইয়ার সাথে কেন হাত ধরে কথা বললো।এসব ভাবতে ভাবতে আয়ান ঘুমিয়ে পড়ে ।

/

সকালে পাখির মিষ্টি কণ্ঠে অনুর ঘুম ভেঙে যায় । ঘুম ভেঙে দেখে আয়ানও তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। অনু আস্তে করে আয়ানকে ছাড়িয়ে আয়ানের কপালে চুমু খেয়ে ওয়াশ রুমে চলে যায় । ফ্রেশ হয়ে এসে আয়ানকে ডেকে তুলে। তারপর আয়ানকে ফ্রেশ করিয়ে দিয়ে নিচে যায় আয়ানের জন্য খাবার আনতে।

/

আয়ান accident করায় অফিস থেকে কিছুদিনের ছুটি নেয় । অনু খাবার নিয়ে এসে আয়ানকে খাইয়ে দিচ্ছে । অনু ইচ্ছে করে আয়ানের মুখের চারপাশে খাবার লাগিয়ে দিচ্ছে । আয়ান তো হাসছে আর খাচ্ছে । এভাবে খুনসুটিতেই আয়ানের খাবার শেষ হলো।

অনু আয়ানের পাশে বসে ফোনে মুভি দেখছে আর জোরে জোরে হাসছে। আয়ান অনুর হাসির দিকে তাকিয়ে আছে। এ যেন মন ভোলানো হাসি। হঠাৎ অনু আয়ানের দিকে তাকায়। দেখে আয়ান অপলক ভাবে তার দিকে তাকিয়ে আছে। অনু বলে,,,,,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,,