হৃদমাঝারে শুধুই তুই পর্ব-০৩

0
526

#হৃদমাঝারে_শুধুই_তুই
#লেখনীতে:মিথিলা মাশরেকা
পর্ব ৩

সকালটা যত সুন্দর,মনটা ততোটাই‌ বিষাদময় হয়ে আছে আরমানের।কাল রাতে ভালোলাগার মানুষটাকে দেখবে,চিনবে বলে অসম্ভব উৎসাহ তার ক্যামেরাটা দেখার জন্য উদ্যত হয়েছিলো ও।কিন্তু আফসোস!ক্যামেরাতে সে মানুষটার একটা ছবিও নেই।গাছের পাতা,শিশিরভেজা ঘাসের ডগা,জানালার কাচে বৃষ্টির ফোটা,ঘোলাটে কাচ,মাটিতে কৃষ্ণচূড়া ফুলের অশেষ সমাহার,কোনো নাম না জানা পাখির ছবি,আরো কতো কিই না রয়েছে ক্যামেরাটায়।বেশ পুরোনো মডেলের ওটা।ক্যামেরার মালকীন খুব শৌখিনভাবে প্রতিটা ছবি তুলেছে বেশ অনেক আগে থেকেই।বোঝাই যাচ্ছে অল্পবয়স থেকেই যা যা ভালোলেগেছে ওর সবটা ওটাতে ধরে রেখেছে।মেয়েটার ভালোলাগা জানতে পেরে আরমানের ভালোলাগাটা আরো কয়েকশগুন বেড়ে গেছে।আরো ব্যাকুল হচ্ছে ওর মন ওই মেয়েটাকে দেখার জন্য।অস্থির হয়ে উঠছে আরো ক্ষনে ক্ষনে।ওর যে চাই ওকে!কিন্তু কিভাবে পাবে?কোথায় পাবে?কি করে চিনবে তাকে এখন ও?

তাবু থেকে বেরিয়ে পা বারালো আবারো সেই জঙ্গলের দিকে।পাগলের মতো খুজতে লাগলো এদিক ওদিক।কিন্তু কোথাও নেই সে।একসময় মাথায় হাত দিয়ে চুল টেনে ধরে মাটিতে পাতার উপর বসে পরলো ও।কতোক্ষন থেকেছে জানে না।শুধু ক্যামেরাটা চেয়ে চেয়ে দেখেছে।ওটাই যে এখন ওর তৃষ্ণার্ত মনের একমাত্র সম্বল।বেশ অনেকক্ষন পর আদিব হাপাতে হাপাতে ওর সামনে এসে দুম করে বসে পরলো।একটা জোরে শ্বাস নিয়ে বললো,

-কিবে?তুই এখনি দেখছি দেবদাস হয়ে গেছিস ইয়ার!এসব কি?

আরমান সোজাসাপ্টা বললো,

-আই নিড হার।

ওর নির্লিপ্ত গলায় অবাক হয়ে হা করে তাকিয়ে আছে আদিব।কিছুক্ষন আটকে থেকে বললো,

-কি এমন দেখলি ওই ক্যামেরায়?এতো সুন্দরী দেখতে?এভাবে পাগল বানিয়ে দিয়ে গেলো তোকে?

-ক্যামেরাতে ওর কোনো ছবি নেই আদিব।যা আছে তাতে ওর কোনো খোজ পাওয়াও সম্ভব না।

আদিব কপালে চিন্তার ভাজ ফেলে চুপ করে রইলো।আরমান আচমকাই চেচিয়ে বলে উঠলো,

-ওকে হারাতে দেবো না আমি আদিব।আই‌ ওয়ান্ট হার!!!

আদিব কাধ ধরে আরমানকে শান্ত হতে বললো।আরমান কাপছে।কি হয়েছে ওর ও নিজেও জানে না।কি বলছে তাও ওর আয়ত্ত্বের বাইরে।আদিব বললো,

-দেখ!ওকে পেয়ে যাবো আমরা।এই ক্যামেরাটা কার সেইটা খুজলেই তো হয়।আর এখানে সবাই আদিবাসী।সো স্থানীয় কোনো মেয়ের কাছে অবশ্যই এসব থাকবে না।তুই শান্ত হয়।খুব তাড়াতাড়ি খুজে পাবো ওকে।দেখিস।

আরমান হুশে ফিরলো যেনো।এতোক্ষন কি বলেছে কি করেছে সবটা খালি মাথায় আবারো ঘুরপাক খাচ্ছে।নিজেকে সামনে উঠে দাড়ালো।আদিবের সাথে টেন্টে ফিরে কল লাগালো বাড়িতে।

-হ্যালো?

-হ্যাঁ ভাইয়া,বল?কেমন আছিস?

-ভালো।তোরা সবাই?

-হুম,ভালো।তা এতো সক্কাল সক্কাল ফোন করলি যে?

-আরু,আম্মুকে ফোন দে তো!

-কেনো বলতো?

-তোকে বলবো কেনোরে?আম্মুকে ফোন দে।

-বল না!আবার এটা বলিস না সিরিয়ালের সাংবাদিক নায়কদের মতো তুইও ওখানকার কোনো উপজাতি মেয়েকে বিয়ে করে বাসায় আনছিস।

-একদম ঠিক বুঝেছিস তুই।দে আম্মুকে ফোন দে।আমি সত্যিই বিয়ে,,,

আরিশার কাছ থেকে ফোনটা কেড়ে নিলেন মিসেস জামান।উৎফুল্ল কন্ঠে বললেন,

-সত্যি বলছিস আরমান?বিয়ে করেছিস তুই?দে দে বৌমার কাছে ফোনটা দে।আমি তো,,,,

-আম্মু!থামবা তো নাকি?বলতে তো দাও।তুমিও দেখছি আরুর মতোই,,,

-আরে,আগে বৌমাকে দে,তোর সাথে পরে কথা বলছি।

আরমান দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।ওর বিয়ে নিয়ে বাসার সবাই এতোটাই চিন্তিত যে এমনটাই করে সবসময়,বিরক্ত হতে হতে আর বিরক্ত লাগে না ওর।

-আম্মু,বিয়ে টিয়ে করিনি আমি।আরুর কাছে এমনি বলেছি জাস্ট!

মিসেস জামান মুখটা কালো‌ করে বললেন,

-কোথায় উঠেছিস?

-টেন্টে।

-তোদের বলেছিলাম শামীমার বাসায় যেতে!ওখানে তো গেলিই না,হোটেলেও উঠিস নি!

-ধুরু,বান্ধবী তোমার।আমার না।আর আম্মু,যে কাজে এসেছি সেটাতে তাবু গেরে কাজ করার মজাটাই আলাদা।আরো অনেক কজ আছে যা বোঝাতে পারবো না তোমাকে।

-ফোন রাখ!

-আরে,আমি কিনা তোমার খোজ নিবো বলে ফোন করলাম,তুমি এমন করছো?একটাবারও বলবা না কেমন আছিস?

-আদিব কেমন আছে?

আরমানের কাছ থেকে ফোনটা ছো মেরে নিয়ে আদিব কথা বলতে শুরু করলো।কি বললো তা কানে আসেনি আরমানের।তবে ও আর কথা বলতে পারেনি।ওর পরিবারের সবাই আদিবকে এতোটা ভালোবাসে এই নিয়ে অনেক খুশি ও।কথা শেষে আদিব বললো,

-চল!খেয়ে দেয়ে মেয়ে অন্বেষনে বেরিয়ে পরি!

আরমান হেসে বললো,

-হুম,চল।

কাধ ধরাধরি করে দুজন ব্রেকফাস্ট সেরে নিয়ে বের হলো।উদ্দেশ্য এলাকাটা ঘুরে দেখা,আর সেই মেয়েটাকে খোজা।আপাততো ক্যামেরাটা কার সেটাই একমাত্র ক্লু ওদের কাছে।তাকে খুজে পাবে এমনটা আশা নিয়ে বেরিয়ে পরলো দুজনে।

বাসায় ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়েছি শিমুলদের বাড়ির উদ্দেশ্যে।হাতে টিফিন বক্সে খাবার নিয়ে।মেয়েটা আজ এখনো আসেনি।মামী রাহাতকে নিয়ে কোথাকার এক টিচারের বাসায় গেছে কোচিংয়ে।আমার দিনের বেলা বেরোনোটাতে কোনো বাধা নেই।একা বাসায় বসে কি করবো আর শিমুলটা সাথে থাকেই এসব ভেবে মামা মামী মানা করে না আমাকে।আরেকটা কারন আছে মানা না করার।আমি বরাবরই একটু জেদী।মানা করলে সেই কাজটা করার জন্য আরো উঠেপরে লাগি।তাই যারা আমার এ স্বভাবের সাথে পরিচিত,তারা সহজে মানা করে না কিছুতে আমাকে।চিটাগাঙ এসেছি চারদিন হলো।বেরোনো হয়নি সেভাবে।তাই আজ থেকে ঘোরা,খোজা মিশনে নামবো বলে মন স্থির করেই বেরিয়েছি।একটা হালকা মেরুন রঙের গোলজামা,চুড়িদাড় পরে চুলগুলো উচুতে ঝুটি করে বেধে বেরিয়ে পরেছি।

শিমুলদের বাড়ি যাওয়ার পথটা মিনিট পাঁচেকের হবে।রাস্তায় মোড় বেশি,আর রাস্তাটাও পাহাড়ের গা বেয়ে।এদিক ওদিকে ঢালু।পাহাড়ের গায়ে অন্যসব আদিবাসীদের ছোট ছোট ঘরগুলোর দিকে তাকালাম।কেউ ঘরের সামনে মোড়ায় বসে ছনপাতা বাছছে,কেউ ছোট মাটির চুলায় রান্না বসিয়ে ফু দিচ্ছে,কেউ কেউ মাটির দেয়ালে গোবর শুকাতে দিচ্ছে,গরুকে খাওয়াচ্ছে।একদল ছোট ছোট ছেলে মেয়ে রাস্তাতেই মার্বেল দিয়ে খেলছে। যেখান দিয়ে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি সবাই অদ্ভুতভাবে তাকাচ্ছে আমার দিকে।যেনো ওদের দুনিয়ায় আমি এলিয়েন!

পাশের একটা টংয়ের দোকান টাইপ জায়গায় অনেকগুলো লোক বসে আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন।ইয়াং ছেলেদের পাশাপাশি বয়্যজৈষ্ঠ্যরাও আছেন।বুঝলাম এভাবে তাকানোর কারন আমার জামাকাপড়।যেখানে এখানকার মেয়েরা তাতের কাপড় হাটুর কিছুটা উপর অবদি উঠিয়ে মাজায় গিট দিয়ে পরে,হাতে কানে গলায় ঝিনুক,শামুক,পুতি আর ফুলের গয়না পরে,আমিতো এরকম কিছুই পরি নি।ওনারা বুঝতে পারছেন আমি স্থানীয় নই।বিষয়টা ওড লাগলো আমার।আমি চাইনা অনেকের মাঝে অন্যতমা হয়ে এভাবে সবার চোখে পরতে।কিভাবে এটা কাটিয়ে উঠবো ভাবতে ভাবতে দ্রুতপদে শিমুলদের বাড়ি পৌছালাম।

পাহাড় বেয়ে শিমুলের ঘরের কাঠের দরজায় টোকা মারলাম।দরজাটা খুলে গেলো তাতেই।ভ্রুকুচকে ভেতরে ঢুকেই দেখি শিমুই মুখের লালা ঝড়িয়ে বালিশ ভিজিয়ে শব্দ করে ঘুমাচ্ছে।ফিক করে হেসে দিয়ে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলাম।আশেপাশে তাকিয়ে ওর বাবাকে না দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম একটা।এগিয়ে গিয়ে ওর চুলে টান মারলাম একটা।
শিমুল চোখ বন্ধ রেখেই হাত পা ছুড়তে ছুড়তে বলতে লাগলো,

-মুকে ছেড়ে দে,দে লা!মু আসি লাই নিজের মর্জিটোতে।উ মিথি লিয়া আইসে মুকে।মুকে ছেড়ে দে,জীবনেও আসবোক লাই এ নাগরছাইলটো দেখতে।মু তো,,,

কপাল চাপড়ে ওর মুখ আটকে দিলাম।শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব করে চোখ মেলে তাকালো ও।

-তুই এখনো ঘুমোচ্ছিস শিমুল?

-তু?ইখানে?ইখন?

-চুপ!ওঠ!

শিমুল চুপচাপ উঠে বসলো।বাবাকে না দেখে আমাকে বললো,

-বাপটো কুথায় রে?

-এসে দেখি নি।

শিমুল জোরে শ্বাস ফেললো একটা।

-ঘরে খাবার আছে?

-হু!

ও চুল খোপা করতে করতে মেঝেতে বসলো।পাতিল উল্টে দেখলো‌এক দানা ভাতও নেই তাতে।হেসে বললো,

-যাক!খেয়েটোই গেছে।

ওর হাসি দেখে মন ভরে উঠলো আমার।যে বাবা ওর কথা ভাবে না,ও কি খাবে তা তোয়াক্কা না করে নিজেরটা খেয়েই বেরিয়ে গেছে,সেই বাবার জন্য এভাবে ভাবে ও।ওর হাত ধরে বিছানায় বসিয়ে হাতের টিফিন বক্সটা দিয়ে বললাম,

-ধর!খেয়ে নে।

ও অবাক হয়ে কিছু বলতে যাবে আমি আগেই থামিয়ে দিয়ে বললাম,

-একটা কথাও না আর।মুখ ধুয়ে এটা খেয়ে নে।বেলা অনেক গরিয়েছে।

ও সুন্দরমতো হেসে আমার কথা মতোই সব করলো।বিছানা গুছিয়ে,ঘরে ঝাড়ু লাগালো।মুখ ধুয়ে পীড়িতে বসে খেতে খেতে বললো,

-তু আসলি যে?খেয়েন্ছিস?

আমি ঘরের জিনিসগুলো দেখতে দেখতে বললাম,

-হুম।

-ইখানে কিসের লাগি তু?

-আসা বারন?

-লা,তা কেনো হুবেক?ইমনি,,

-কাল তোকে যা বললাম,ওসব পুরন করতে হবে তো!আমি থাকছি আরো কিছুদিন চিটাগাঙ।

কথাটা বলে তাকালাম ওর দিকে।ও শুধু হাসলো।কিছু বললো না।আমার একগুয়ে স্বভাবের সাথে পরিচিত হয়ে গেছে ওউ।খাওয়া শেষ করে সবটা গুছিয়ে আমার হাত ধরে বিছানায় নিয়ে বসালো।বললো,

-হাতটো ঠিক হইন্ছে?

-তোর মনে আছে?

-থাকাটো উসম্ভব কিছু?

-না।

-ব্যথাটো করছেক?

-উহুম।ঠিকাছি আমি।

-তো ইখন?

-হুউউউম!এখন!এখন আমি তোদের এখানের তাতীবাড়ি যাবো।

শিমুল অবাক হয়ে বললো,

-ক্যানে?

-আমার এইসব শাড়ী চাই।আমিও এভাবেই সাজবো।

-ক্যানে?

-সবাই যেনো আমাকে তোর মতোই এলাকার মেয়েই ভাবে।

-ক্যানে?

-উফফফ্!!!বড্ড বেশি প্রশ্ন করিস তুই।সাফাই‌ দিতে দিতে আমিই কবে যেনো দুনিয়া থেকে সাফ হয়ে যাই!শোন,আমি চাই আমি যতক্ষন মামাবাসার বাইরে থাকি,কেউ যেনো আমাকে আলাদা না ভেবে,স্পেশাল বিহেভ না করে,আবার আমাকে চিড়িয়াখানার জীবদের মতো অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে তাকিয়ে না দেখে।বুঝেছিস?

-হু।

-গ্রেট।এবার নিয়ে চলনা তাতী বাড়ি।

-তু ইমনে সাজবিক?তুর মামাটো কিছু বুলবেক লাই?উ ইখানকার বেস সোম্মানের মানুষটো আছেক।উয়ার ভাগ্নিটো ইভাবে মুদের মুতন ইমন সাজে,,,,

-অতো পাকনামো করতে বলি নাই তোমাকে।যা বলছি করো।বাকিটা আমি বুঝে নিবো।

শিমুল আবারো খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো।বেশ ভালোলাগে আমার ওর এই হাসি।তারপর ওর সাথে পাশেরই এক তাতীবাড়ি গিয়ে চার চারটে কাপড় কিনে আবারো ওর বাড়িতেই ফিরে আসলাম।
ফিরে এসে দেখি ওদের ঘরটা খোলা।ভিতরে এক লোক টালমাটাল হয়ে দাড়িয়ে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।বুঝলাম এটা শিমুলের বাবা।ঘরে ঢুকে কিছুক্ষন আগে শিমুলের সাজানো সবকিছু এলোমেলো করে ফেলেছে লোকটা।আমাকে একনজর দেখে সম্পুর্ন উপেক্ষা করে শিমুলের দিকে রেগে তাকালো।টলতে টলতে বললো,

-মুর আঠেরো পয়সা কুথাটো রেখেন্ছিস?

শিমুল তাড়াতাড়ি গিয়ে একটা ছোট কাপড়ের ব্যাগ থেকে কিছু টাকা বের করে দিলো।এগুলো ওর বেতের ঝুড়ি বুনানোর টাকা।যা শুধুমাত্র ওর বাবার নেশার খরচ মেটাতে কাজে লাগে।লোকটা টাকাটা নিয়ে হেলতে দুলতে চলে গেলে শিমুল বললো,

-ই ইমনটোই আছে।তু আয়,তুয়াকে আজ মু সাজাইবোক।

কি স্বাভাবিকভাবে বললো কথাটা,এ এমনই?হয়তো দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছে ও।মৃদ্যু হেসে ওদের মতো করেই কাপড়টা গায়ে জড়ালাম।আমার গায়ের রঙটা এমনিতেও চাপা।
তাতে বোনা কাপড়টায় লাল,কালো,সাদা তিনটা রঙই আছে।শাড়ি সামলানো কষ্টকর বিষয়,তবে শিমুল ওদের স্টাইলে যেভাবে গাটগিট দিয়ে শক্ত করে বেধে দিয়েছে,আর তা হাটুর উপর অবদি বলে অতোটাও আনইজি লাগছে না।শিমুল ওর কিছু কড়ির মালা হাতে নিয়ে আমার সামলে ধরলো।বললো,

-ইগুলো পর ক্যানে?

-না।গয়না ভালোলাগে না আমার।

-ইভাবে তুয়াকে ভালো লাগবেক লাই।

-না লাগলো।

আমার কথায় শিমুল মুখটা কালো করে ফেললো যা মোটেও পছন্দ হয়নি আমার।ওর হাত থেকে একটা কালো সুতোতে ছোট্ট ঝিনুক বাধা মালা একদম গলার সাথে আটকিয়ে পরলাম।বললাম,

-এবার খুশি?

শিমুল খুশি হয়ে বললো,

-হু!

এরপর মাথার চুলগুলো উপরে খোপা করে কিছু একটা দিয়ে বেধে দিলো ও।তিনটে কাঠিও গুজে দিয়েছে।ছোট কাঠের ফ্রেমের আয়নায় নিজেকে দেখে ভালোই লাগছিলো।আজ এই রুপটাও নেওয়ার ভাগ্য হলো আমার।যদিও কিছুটা অন্যরকম লাগছে শিমুলদের চেয়েও,তবুও বেশভুষায় মনে হবে আমিও আদিবাসী!পরে আসা জামা আর সাইডব্যাগটা শিমুলদের বাড়িতে রেখে ওকে নিয়েই বেরিয়ে পরলাম।লক্ষ্য,সেই জঙ্গলে ক্যামেরা আর আরমান নামক ওই লোকটার খোজ বের করা।যা করেই দম নিবো আমি।বাই হুক,অর বাই ক্রুক!!!

#চলবে…